সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
কালের সাক্ষ্য বহন করছে ৭১’র শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তস্নাত ঐতিহাসিক ডাব-বাগান প্রতিরোধ যুদ্ধের স্থানটি 1 আবুল বাশার :- আজ ১৯ এপ্রিল ঐতিহাসিক ডাব-বাগান ( সাথিয়া থানার পাইকরহাটি গ্রাম, যার বর্তমান নাম শহীদ নগর ) প্রতিরোধ যুদ্ধ। পাবনা জেলার সাথিয়া থানার কাশিনাথপুর ইউনিয়নের বগুড়া নগরবাড়ী মহাসড়ক সংলগ্ন পাইকরহাটি গ্রামেই অবস্থিত ছিল এই ঐতিহাসিক ডাব-বাগান। ১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল এই ডাব-বাগানেই পাক-হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের এক অসম ভয়বহ প্রতিরোধ যুদ্ধ সংঘঠিত হয়েছিল। দেশের স্বাধীনতা ও মানুষের মুক্তির সংগ্রামের এ লড়াই ও প্রতিরোধ যুদ্ধে সেদিন অকাতেরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন চেনা অচেনা শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও গ্রামের অসংখ্য নিরীহ নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধ। আহত হয়েছিল শত শত মানুষ। হানাদার বাহিনী ও তার সহযোগিদের পরিচালিত সেই হত্যাযজ্ঞ থেকে গ্রামের নিরীহ নিরাপোরাধি মানুষ,গৃহপালিত পশুপাখি, উদ্ভিদ-লতাগুল্ম কিছুই রেহাই পায়নি। যুদ্ধ পরবর্তী গ্রামে ঢুকে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও আগুন লাগিয়ে গ্রামে অধিকাংশ বাড়ীঘড় পুড়িয়ে দিয়েছিল হানাদার বাহিনী। লুটপাট করেছিল সোনাদানা অলংকারাদিসহ নগদ অর্থকরি। এলাকার সেই ভয়াবহ যুদ্ধের ও অত্যাচার নির্যাতনের কাহিনী এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিতে না পারলেও ঐতিহাসিক পাইকরহাটি গ্রাম ও তার ডাববাগান এলাকাটিকে শহীদ নগর নামদিয়ে শহীদেদের রক্তস্নাত স্থানটিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে চলেছে এলাকাবাসী। সেখানে নির্মিত হয়েছে একটি স্মৃতিসৌধ। শহীদদের বেশ কটি কবরস্থান বঁধানো হয়েছে। কিন্তু অনেকেই জানেন না এই নাম না জানা শহীদ আতœত্যাগী মানুষগুলো- কে বা কাহারা। অথচ এ নাম না জানা মানুষগুলোই দেশের স্বাধীনতা ও মানুষের মুক্তির জন্য এ স্থানের মাটিকে ধন্য করে গেছেন। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, শহীদ পরিবারের অনেকেই আজও জানেন না তাদের বীর সন্তানেরা কোথায় কিভাবে চির নিদ্রায় শায়ীত রয়েছেন। কোন মা হয়তো তার হারানো মানিকের ফিরে আসার অপেক্ষায় এখনও পথের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। কেউবা অপেক্ষা করতে করতে পৃথিবী থেকে বিদেয়ও নিয়েছেন। গ্রামের একই কবর শায়িত রয়েছেন ১০/১২ মুক্তিযোদ্ধাসহ গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা জগত নারায়ন বিশ্বাস। তাদের ১৬ শরিকের (পরিবার) বিশাল এলাকার নিজ বসতবাটিইে নাম না জানা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে একই কবরে শায়িত রয়েছেন তিনি। এ কবরটি বাঁধানো হয়েছে। এখন ভঙ্গুর বে-দখল হওয়ার পথে। সেখানে ধর্মের কোন বিরোধ নেই। মানবতাই ধর্মের প্রতিক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। হানাদার বাহিনী চলে যাওয়ার পর প্রাণ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া গ্রাবাসী গ্রামে ফিরে এসে গ্রমের ভীতর এবং মহাসড়কে এলাপাথারি পরে থাকা লাশগুলোর দ্রুত দাফণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করে।যে লাশগুলো শিয়াল-কুকুর এদিক সেদিক টেনে হেঁচড়ে নিয়ে গিয়েছিল সেই ক্ষবিক্ষদ লাশগুলো একত্রিত করে বিভিন্ন স্থানে তারা পূঁতে ফেলে/ দাফন করেছিল। ডাববাগানে সংঘঠিত ঐ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় উঠে এসেছে নানা ক্ষোভ, দুঃখ, আশা, প্রত্যাশা ও হতাশার নানা কাহিনী। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস রচনার প্রধান দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র সে ক্ষেত্রে অনেকটাই ব্যার্থ। মুক্তিযোদ্ধা কোন ধনীর দুলাল কিম্বা অভিজাত শ্রেণীর সন্তান ছিল না। সিংহভাগ মুক্তিযোদ্ধাই ছিল খেটে খাওয়া কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের পরিবারের সন্তান। এ কারণেই ইতিহাসে তাদের যথাযোগ্য স্থান মেলেনি, মেটেনি ক্ষুধার জ্বালা। তাই জীবিত মুক্তিযোদ্ধার কখনো ভিক্ষুক কখনো রিক্সাচালক কিম্বা দিনমুজুর। আর শেখ হাসিনা সরকার যখন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করলেন।ঠিক তখনই সুবিধাভোগী মানুষের ভীড় ক্রমাগত বাড়তেই থাকলো।রাজাকার স্বাধীনতা বিরোধীরা সহ যারা কোনদিন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি তারাও মুক্তিযোদ্ধা সেজে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দেও সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। এশাগত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা বেড়েই চলেছে। নকলের ভীড়ে প্রকৃতরা হাড়িয়ে েযাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস হচ্ছে কলংকিত। অপরদিকে শহীদ পরিবারের মায়েরা, বোনেরা,ভাইয়েরা আজো খুঁজে ফিরছেন তাদের বীর সন্তানদের। (চলবে)

সম্পর্কিত সংবাদ

সুরা আল ইমরানের বিষয়বস্তু

ধর্ম

সুরা আল ইমরানের বিষয়বস্তু

সুরা আলে ইমরানে ইমরান পরিবারের কথা বলা হয়েছে। পরিবারটি আল্লাহর ওপর অবিচলতা, পরিশুদ্ধতা এবং ধর্মের সেবার এক উজ্জ্বল নিদর্...

জোর করে উপবৃত্তির টাকা কেটে নেবার জেরে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির উপর হামলা মারপিট, আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

শিক্ষাঙ্গন

জোর করে উপবৃত্তির টাকা কেটে নেবার জেরে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির উপর হামলা মারপিট, আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে জোর করে উপবৃত্তির টাকা কেটে নেওয়া ও এর প্রত...

এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলঃ উল্লাপাড়ায় বিজ্ঞান কলেজ শীর্ষে

শিক্ষাঙ্গন

এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলঃ উল্লাপাড়ায় বিজ্ঞান কলেজ শীর্ষে

উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে উল্লাপাড়া উপজেলায় বিজ্ঞান কলেজ শীর্ষে রয়েছে। এখানে জি...

আবার জোড়া গোল মেসির, মায়ামির পর এবার শীর্ষে তুললেন নিজেকে

খেলাধুলা

আবার জোড়া গোল মেসির, মায়ামির পর এবার শীর্ষে তুললেন নিজেকে

জিলেট স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুটা অবশ্য ইন্টার মায়ামির পক্ষে ছিল না। প্রায় ৬৬ হাজার দর্শকের সামনে স্বাগতিক নিউ ইংল্যান্ড ম...

বজ্রপাতে চিরতরে ঝরে গেলো এক ক্রিকেট প্রেমির স্বপ্ন ও প্রাণ

জানা-অজানা

বজ্রপাতে চিরতরে ঝরে গেলো এক ক্রিকেট প্রেমির স্বপ্ন ও প্রাণ

শামছুর রহমান শিশির : মৃত্যু বিধাতার অমোঘ এক বিধি। দু'দিন আগে পরে সবাইককে মৃত্যুর তেতো অনিবার্য স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। তবে...

তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা আরও তিন দিন বাড়ল

পরিবেশ ও জলবায়ু

তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা আরও তিন দিন বাড়ল

এ ছাড়া আজ রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। ৪০ ডিগ্রি থেকে ৪১ দশম...