শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
শাহজাদপুর সংবাদ ডটকম, শামছুর রহমান শিশির, মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ  : কালের বিবর্তনে আধুনিকতার স্পর্শে আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুই পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে । আবার গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ধারক বাহক অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে স্মৃতিপট থেকে। তেমনি এক সময়ের গ্রাম বাংলায় পাদুকা হিসাবে বহুল ব্যবহৃত ‘খড়ম’ পুরোপুরি প্রায় হারিয়ে গেছে । আধুনিক যুগে পায়ের জন্য বিভিন্ন বাহারি, দৃষ্টিনন্দন, সহজলভ্য, ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দজনিত কারণে আনেক আগেই ‘খড়ম’ এর ব্যবহার উঠে যেতে থাকে। ক্রমেই প্রচলিত হতে থাকে চামড়া, নাইলন ও রাবার দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের পাদুকার। ফলে অতীতে গ্রাম বাংলায় পাদুকা হিসাবে বহুল ব্যবহৃত ‘খড়ম’-এর ব্যবহার পুরোপুরি প্রায় উঠেই গেছে । কালে ভাদ্রে বিভিন্ন মাজারে আগত বয়োবৃদ্ধ মুসাফির, ফকির, সাধু-সন্নাস্যীদের দু’একজনকে পাদুকা হিসাবে ব্যবহৃত ও এক সময়ের অতি জনপ্রিয় ‘খড়ম’ পায়ে পড়ে এখনও চলাফেরা করতে দেখা গেলেও কালের আবর্তে বর্তমানে তা বিলুপ্তি’র পথে। জানা গেছে, প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে রাজা বাদশা, সাধু-সন্নাস্যীদের পায়ের পাদুকা হিসাবে ব্যবহৃত ‘খড়ম’ তৈরি হতো কাঠ ও লোহা দিয়ে। ফিতাবিহীন ওই ‘খড়ম’এর সামনের অংশে গোলাকার করে তামা বা লোহার গুল্টি বসানো হতো। পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল ও তদসংলগ্ন আঙ্গুলের ফাঁকা অংশ ওই গোলাকার গুল্টির ভিতর ঢুকিয়ে চলাচল করা হতো। ‘খড়ম’এর ওই গোলাকার গুল্টিদুটি চলাচলের সময় পায়ের সাথে লেগে থাকতে সহায়তা করতো। অতীতে পাদুকা হিসাবে বহুল ব্যবহৃত ‘খড়ম’ এর গঠন বৈশিষ্ঠ ছিল খুবই সাধারণ। পাদুকা ‘খড়ম’এর অগ্রভাগের গোলাকার ধাতব গুল্টিটির ওপর বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করা থাকতো পাদুকা ‘খড়ম’ ব্যবহারকারীর সামাজিক অবস্থার ওপর। বিখ্যাত লোকের জন্য ‘খড়ম’ তৈরি করা হতো বিভিন্ন ধরনের দৃষ্টিনন্দন কারুশৈল্পীর মাধ্যমে। তবে অতীতে বহুল ব্যবহৃত পাদুকা ‘খড়ম’ এর অতি সাধারন গঠনকেই সিংহভাগ লোকেরা পছন্দ করতেন ও ব্যবহার করতেন বলে জানা গেছে।১৮৯০ সাল থেকে ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত কবিগুরু রবীন্দ্রনাঠ ঠাকুর জমিদারী দেখাশোনার কাজে শাহজাদপুরে সাময়িকভাবে বসবাস করতেন।শাহজাদপুরের জমিদারী পরিচালনায় কাছারিবাড়ি অবস্থানকালে হাটা ও চলাফেরায় তিনি পাদুকা ‘খড়ম’ ব্যবহার করতেন। এ সময় শুধু কবিগুরুই নন, অনেক পন্ডিত, সাধু-সন্নাসীরা পাদুকা হিসাবে ‘খড়ম’ ব্যবহার করতেন । কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শাহজাদপুরের কাছারিবাড়িতে রবীন্দ্র স্মৃতি যাদুঘরে সংরক্ষিত দুই জোড়া ‘খড়ম’ আজও সেই ঐতিহ্যেরই স্মৃতি বহন করছে। শাহজাদপুর পৌরসদরের শেরখালী গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের পুত্র মোঃ হাবিবুর রহমান হবি (৫৮) সহ এলাকার প্রবীণ বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, 'পাকিস্থান শাষনামলে স্থানীয় সোনালী ব্যাংকে কর্মরত কয়েকজন কর্মকর্তাকে ও কতিপয় ফকির সন্নাস্যীদের পাদুকা ‘খড়ম’ ব্যবহার করতে গেলেও বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতিতে প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন ধরনের আরামদায়ক জুতার বহৃল ব্যবহারের ফলে ‘খড়ম’এর ব্যবহার দেশ থেকে একেবারেই উঠে যাওয়ায় প্রাচীনকালের এক সময়ের জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত পাদুকা ‘খড়ম’-এর দেখা পাওয়াই বর্তমানে দূরহ হয়ে পড়েছে।'

সম্পর্কিত সংবাদ

শাহজাদপুরে আবাসিক হোটেল ব্যবসার করুন অবস্থা, প্রনোদনা চায় ব্যবসায়ীরা

অর্থ-বাণিজ্য

শাহজাদপুরে আবাসিক হোটেল ব্যবসার করুন অবস্থা, প্রনোদনা চায় ব্যবসায়ীরা

এ বছরের ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া টানা একমাসের লকডাউনে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের আবাসিক হোটেলগুলো ফাকা পড়ে আছে। স্টাফ বেতন,...

শাহজাদপুরে ইসলামী জালসা অনুষ্ঠিত

ধর্ম

শাহজাদপুরে ইসলামী জালসা অনুষ্ঠিত

গতকাল রোববার রাতে উপজেলার শেলাচাপড়ী পশ্চিমপাড় গ্রামের পূর্ব উত্তরপাড়া মহল্লার ‘মাশয়ারিল হারাম’ জামে মসজিদের উন্নতিকল্পে...

১১ আগস্ট থেকে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু

বাংলাদেশ

১১ আগস্ট থেকে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) ভার্চুয়ালি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সচিবালয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদে...

কোন পেশাই ছোট নয়, সব পেশাকে সম্মান করুন

উপ-সম্পাদকীয়

কোন পেশাই ছোট নয়, সব পেশাকে সম্মান করুন

মানুষের প্রয়োজনে দুনিয়ায় কত শত পেশা যে তৈরি হয়েছে তার ইয়ত্তা নাই । দেখুন না, জুতা সেলাই থেকে জাহাজ তৈরি কিংবা টিকা তৈরি...

মন্ডল গ্রুপের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি আবদুল মজিদ মন্ডল আর নেই

রাজনীতি

মন্ডল গ্রুপের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি আবদুল মজিদ মন্ডল আর নেই

সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আবদুল মজিদ মন্ডল (৭২) আর ন...

শাহজাদপুরে দুই মেয়েকে বিষ পান করিয়ে মায়ের আত্মহত্যা

শাহজাদপুর

শাহজাদপুরে দুই মেয়েকে বিষ পান করিয়ে মায়ের আত্মহত্যা

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের ইসলামপুর ডায়া নতুনপাড়া গ্রামে স্বামীর সাথে ঝগড়া করে বিষপান করে ম...