বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও কমেনি ভাঙনের তীব্রতা। বরং পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত চার দিনে উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যমুনার ভাঙনের কারণে এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন হাটশেরপুর ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। পাশাপাশি হাটশেরপুর গুচ্ছগ্রামের আরও তিন শতাধিক পরিবারও নদীভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
🌊 ভাঙনে হুমকির মুখে পাঁচ গ্রাম
হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাটশেরপুর, নিজবলাইল, করমজাপাড়া, দিঘাপাড়া ও চকরথিনাথ—এই পাঁচটি গ্রামে নদীভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে এলাকার ঘরবাড়ি, মসজিদ, বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে তলিয়ে গেছে বা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত বছর থেকেই এই এলাকায় নদীভাঙন শুরু হয়। তখন হাটশেরপুরের একটি গুচ্ছগ্রাম সম্পূর্ণ নদীগর্ভে হারিয়ে যায়। চলতি বছর আবারও একই এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত ৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ভাঙনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩০টি পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে।
হাটশেরপুর গ্রামের বাসিন্দা সাহাবুল ইসলাম বিপু বলেন,
“মাত্র চার দিনের ভাঙনে ৩০টিরও বেশি বাড়ি যমুনায় হারিয়ে গেছে। আমার নিজের বাড়িটিও এখন নদীর একদম পাশে। এইভাবে চলতে থাকলে পুরো গুচ্ছগ্রামই যমুনায় বিলীন হয়ে যাবে।”
তিনি আরও জানান,
“প্রায় ২০ হাজার মানুষ এখন ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে এখানে সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণ না করলে মানুষজন নিঃস্ব হয়ে যাবে।”
🏗️ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগ
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন,
“হাটশেরপুর ইউনিয়নের ভাঙনকবলিত এলাকা আমরা দ্রুত পরিদর্শন করব। পরিদর্শনের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জরুরি ভিত্তিতে প্রতিরোধমূলক কাজ শুরু করা হবে।”
📍 স্থানীয়দের দাবি
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিবছর ভাঙনে ফসলের জমি, বাড়িঘর ও জনপথ হারাচ্ছেন তারা, কিন্তু স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। তাদের দাবি, দীর্ঘমেয়াদি নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্প ছাড়া এ বিপর্যয় ঠেকানো সম্ভব নয়।