কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে উপ-মহাদেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে

 

image

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ■ এবারো প্রতি ঈদের মতো উপ-মহাদেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। লাখো মুসুল্লির অংশগ্রহণে নামাজ শেষে মোনাজাতে বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত এ মাঠে ঈদুল ফিতরের জামাত পরিচালনা করেন ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ। রেওয়াজ অনুযায়ী এখানে ঈদের জামাত শুরুর আগ মুহূর্তে বন্দুকের গুলি ফুটিয়ে নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার সংকেত দেওয়া হয়।

মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ৭ একর জমির ওপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন।

স্থানীয় গবেষকদের ভাষ্যমতে, ১৮২৮ সনে প্রথম অনুষ্ঠিত জামাতে সোয়া লাখ মুসুল্লি অংশগ্রহণ করেন বলে মাঠের নাম হয় সোয়া লাখি

  কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ■ এবারো প্রতি ঈদের মতো উপ-মহাদেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। লাখো মুসুল্লির অংশগ্রহণে নামাজ শেষে মোনাজাতে বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত এ মাঠে ঈদুল ফিতরের জামাত পরিচালনা করেন ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ। রেওয়াজ অনুযায়ী এখানে ঈদের জামাত শুরুর আগ মুহূর্তে বন্দুকের গুলি ফুটিয়ে নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার সংকেত দেওয়া হয়। মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ৭ একর জমির ওপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। স্থানীয় গবেষকদের ভাষ্যমতে, ১৮২৮ সনে প্রথম অনুষ্ঠিত জামাতে সোয়া লাখ মুসুল্লি অংশগ্রহণ করেন বলে মাঠের নাম হয় সোয়া লাখি মাঠ। সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে তা পরিণত হয়েছে আজকের নাম শোলাকিয়া। ১৮২৮ সালে শোলাকিয়ায় প্রথম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সেই হিসেবে এবার এই মাঠে ১৮৭তম ঈদ জামাত হলো। এই জামাতে অংশ নিতে সকাল থেকেই মানুষের ঢল নামে কিশোরগঞ্জের নরসুন্দা নদীর তীরে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিরা আগের দিন রাতেই কিশোরগঞ্জে আসেন নামাজে অংশ নিতে। বিশাল এই মাঠে রয়েছে ২৬৫টি কাতার। প্রতি কাতারে ৫ শতাধিক মুসল্লি দাঁড়াতে পারেন। সেই সঙ্গে মাঠের বাইরে আশে পাশের এলাকা জুড়ে জামাতে অংশ নেয়া মুসুল্লি মিলিয়ে এই সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ ছাড়িয়ে যায় বলে জানিয়েছেন ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটি। মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের সুবিধার জন্য ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেন ময়মনসিংহ ও ভৈবর থেকে ভোর বেলায় ছেড়ে আসে। শোলাকিয়া ঈদ গাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক এসএম আলম জানান, এবার মাঠে ঈদুল ফিতরের নামাজে দেশ-বিদেশ থেকে এসে অংশ নিয়েছে সাড়ে তিন লাখ অধিক মুসুল্লি। মাঠ ও আশপাশের এলাকায় নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার ও মাঠ পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান জানিয়েছেন, ঈদ জামাতকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে ঈদগাহের বিভিন্ন প্রবেশপথে বসানো হয় নিরাপত্তা চৌকি। নামাজ শুরুর আগে মাইন ডিটেক্টর দিয়ে পুরো মাঠ সুইপিং করা হয়। শোলাকিয়া ঈদগাহ মসজিদের ইমাম আব্দুস সালাম গোলাপ বলেন, ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া মাঠে লাখ লাখ মুসলমান অংশগ্রহন করে থাকে। বড় জামাতে অংশগ্রহন করলে হজ্রে সোওয়াব পাওয়া যায়, আর এ জন্যই দেশ বিদেশ থেকে লাখ লাখ মুসুল্লী ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে নামাজে অংশ নিতে আসেন। এবার ঈদুল ফিতরের নামাজে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি অংশ নিয়েছে কিশোরগঞ্জ-২ আসনের বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোঃ সোহরাব উদ্দিন। তিনি জানান, দেশ-বিদেশ থেকে আসা লাখো মুসুল্লির সাথে একত্রে নামাজ আদায় করা ভাগ্যের বিষয়। আর আমিতো এলাকার সন্তান ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে এখানে উপস্থিত হয়ে এলাকার জনগণের সাথে নামাজ আদায় করা আমার দ্বায়ীত্ব ও কর্তব্য। কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ দলীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সংসদ সদস্য কিশোরগঞ্জ-৪ থেকে নির্বাচিত সাংসদ বর্তমান সরকারের এলজিইডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ, কিশোরগঞ্জ-৬ সাংসদ নাজমুল রহমান পাপন, কিশোরগঞ্জ-৫ মোঃ আফজাল হোসেন তারা তাদের পরিবারের সাথে ঢাকায় ঈদ করায় নিজ এলাকার মাঠে নামাজ পড়তে পারেননি। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরীফুল ইসলাম (শরীফ) বলেন, ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে প্রতি বছর মুসুল্লীর সংখ্যা বাড়ছে। মুসুল্লীর অনুপাতে যে পরিমান যে রকম সুযোগ সুবিধা থাকা দরকার সে রকম সুযোগ সুবিধা এখানে নেই। তাই মাঠের পরিধি বৃদ্ধি, অযুখানা ও টয়লেটের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে তিনি সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।