
শাহজাদপুর সংবাদ ডটকম নওগা : জেলার পত্নীতলায় ধামইরহাট-পত্নীতলা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে আমবাটিতে ৪২ বছর আগে উৎকৃষ্ট মানের চীনামাটি ও রূপার সন্ধান পাওয়া গেলেও অদ্যবধি তা উত্তোলনের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। অযত্নে আর অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসেছে এই খনিজ সম্পদগুলো। সরজমিন গিয়ে এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর ভূতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের একটি শক্তিশালী অনুসন্ধানী দল উক্ত স্থানে জরিপ পরিচালনা, জায়গা নির্ধারণ ও খননকার্য পরিচালনা করে। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২ হাজার ফুট গভীরে শত শত স্টিলের পাইপ বসিয়ে তারা এ খননকার্য পরিচালনা করে। এ জরিপ ও খনন কার্যক্রম সে সময় স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগায়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ চরমভাবে দা
শাহজাদপুর সংবাদ ডটকম নওগা : জেলার পত্নীতলায় ধামইরহাট-পত্নীতলা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে আমবাটিতে ৪২ বছর আগে উৎকৃষ্ট মানের চীনামাটি ও রূপার সন্ধান পাওয়া গেলেও অদ্যবধি তা উত্তোলনের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। অযত্নে আর অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসেছে এই খনিজ সম্পদগুলো। সরজমিন গিয়ে এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর ভূতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের একটি শক্তিশালী অনুসন্ধানী দল উক্ত স্থানে জরিপ পরিচালনা, জায়গা নির্ধারণ ও খননকার্য পরিচালনা করে। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২ হাজার ফুট গভীরে শত শত স্টিলের পাইপ বসিয়ে তারা এ খননকার্য পরিচালনা করে। এ জরিপ ও খনন কার্যক্রম সে সময় স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগায়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ চরমভাবে দানা বেঁধে উঠতে শুরু করলে ক্রমান্বয়ে প্রকল্পটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ৪৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো সরকারের আমলেই এই খনির প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়নি। দেশের মানচিত্রে এ খনিটি একটি চিহ্ন হয়ে আছে মাত্র। খনি এলাকার জমির মালিক আলীমুদ্দিনের ছেলে আব্দুর রহমান (৫৫) জানান, উল্লিখিত সময়ে স্থানটিতে খননকার্য চলাকালে প্রায় শতাধিক দেশী-বিদেশী কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত ছিলেন। খননকৃত এলাকাটি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা ছিল। এ জরিপ টিমটি প্রায় দশ বছর এ কার্যক্রম চালায়। ১৯৬৮ সালের শেষের দিকে খননকারীরা কূপের স্থানটি বন্ধ করে চলে যায়। এরপর থেকেই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে খনির স্থানটি। স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে স্মৃতি পিলারগুলো আবাদি জমির মাঝখানে হওয়ায় চাষাবাদ ব্যাহত হয়। এ কারণে জমির মালিকরা কয়েকবার সেগুলো ভাঙার চেষ্টা করেন। তবে পিলারগুলো অনেক শক্ত হওয়ায় তারা ব্যর্থ হন। তাদের আশঙ্কা এ স্মৃতিচিহ্নগুলো একদিন হারিয়ে যাবে। এলাকার প্রবীণ শিক্ষাবিদ নূর-আলম খাদেমুল ইসলাম (৮৫) বলেন, আমার বাড়ি ডাকবাংলোর পাশেই। খনির খননকাজ চলাকালে ডাকবাংলোতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরিবারসহ বসবাস করতেন। তাদের বেশিরভাগই ছিলেন বিদেশী। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ড্রিল কোরের শিলাখন্ডে যেখানে টনপ্রতি ১৪ থেকে ২৮ গ্রাম রুপার উপস্থিতিকে আকর হিসেবে এবং ইন্দোনেশিয়ায় টনপ্রতি ১৪৭ গ্রাম রুপার উপস্থিতিকে রিসোর্স হিসেবে উল্লেখ করা হয় সেখানে পত্নীতলায় ড্রিল কোরের শিলাখন্ডে প্রাপ্ত রুপার পরিমাণ টনপ্রতি ২৫ গ্রাম। তিনি আরো জানান, উল্লিখিত স্থানটিসহ একই ইউপির চকনিরখিন মোড় ও গাহন মৌজার ২টি স্থানেও একই সময় জরিপ ও খননকার্য চালানো হয়। তবে তার কোনো স্মৃতিচিহ্ন বর্তমানে খুঁজে পাওয়া যায় না। বরেন্দ্র এলাকার অজ পাড়াগাঁয়ে এ খনিটির অবস্থান হওয়ায় প্রচার মাধ্যম ও ভূতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের নজরে এটি সেভাবে গুরুত্ব পায়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তবে পত্নীতলার এই উৎকৃষ্ট মানের চীনামাটি উত্তোলন করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হায়াত মোঃ রফিক বলেন, এ বিষয়ে আমি শুনেছি। কিন্তু উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ভূতত্ত্ব জরিপ অধিদপ্তরের অফিস না থাকায় বিশেষ কিছু তিনি জানেন না বলে জানান।