শাহজাদপুর সংবাদ ডটকম, মোঃ মুমীদুজ্জামান জাহানঃ শাহজাদপুর উপজেলার প্রাণকেন্দ্র দ্বারিয়াপুর বাজারে অবস্থিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জমিদারী তদারকি কাছারিবাড়ির সবুজ কাননে গত ৭ সেপ্টেম্বর রোববার পড়ন্ত বিকেলে দুই বাংলার কবিদের এক মনোমুগ্ধকর কবি আড্ডা জমে উঠেছিল। যুগান্তর স্বজন সমাবেশ শাহজাদপুর উপজেলা শাখা ও পুরবী থিয়েটার যৌথভাবে দুই বাংলার অর্ধ শতাধিক কবিদের নিয়ে এ কবি আড্ডার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ভারত রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার প্রাপ্ত জাতীয় শিক্ষাবিদ, বিশিষ্
শাহজাদপুর সংবাদ ডটকম, মোঃ মুমীদুজ্জামান জাহানঃ শাহজাদপুর উপজেলার প্রাণকেন্দ্র দ্বারিয়াপুর বাজারে অবস্থিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জমিদারী তদারকি কাছারিবাড়ির সবুজ কাননে গত ৭ সেপ্টেম্বর রোববার পড়ন্ত বিকেলে দুই বাংলার কবিদের এক মনোমুগ্ধকর কবি আড্ডা জমে উঠেছিল। যুগান্তর স্বজন সমাবেশ শাহজাদপুর উপজেলা শাখা ও পুরবী থিয়েটার যৌথভাবে দুই বাংলার অর্ধ শতাধিক কবিদের নিয়ে এ কবি আড্ডার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ভারত রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার প্রাপ্ত জাতীয় শিক্ষাবিদ, বিশিষ্ট নজরুল গবেষক, খ্যাতনামা কবি ও সাহিত্যিক ড. সুশীল ভট্টাচার্য। বিশেষ অতিথি ছিলেন, ভারতের খ্যাতনামা গীতিকার ও কবি আব্দুর রফিক খান, কবি ও সঙ্গীত শিল্পী গৌরাঙ্গা বিশ্বাস (ভারত), কবি ও সাহিত্যিক তারাপদ হাজরা (ভারত), কবি হীরক বন্দ্যোপাধ্যায় (ভারত), কবি ও আবৃত্তিকার প্রণব কুমার কুন্ডু (ভারত), কবি, গীতিকার ও কণ্ঠশিল্পী নারায়ন কর্মকার (ভারত)। এ কবি আড্ডায় বাংলাদেশের কবিদের মধ্যে অংশ নেন, কবি ম. জাহান (শাহজাদপুর), কবি রিক্তার হোসেন (সিরাজগঞ্জ), কবি আবু বকর (সিরাজগঞ্জ), কবি রোমেল রিয়েল (সিরাজগঞ্জ), কবি আতিক সিদ্দিকী (শাহজাদপুর), কবি ও প্রভাষক শাহ আলম (শাহজাদপুর), কবি ও সাহিত্যিক গাজি সৈয়দ শুকুর মাহমুদ (শাহজাদপুর), কবি আব্দুর রাজ্জাক (শাহজাদপুর), কবি ছোরহাব হোসেন রূপক (শাহজাদপুর), কবি শুভজিৎ মোদক (শাহজাদপুর), কবি দিলীপ কুমার সূত্রধর (শাহজাদপুর), কবি এম রহমত উল্লাহ (তাড়াশ), কবি রাজীবুল হাসান (রায়গঞ্জ), সাংবাদিক আতাউর রহমান পিন্টু, সাংবাদিক মুমীদুজ্জামান জাহান, সাংবাদিক শফিউল হাসান লাইফ, সাংবাদিক শফিকুজ্জামান শফি, সাংবাদিক হাসানুজ্জামান তুহিন, অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম শাহিন প্রমূখ। দুই বাংলার এ কবি আড্ডায় স্বজন বন্ধু ও পূরবী থিয়েটারের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তাকিবুন্নাহার তাকি, মাহবুবুর রহমান চাঁন, হাসমত উল্লাহ, মেহেদী হাসান হিমু, মিজানুর রহমান, কবির মীর্জা, মিঠুন সাহা, আসাদুল ইসলাম মিঠু, তানিন, সবুজ মিয়া, বিজয় সরকার, সুমন সরকার, রবিউল ইসলাম, রুবেল, রফিকুল ইসলাম, আল-আমিন হোসেন, আশরাফুল ইসলাম, আব্দুল কাইয়ুম, জাকারিয়া ইসলাম, আব্দুল আলীম প্রমূখ। এ কবি আড্ডার প্রধান অতিথি ডঃ সুশীল ভট্টাচার্য বলেন, ‘ধর্মীয় সীমারেখার চেয়েও অধিক শক্তিশালী মানব প্রেম। তাই রবীন্দ্র-নজরুলের লেখনীতে মানব প্রেমের এমন কথাই বারবার উঠে এসেছে’। সাম্যবাদী কবি কাজী নজরুল ইসলাম কখনই ধর্মীয় সীমারেখায় আবদ্ধ ছিলেন না। অসাধারন ও তুলনাহীন ইসলামিক গান ও শ্যামা সঙ্গীত রচনার মাধ্যমেই তার প্রমান পাওয়া যায়। এছাড়া প্রমীলা দেবীকে তিনি বিয়ে করলেও তাকে ধর্মান্তরিত করেননি। এটাও মানব প্রেমের এক অসাধারণ উদাহরণ। তার সন্তানদের তিনি ধর্মীয় সীমারেখায় আবদ্ধ রাখেননি। এটাও মানব প্রেমের এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তার সমগ্র লেখনীতে তাই বারবার প্রেমের বন্দনা করা হয়েছে। অপরদিকে আমাদের দৈনন্দিন জীবন কর্ম থেকে শুরু করে এমন কোন কিছুই নেই যে, সেখানে রবীন্দ্রনাথের ছোঁয়া নেই। মানব জীবনে এমন কিছু নেই যে, সেখানে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের প্রভাব পড়েনি। তাই রবীন্দ্র-নজরুলকে বাদ দিয়ে বাংলা ও বাঙ্গালী’র অস্তিত্ত্ব ভাবাই যায় না। রবীন্দ্র-নজরুল থেকে আমাদের শিক্ষা নিযে আমাদের দেশ ও জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। এ কবি আড্ডায় দুই বাংলার উপস্থিত কবিগণ তাদের স্বরচিত কবিতা আবৃতি করেন এবং সুললিত কণ্ঠে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তাদের সঙ্গীত মূর্চ্ছনায় উপস্থিত শ্রোতারা অভিভূত ও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এসময়ে পুরো রবীন্দ্র কাছারীবাড়ি অঙ্গনে আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এর আগে দুপুরে কবি অনুরাগী আলহাজ কে, এম আতিকুল ইসলাম আতিক তার ছয়আনি পাড়ার বাগানবাড়িতে দুই বাংলার কবিদের স্মরণে ইলিশ ভাত ভোজের আয়োজন করেন। ভোজ শুরুর আগে সেখানে সিরাজগঞ্জ কবিতা ক্লাবের একুশ বছর পূর্তি উপলক্ষে শাহজাদপুর সাহিত্য পরিষদ ও বিশ্ববাংলা সাহিত্য পরিষদ আয়োজিত দুই বাংলার কবিদের সাথে এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ডঃ সুনিল ভট্টাচার্যের লেখা কাজী নজরুল ইসলামের ‘জীবন ও লেখনী পরিক্রমা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এসময় লেখক দাবী করেন কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও লেখা সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে। তাই বইটি অবশ্যই দুই বাংলার মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সূর্যিমামা পশ্চিমাকাশে রক্তিম আভা ছড়িয়ে মেঘের আড়ালে মুখ লুকাতেই সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। সেই সাথে শেষ হয় কাছারীবাড়ির দুই বাংলার কবি আড্ডা। সব শেষে দেশ ও জাতির কল্যান কামনা করে কবিরা ফিরে যায় আপন নীড়ে।