শাহজাদপুরে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা দিচ্ছে ফার্মাসিস্ট ও পিয়ন

Shahzadpur-Pic-04

শাহজাদপুরে নরিনা ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি এখন রুগ্ন দশায় ভুগছে। এ ইউনিয়নের প্রায় ৫৫ হাজার মানুষের জন্য ১ জন এমবিবিএস ডাক্তার, ১ জন করণিক, ১ জন ফার্মাসিস্ট ও ১ জন এমএলএসএস দিয়ে যাত্রা শুরু হয় এটির। চালুর পর এটির মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির এ অবস্থা হয়েছে।

জানা গেছে, হাসপাতাল সংলগ্ন ডাক্তার ও কর্মচারীদের আবাসিক ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় এ ভবনটি এখন গণশৌচাগারে পরিণত হয়েছে।

বর্তমানে এ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ১ জন এমবিবিএস ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও এখন ১ জন ফার্মাসিস্ট ও ১ জন এমএলএসএস রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কেন্দ্রটিতে ঘরের দরজা আটকে বসে আছেন পিয়ন সানোয়ার হোসেন। এখানে চিকিৎসা নিতে আসা পরি বেগম জানান, তার জ্বর হয়েছে। তাই জানালা দিয়ে সানোয়ার তার রোগের কথা শুনে দুই

শাহজাদপুরে নরিনা ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি এখন রুগ্ন দশায় ভুগছে। এ ইউনিয়নের প্রায় ৫৫ হাজার মানুষের জন্য ১ জন এমবিবিএস ডাক্তার, ১ জন করণিক, ১ জন ফার্মাসিস্ট ও ১ জন এমএলএসএস দিয়ে যাত্রা শুরু হয় এটির। চালুর পর এটির মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির এ অবস্থা হয়েছে। জানা গেছে, হাসপাতাল সংলগ্ন ডাক্তার ও কর্মচারীদের আবাসিক ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় এ ভবনটি এখন গণশৌচাগারে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ১ জন এমবিবিএস ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও এখন ১ জন ফার্মাসিস্ট ও ১ জন এমএলএসএস রয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, কেন্দ্রটিতে ঘরের দরজা আটকে বসে আছেন পিয়ন সানোয়ার হোসেন। এখানে চিকিৎসা নিতে আসা পরি বেগম জানান, তার জ্বর হয়েছে। তাই জানালা দিয়ে সানোয়ার তার রোগের কথা শুনে দুই রকমের ১২টি বড়ি দিয়েছেন। এ পাতার-ও পাতার ১টি করে বড়ি দিনে ৩ বার খেতে বলেছেন। অসুখ যেটাই হোক না কেন পরি বেগমের মতো সকল রোগীকেই একই রকম ওষুধ দিয়ে বিদায় করা হয়। এ ব্যাপারে কথা হয় পিয়ন সানোয়ারের সাথে। তিনি জানান, স্যার মাঝেমধ্যে ছুটিতে ও অফিসের কাজে উপজেলা সদরে যাওয়ার কারণে অফিস খুলে তাকেই রোগীদের কথা শুনে ওষুধ দিতে হয়। এ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে কর্মরত ফার্মাসিস্ট আব্দুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ২০০৫ সাল থেকে এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে তিনি কর্মরত আছেন। তবে অফিসিয়াল কাজে উপজেলা সদরে যাওয়ার কারণে মাঝেমধ্যে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসা রোগীদের সানোয়ারকেই ওষুধ দিতে হয়। তিনি আরো জানান, এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের শুরুতে এখানে একটি এমবিবিএস ডাক্তারের পদ থাকলেও বর্তমানে এ পদটি শূন্য থাকায় তাকেই রোগীদের চিকিৎসা দিতে হয়। রহমান আরো জানান, এ কেন্দ্রের কোন সীমানা প্রাচীর না থাকায় গ্রামের লোকজন ভিতরে ঢুকে অস্বস্তিকর কাজ করে থাকে। দীর্ঘ ৫ মাস যাবত এ কেন্দ্রের ভবনের ছাদে একটি গাছ পড়লেও কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানোর পরেও এটি সরানো সম্ভব হয়নি। তাই ঝুঁকির মধ্যে বসে তাদের চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে। বর্তমানে এ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি পরিচালিত হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অধীনে। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে বৃহস্পতিবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে থাকায় কথা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সাইফুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নেদারল্যান্ডের অর্থায়নে ১৯৮৮ সালে নির্মিত হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রকল্পটিতে নেদারল্যান্ড অর্থায়ন না করায় এটি এখন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন ফার্মাসিস্ট ও একজন এমএলএসএস দ্বারা ওই কেন্দ্র থেকে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. সামসুদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এ উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক ভবনগুলো অর্থাভাবে মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আপাতত এই কেন্দ্রটিতে এমবিবিএস ডাক্তার দেয়ার কোন পরিকল্পনা নেই।