আজ বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী

hamidur

২৮ অক্টোবর। ১৯৭১ সালের এই দিন ভোরবেলা মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ধলই সীমান্ত চৌকিতে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান। সেদিন তার রক্তে সিক্ত হয়েছিল কমলগঞ্জের মাটি। আজ তার ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী।
যুদ্ধক্ষেত্রে তার সাহসী ভূমিকা এবং সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কারণে তাকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খোরদা খালিশপুর গ্রামের আক্কাছ আলী মণ্ডল ও কায়ছুন্নেছার সন্তান ছিলেন বীর হামিদুর রহমান।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সারা দেশকে ১১ টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। এই ১১টি সেক্টরের মধ্যে ৪নম্বর সেক্টর ছিল মেজর জেনারেল সি.আর. দত্তের অধীনে। এই সেক্টরের একটি সাব-সেক্টর কমলপুর। ২৪ অক্টোবর শেষ রাত থেকে ২৮ অক্টোবর ভোর পর্যন্ত কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তে তৎকালীন ইপিআর (বর্তমান বিজ

২৮ অক্টোবর। ১৯৭১ সালের এই দিন ভোরবেলা মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ধলই সীমান্ত চৌকিতে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান। সেদিন তার রক্তে সিক্ত হয়েছিল কমলগঞ্জের মাটি। আজ তার ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। যুদ্ধক্ষেত্রে তার সাহসী ভূমিকা এবং সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কারণে তাকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খোরদা খালিশপুর গ্রামের আক্কাছ আলী মণ্ডল ও কায়ছুন্নেছার সন্তান ছিলেন বীর হামিদুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের সময় সারা দেশকে ১১ টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। এই ১১টি সেক্টরের মধ্যে ৪নম্বর সেক্টর ছিল মেজর জেনারেল সি.আর. দত্তের অধীনে। এই সেক্টরের একটি সাব-সেক্টর কমলপুর। ২৪ অক্টোবর শেষ রাত থেকে ২৮ অক্টোবর ভোর পর্যন্ত কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তে তৎকালীন ইপিআর (বর্তমান বিজিবি) ফাঁড়ি এলাকায় পাক সেনাদের সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়। ধলই সীমান্তে আক্রমণকারী মুক্তিবাহিনীর প্লাটুন অফিসার ছিলেন মেজর (অবঃ) কাইয়ুম চৌধুরী। আর সিপাহী হামিদুর রহমান ছিলেন কাইয়ুম চৌধুরীর রানার। চারদিকে চা-বাগান, মাঝখানে ধলই সীমান্ত চৌকি। চৌকি থেকে দক্ষিণপূর্ব দিকে ত্রিপুরার কমলপুর সাব-সেক্টর ক্যাম্প থেকে সকল প্রস্তুতি নিয়ে ২৮ অক্টোবর ভোরে কাইয়ুমের নেতৃত্বে একটি দল পাক সেনাদের উপর চতুর্দিক থেকে সাঁড়াশি আক্রমণ চালায়। ব্যাপক গোলাবর্ষণের এক পর্যায়ে পাক সেনাদের ক্যাম্পে আগুন ধরে যায়। এ সময় পাকবাহিনীর পুতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে বেশ কজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্য হামিদুর রহমান সীমান্ত চৌকি দখলের উদ্দেশ্যে মৃত্যুকে তুচ্ছ করে হালকা একটি মেশিনগান নিয়ে বিক্ষিপ্ত গোলাগুলির মধ্যে হামাগুড়ি দিয়ে শক্রপক্ষের ৫০ গজের মধ্যে ঢুকে পড়েন। তার হাতে মেশিনগান গর্জে ওঠে। শক্র দলের অধিনায়কসহ বেশ কয়েকজন সৈন্য এতে নিহত হয়। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ শক্র পক্ষের একটি বুলেট হামিদুর রহমানের কপালে বিদ্ধ হয়। মুহূর্তেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। ১৯৯২ সালে তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি)-এর উদ্যোগে সর্ব প্রথম ধলই সীমান্ত চৌকির পাশে নির্মাণ করা হয় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মরণী। ২০০৬ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ১০ শতাংশ জায়গায় সাড়ে ১৪ লাখ টাকা ব্যায়ে গণপূর্ত বিভাগ নির্মাণ করে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিস্তম্ভ। কমলগঞ্জের ভানুগাছ-মাধবপুর সড়কটির নামকরণও এই বীরশ্রেষ্ঠর নামে করা হয়েছে। এ ছাড়াও ২০০৭ সালে ধলই বিওপির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমান সীমান্ত ফাঁড়ি। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ তার স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পন এবং ফাতেহা পাঠের কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।