লেখক : মামুন সৃজন আমার পরিচিত অনেকেই আছেন যাঁরা আমার আগে, আমার সমসাময়িক বা আমার পরে এসেছেন ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংকে পেশা হিসেবে নেবার জন্য কিন্তু কিছুদিন পর আবার সব ছেড়ে ছুড়ে চাকরী খুঁজতে বেরিয়েছেন। এ ধরণের ঘটনা দেখার পর হয়ত অনেকেই মনে করতে পারেন যে ফ্রিল্যান্সিং হয়ত পেশা হতে পারেনা। এটি অনেকে সাময়িকভাবে টিকে থাকার জন্য করে থাকেন। আর এ কারণেই শুনতে হয়, ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কি ক্যারিয়ার হতে পারে? আমার পাল্টা প্রশ্ন থাকে, কেন পারে না? অবশ্যই পারে! শুধু পারেই না, এটা ক্যারিয়ার হিসাবে সবার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত। যাঁরা ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংকে পেশা হিসাবে নেওয়ার মানসিকতা নিয়ে এক্ষেত্রে এসেও পরে চাকুরির পিছনে ছুটেছেন তাঁদের ব্যাপারে আমার মতামত, চ্যালেঞ্জবিহীন জীবনের জন্যই তাঁদের পিছু হটা, প্রতিদিন ৯-৫ টার ধরা বাঁধা অফিস টাইম মেইনটেইন করার জন্যই তাঁদের চলে যাওয়া। কেন ফ্রিল্যান্সিং সেরা পেশা? ব্যক্তিজীবন, পরিবার আর পেশাজীবনের সবচেয়ে ভাল সমন্বয়কেই ভাল থাকা বলে মনে করি আমি। এই ভাল থাকার জন্য প্রধানত যে তিনটি জিনিসের প্রয়োজন তা হচ্ছে- স্বাধীনতা, স্বাচ্ছন্দ এবং পর্যাপ্ত আয়। চলুন দেখি ফ্রিল্যান্স-আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা কতটুকু সুবিধা এ ক্ষেত্রগুলোতে পেতে পারি।
শতভাগ আত্ববিশ্বাস থাকলেই জব বিড করুন : মামুন সৃজন
সময়ের স্বাধীনতা আমি প্রতিদিন কাজ করি রাত এগারোটা থেকে সকাল ছয়টা, দুপুর পর্যন্ত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজ করে দুপুর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঘুমাই। এভাবে কাজ করতে আমাকে কেউ বাধ্য করেনি। আমার কাছে এই শিডিউলটা সুবিধাজনক মনে হয় তাই এভাবে করি। কোনদিন ইচ্ছা হলো আজ রাতে কাজ করবো না, অন্য সময়ে করবো, তাতেও কেউ নিষেধ করবে না। কিন্তু আগের ৯ বছরের কর্মজীবেন আমি কখনো ভাবতে পারিনি অফিসে বস্কে বলবো আজ আমি সকালে অফিসে না গিয়ে সন্ধ্যায় যাব বা দুদিন অফিসে না গিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেবো! স্থান স্বাধীনতা আমার পার্সোনাল ডেস্কটা আমার বেডরুমেই। আপনি কোন চাকরি করেন কিংবা অন্য কোন ব্যবসা করেন, বেড়াতে ইচ্ছা হলেই যেতে পারবেন না। যদি চাকরি হয় তাহলে ছুটির জন্য অপেক্ষা করতে হবে, ব্যবসা হলে আপনার প্রতিষ্ঠান ফেলে যেতে হবে। কিন্তু ভ্যাগাবন্ডফ্যামিলি লিংকে গিয়ে দেখুন। এরকম ভ্যাগাবন্ড ফ্যামিলি তৈরি তো দূরের কথা, এমন কিছু স্বপ্ন দেখতেও দ্বিধা হবে! এরা সবাই বছরের পর বছর দেশে বিদেশে বেড়াচ্ছে। কিন্তু এদের কাজ থেমে থাকে না। এরা যেখানে যায় এদের অফিসও সেখানে। একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনার ল্যাপটপ আর একটা ছোট্ট ট্রাভেল ব্যাগই যথেষ্ট। আপনাকে অফিসে যেতে হবে না, বরং অফিসই আপনার সাথে যাবে। কাজের জন্য আর কতটা স্বাধীনতা চান?