অনলাইন ডেস্ক: পূর্ব অনুমতি ছাড়া আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে ঘরোয়া সভা এবং পথসভা করা যাবে না। এ ধরনের সভা করার অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশের অনুমতি নেয়ার বিধান রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।(নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৫ এ বিধি সংযোজন করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিশ্লেষকদের মতে, ইসির করা নতুন এ আইন বাস্তবায়ন কঠিন হবে। সভার জন্য পূর্ব অনুমতি নেয়ায় জটিলতার সৃষ্টি হবে। সংসদ সদস্যদের প্রচারণায় অংশ নেয়া থেকে বিরত রাখাও কঠিন হবে।দেশে প্রথমবারের মতো দলীয়ভাবে পৌরসভা নির্বাচনের প্রার্থী ও দলের ক্ষেত্রে আচরণবিধিতে পরিবর্তন এনেছে নির্বাচন কমিশন। পৌরসভা (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৫ অনুযায়ী, এ নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হবেন দলীয় কিংবা স্বতন্ত্র। আর অন্যান্য পদে আগের মতোই নির্দলীয়ভাবে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হবে নির্ধারিত দিনের (৩০ ডিসেম্বর) তিন সপ্তাহ আগে। প্রচারণার সময় সার্কিট হাউজ, ডাক বাংলো বা রেস্ট হাউজে কেউ থাকতে পারবেন না। কোন প্রার্থী বা দল প্রচারণার জন্য জনসভা বা শোভাযাত্রা করতে পারবেন না। পথসভা ও ঘরোয়া সভা করা যাবে। তবে পথসভা ও ঘরোয়া সভা করতে চাইলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে স্থান ও সময় জানিয়ে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। আবার জনগণের চলাচলে বাধা-বিঘ্ন ঘটে এমন কোন স্থানেও পথসভা করা যাবে না। এসব অনুষ্ঠানেপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কিংবা নিজ দলের কারণে কোন প্রকার গোলযোগের সৃষ্টি হলে পুলিশের শরণাপন্ন হতে বলা হয়েছে বিধিমালায়। আচরণবিধি অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রচারণায় সংসদ সদস্যরাও অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।গত ২৪ নভেম্বর ২৩৪ পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। পরে আরও ২টি বাড়িয়ে ২৩৬ পৌরসভায় নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত হয়। তবে গতকাল মংলা পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত করে ইসি। সে হিসেবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২৩৫ পৌরসভার নির্বাচন হবে। যার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৩ ডিসেম্বর। এরপর প্রতীক পেলে আনুষ্ঠানিক প্রচারের সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা। তবে তফসিল অনুযায়ী ৯ ডিসেম্বর থেকেই প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা।পৌর নির্বাচনে সভা সমিতি ও অনুষ্ঠান সংক্রান্ত বিধিমালায় আগে এমনটা ছিল না। দলীয়ভাবে হওয়ায় এমন পরিবর্তন এনেছে ইসি। জাতীয় নির্বাচনের বিধির সঙ্গে সমন্বয় করে এই বিধি যুক্ত হয়েছে। সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিতে জনসভা করার ক্ষেত্রে পুলিশের অনুমতির বিধান যোগ করা হয়েছিল।ইসির উপ-সচিব সামসুল আলম জানান, দল, প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের আচরণবিধি অনুসরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের একটি পরিপত্র পাঠানো হয়েছে। নতুন আইন-বিধি পাঠানো হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও। প্রচারণার জন্য এ আচরণবিধিই মানতে হবে সবাইকে।বিধিমালা অনুযায়ী, নির্বাচনের আগে দল, প্রার্থী ও তাদের পক্ষে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চাঁদা বা অনুদান নেয়া যাবে না। প্রার্থী কোন প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক হয়ে থাকলে সেসব প্রতিষ্ঠানের পর্ষদে অংশ নিতে পারবেন না তারা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটের প্রচারের পাশাপাশি নির্বাচনী এলাকায় মাইকে প্রচার চালানো যাবে বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। ভোটের প্রচারে সার্কিট হাউজ ব্যবহার, জীবন্ত প্রতীক ব্যবহার, তোরণ নির্মাণ ও দেয়াল লিখন, যানবাহন নিয়ে মিছিল-শোডাউন বন্ধ, বিলবোর্ড ব্যবহার ও উস্কানিমূলক বক্তব্যের বিষয়ে রয়েছে বিধিনিষেধ। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় পাঁচজনের বেশি সমর্থককে সঙ্গে নেয়া যাবে না। মেয়র প্রার্থীরা সর্বোচ্চ পাঁচটি নির্বাচনী ক্যাম্প, কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রতি ওয়ার্ডে ক্যাম্প করতে পারবেন।বিধিমালায় আরও রয়েছে, দল মনোনীত প্রার্থীরা দলীয় প্রতীক ও দলীয় প্রধানের ছবি পোস্টারে রাখতে পারবেন, তবে রঙিন পোস্টার ব্যবহার করতে পারবেন না। মিছিলে নেতৃত্ব দেয়ার কিংবা প্রার্থনা বা ‘বিশেষ ভঙ্গির’ ছবিও পোস্টারে দেয়া চলবে না। সরকারি উন্নয়ন কর্মসূচিতে কর্তৃত্ব করা এবং এ সংক্রান্ত সভায় প্রার্থীদের যোগ দেয়ার ক্ষেত্রে যেমন বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে, তেমনি নির্বাচনপূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় সরকারি প্রকল্প অনুমোদন, ফলক উন্মোচন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা যাবে না। পৌর মেয়র, কাউন্সিলর বা অন্য কোন পদাধিকারী অনুমোদিত প্রকল্পের অর্থও অবমুক্ত করতে পারবেন না।বিধিভঙ্গে সর্বোচ্চ প্রার্থিতা বাতিল ও দলকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান থাকলেও খোদ ইসির কর্মকর্তারাই মনে করেন ভোটে অদৃশ্য প্রভাব পড়তে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসির এক কর্মকর্তা বলেন, এমপিরা প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন না। কিন্তু এরপরও ভোটে তাদের একটা প্রভাব পড়বে। কিছু না কিছু সুবিধা তারা নিতে চাইবেন। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনে ইসির এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল বলে জানান তিনি।পৌরসভা বিধিমালা, ২০১৫ বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দিহান স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন, এই বিধিমালায় বেশকিছু অসঙ্গতি রয়েছে। দলীয় প্রধান হয়েও প্রধানমন্ত্রী প্রচারণা চালাতে পারবেন না। অথচ বিধিমালা অনুযায়ী তিনি হেলিকপ্টার পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন। পথসভা ও ঘরোয়া সভায় পুলিশের অনুমতির কী প্রয়োজন। জনসংযোগে লোকসমাগম হলে পথসভা হয়ে যায়। আর ঘরে বসেতো বৈঠক হতেই পারে। এজন্য তো রিটার্নিং অফিসাররা আছেন। এছাড়া, সংসদ সদস্যরা যেহেতু নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী নয়, তাই তাদের প্রচারণা থেকে বিরত রাখা কতটুকু সংবিধান সম্মত? সেটা ভেবে দেখার বিষয়। সরকারি দলের সংসদ সদস্যদের প্রচারণা ও পথসভা থেকে বিরত রাখাও ইসির পক্ষে কষ্টসাধ্য হবে বলে মনে করেন তারা।এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার সংবাদকে বলেন, এই আচরণ যদি বিরোধীদলের প্রচারণায় বাধা সৃষ্টির জন্য না করা হয় তবে তা ভালো। কিন্তু ইসির বর্তমান শক্তি দিয়ে এসব আচরণ বলবৎ করতে পারবে বলে মনে হয় না। সরকারি দলের প্রার্থীদের আচরণ বিধি মান্য করানো ইসির পক্ষে খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার বলেও মনে করেন তিনি।
সম্পর্কিত সংবাদ
খেলাধুলা
শাহজাদপুর পৌর গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট-২০১৬ উদ্বোধনী খেলায় নাটোর পৌরসভাকে ২-১ গোলে হারিয়ে বেড়া পৌরসভা জয়ী
আজ শুক্রবার বিকেলে শাহজাদপুর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শাহজাদপুর পৌরসভা আয়োজিত পৌর...
মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা বাংলাদেশের ইতিহাসের পবিত্র স্থান//১৭ এপ্রিল বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথগ্রহণ করে// স্থানটির নামকরণ হয় মুজিবনগর
আব্দুল মতিন ১৯২৬ সালের ৩ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার ধুবুলিয়া গ্রামে এক মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।... ডেস্ক নিউজ: আওয়ামী লীগ-বিএনপি দলীয়ভাবে মনোনয়ন চূড়ান্তের পরই প্রার্থীর সমর্থক ও দলীয় কর্ম... পাবনা প্রতিনিধি :-নানা অব্যবস্থাপণার মধ্যদিয়ে চালু রয়েছে পবনা সেচ প্রকল্প। অবহেলা ও অনিয়মের কারণে সেচ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ...জাতীয়
সিরাজগঞ্জের ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন স্মরণে
রাজনীতি
সিরাজগঞ্জে নৌকা-ধানের শীষের লড়াই শুরু
নানা অব্যবস্থাপণায় চলছে পাবনা সেচ প্রকল্প
সম্পাদকীয়
এইডস আতঙ্কের ব্যাপ্তি, প্রতিরোধেই মিলবে মুক্তি
লাইট হাউস শাহজাদপুর ডিআইসি আয়েজিত প্রজেক্ট ফ্যসিলিটেশন টিমের ২০১৫ সালের ১ম সভায় উপস্থাপি...