

বৃটিশ শাসনামলে রাজা জমিদাররা বিঘা প্রতি এক টাকা,দেড়টাকা কর,গরুর গাড়ী চালালে 'ধুলট' কর,গাছ লাগালে 'চৌথ' কর, আখেড় গুড় তৈরী করলে 'ইক্ষু' কর, গরু মহিস মরলে 'ভাগাড়ে' কর, নৌকার মালামাল নামালে 'কয়ালি' নৌকা ঘাটি ভিড়ালে 'খুটাগাড়ী' কর, জমিদারের সাথে দেখা করলে 'নজরানা' কর, জমিদার হাজতে গেলে 'গারদ সেলামি' পুঁজা পার্বনে 'উৎসব' কর, ইত্যাদি কর আদায়ের মাধ্যমে বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতির সাথে জড়িত উৎপাদক শক্তি কৃষক শ্রমিকদের পুঁজি শুন্য করে রাজা জমিদাররা ভোগবিলাসী জীবন যাপন করতো। অত্যাচারের মাধ্যমে আদায়কৃত সেই করের টাকা বাংলার রাজধানী কোলকাতায় নিয়ে যেত ভোগবিলাসীতার জন্য। এ কারনে বাংলায় প্রজা বিদ্রোহের মাধ্যমে রাজা জমিদারদের পতন ঘটে। জমিদারী ব্যবস্থা উচ্ছেদ হয়ে যায়। জন্ম হয় নতুন গনতান্ত্রীক স্বাধীন রাষ্ট্র ব্যবস্থা।
এখন আধুনিক সেই স্বাধীন গণতান্ত্রীক রাষ্ট্র ব্যবস্থাতেও গ্রামীন অর্থনীতির ধারক বাহক কৃষক শ্রমিকদের অর্জিত পুঁজি রাজা জমিদারদের মত একই কায়দায় ভ্যাট ট্যাক্সের মাধ্যমে আদায় করে নিচ্ছে সরকার। এভাবে সরকারী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষক শ্রমিকদের পুঁজি শুন্য করে প্রবাহমান গ্রামীন অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণা তথ্যানুযায়ী জানাযায়, বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ পরোক্ষ ভাবে শতকরা ৪৩% ভাগ ভ্যাট ট্যাক্স আদায় করা হয়। আদায়কৃত কর এবং বিভিন্ন দেশে শ্রমের বিনিময়ে আসা রেমিটেন্সের টাকা উন্নয়ন,আমদানী রপ্তানি, ঘুষ, দূর্নীতির অবৈধ আয়ের মাধ্যমে শাসকেরা ভোগবিলাসী জীবন যাপন করছেন। পাশাপাশি তারা সেই চুরির টাকা (সাধারন মানুষের কষ্টার্জিত পুঁজি) নানা কায়দায় বিদেশে পাচার নিয়ে গেছেন,নিয়ে যাচ্ছেন। পাচার কৃত অর্থের সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ কোটি টাকা। এভাবে পুঁজির লন্ঠুন বৃত্তির কারনে গ্রামীন অর্থনীতিতে চরম পুঁজির সঙ্কট চলছে। পুঁজিহীনতায় মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হবার পাশাপাশি তারা দরিদ্র থেকে দরিদ্র হতে চলেছে। এর সাথে রয়েছে কয়েক কোটি মানুষের বেকারত্ব। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে এবং পুঁজির সঙ্কট মোকাবেলার করণীয় কি হতে পারে?
তাৎক্ষনিক একটি উপায় হতে পারে বিদেশে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা। ফেরত নিয়ে আসা অর্থ কৃষক শ্রমিকসহ নানা শ্রেণী পেশার দরিদ্রদের মাঝে বিনা সুদে পুঁজি প্রদান করা। এমন উদ্যোগ গ্রহন করেই গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা স্বচল করার মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের বেঁচে থাকার নিরাপত্বা বিধান করা সম্ভব।
অতীতে প্রজাবিদ্রোহের মাধ্যমে অত্যাচারী রাজা জমিদাররা বিদেয় হয়েছে। আধুনিক রাষ্ট্রের শাসক ও শোষক রাজা জমিদারদের বিরুদ্ধেও প্রজা বিদ্রোহের সময় হয়ে গেছে। অহিংস গণ অভ্যুত্থান প্রজাবিদ্রোহের মাধ্যমেই রাষ্ট্রের মাঝে নাগরীকের বেঁচে থাকার পথ ও পাথেয় সৃষ্টি হোক সেটাই কাম্য। এ না হলে ৩০ লক্ষ মানুষের আত্মবলিদান, মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ, মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের ব্যার্থতার দায়ভার জাতীকেই বহন করতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে পাঁচারকৃত পুঁজি ফেরত আনার দাবীই হোক রাজনৈতিক অঙ্গিকার। জয়বাংলা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার
সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক
প্রধান সম্পাদক, শাহজাদপুর সংবাদ ডটকম
৩ অক্টোবর, ২০২১ খৃষ্টাব্দ।
সম্পর্কিত সংবাদ

জাতীয়
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাঘাবাড়ীতে ৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস
উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। যা

বাংলাদেশ
প্ল্যাকার্ডে ‘শো ইসরায়েল দ্য রেড কার্ড’, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য ও অপরাজেয় বাংলার সামনে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার...

শিক্ষাঙ্গন
শাহজাদপুরে ঝূঁকি নিয়ে শত শত শিশুরা বিদ্যালয়ে যাচ্ছে; দুর্ভোগ চরমে !
শামছুর রহমান শিশির: শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের কাকিলামারী পূর্বপাড়া মহল্লার এক কিলোমিটার সড়কটি প্রায় দেড় যুগ ধর...

বাংলাদেশ
ফেসবুকে মানহানিকর কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে কমিটি
ফেসবুকে মানহানিকর কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমিটিতে থাকবেন—ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, লেজিসলেটিভ ও...

দিনের বিশেষ নিউজ
মহানবী (সাঃ) কে কটুক্তিকারী আ.লীগ নেতার ফাঁসির দাবীতে শাহজাদপুরে বিক্ষোভ- সমাবেশ
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) কে কটুক্তিকারী শাহজাদপুর উপজেলার

ইতিহাস ও ঐতিহ্য
সিরাজগঞ্জের উল্লেখযোগ্য ৮ গন্তব্য
সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলায় বগুড়া-নগরবাড়ি পাকা সড়ক থেকে দুই কিলোমিটার পূর্বে হুরাসাগর নদীর পশ্চিম তীরে হযরত মখদুম...