শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
করোনার ভয়ানক গ্যাঁড়াকলে পড়ে দিশেহারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বহুদিনের নানা অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত ও দিকভ্রান্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নাকাল হয়ে পড়েছে। বেহাল অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য প্রয়োজন আশু সুদূরপ্রসারী সিদ্বান্ত গ্রহন ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন। এখনই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্ক না হলে ভবিষ্যতে জাতিকে চড়া মূল্য গুনতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্যি এখনো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনেক সিদ্বান্তই যথাযথ হচ্ছে না। এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এটা সর্বজনবিদিত যে, আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা বলতে ল্যাবে রোগ নির্ণয় ( টেস্ট ) ও রোগের চিকিৎসাকে বুঝায়। সঠিক রোগ নির্ণয় ( টেস্ট ) ব্যতিরেকে সঠিক ভাবে রোগের চিকিৎসা সম্ভব নয়। সঠিক চিকিৎসার পূর্ব শর্তই হলো সঠিক রোগ নির্ণয় ( টেস্ট ), তাই সহজেই অনুমান করা যায় রোগ নির্ণয় ( টেস্ট ) কতটা জরুরি। এখন প্রশ্ন হলো রোগ নির্ণয় ( টেস্ট ) ও তার চিকিৎসার সাথে জড়িত থাকবেন কে বা কারা। দুনিয়াজুড়ে যে রীতি তা হলো : ১) রোগের চিকিৎসা ও তার ব্যবস্থাপনায় থাকেন চিৎিসক ও নার্স। ২) ল্যাবে রোগ নির্ণয় ( টেস্ট ) এর ক্ষেত্রে তত্ত্ব ও এর ব্যবহারিক বিশেষজ্ঞ থাকেন বায়োকেমিস্ট ও মলিকুলার বায়োলজিস্ট ও অণুজীব বিজ্ঞানের সাথে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ এবং বিরিচালনায় ও নির্দেশনায় থাকেন মেডিক্যাল টেকনেশিয়ান বা মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট- যারা টেস্ট স্যাম্পল ও মেশিন ব্যবস্থাপনা করে থাকেন। উল্লেখ্য, রোগের চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনায় যেমন চিৎিসক ও নার্সের বিকল্প নাই, তদ্রুপ ল্যাবে রোগ নির্ণয় ( টেস্ট ) এর ক্ষেত্রে তত্ত্ব ও এর ব্যবহারিক বিশেষজ্ঞ বায়োকেমিস্ট ও মলিকুলার বায়োলজিস্ট ও অণুজীব বিজ্ঞানের সাথে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের বিকল্প নাই। কিন্তু আমাদের দেশে ল্যাবে রোগ নির্ণয় ( টেস্ট ) এর ক্ষেত্রে অনেকটা অযাচিতভাবে কিছু প্যাথোলজি ও ভাইরোলজি চিকিৎসক তাঁদের ক্ষেত্র রোগের চিকিৎসায় না থেকে রোগ নির্ণয়ে তাঁদের পারঙ্গমতা জাহির করতে চান। টেস্ট ল্যাবে (রোগ নির্ণয়) তাঁদের অযাচিত সংশ্লিষ্টতার ভয়াবহ ফলাফল আমরা দেখেছি/দেখছি করোনার দুঃসময়ে। করোনার দুঃসময়ের প্রথমদিকে তাঁরা স্যাম্পল কালেকশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ল্যাবে ভুল ভাবে স্যাম্পল সংরক্ষন/ প্রসেস ও ডাটা এনালাইসিস করেছেন। ফলস্বরূপ, অনেকের ক্ষেত্রেই ভুল রেজাল্ট দিয়েছিলেন। আমরা জানি না, তাঁরা তাঁদের ভুল বুঝতে পেরেছেন কিনা? আশার কথা, শেষ অবধি Graduate Biochemists Association এর তত্ত্বাবধানে বায়োকেমিস্ট ও মলিকুলার বায়োলজিস্টরা বসে না থেকে দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে করোনা টেস্ট ল্যাবগুলোতে কাজ শুরু করেছেন। স্বেচ্ছাসেবক মলিকুলার বায়োলজিস্টরা বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে চিকিৎসক ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের ট্রেনিং দিয়ে যাচ্ছে, ফলে টেস্টের মান ও গতিই দুই’ই বেড়েছে। বর্তমানে ভুল রেজাল্টের পরিমাণ অনেক কমে এসেছে। বলে রাখি, এত কম সময়ে মানে এক দুই সপ্তাহ ট্রেনিং দিয়ে কাউকেই ল্যাব সেট আপ, ল্যাবের বায়োসেফটি, সঠিক নিয়ম মেনে নমুনা সংগ্রহ, নমুনা সংরক্ষণ এবং পরিবহন পদ্ধতি,মলিকুলার টেস্ট ( আরটি-পিসিআর) সম্পর্কে পুরোটা শেখানো যায় না। অগত্যা হয়তো চলে।   প্রথমতঃ অবহেলিত স্বাস্থ্যখাতে গতি আনতে দক্ষ চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ জরুরী। ইতোমধ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগের ব্যবস্থা করেছে, ধন্যবাদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে। দ্বিতীয়তঃ দুঃখজনক এবং প্রহসনের বিষয় হলো : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বিশেষ বিবেচনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ৩ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়ার কথা চূড়ান্ত করেছে ( ৭ জুন,প্রথম আলো), যা ইতিবাচক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ল্যাবের জন্য মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, মেডিক্যাল টেকনেশিয়ান নিয়োগের কথা বলা হলেও যাঁরা রোগ নির্ণয়ে ( টেস্ট ) তত্ত্ব ও এর ব্যবহারিক বিষেশজ্ঞ হিসেবে দুনিয়াজুড়ে কাজ করেন, সেই বায়োকেমিস্ট ও মলিকুলার বায়োলজিস্ট ও অণুজীব বিজ্ঞানের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষেশজ্ঞদের কোনো কথা নাই ! এখানে প্রশ্ন থেকে যায়, বিষেশজ্ঞদের পরিচালনা ও নির্দেশনা ছাড়া কিভাবে মেডিক্যাল টেকনেশিয়ান বা মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টরা টেস্ট স্যাম্পল, মেশিন ও ল্যাব ব্যবস্থাপনা করবেন ? তবে কি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, মেডিক্যাল টেকনেশিয়ান নিয়োগ দিয়েই গুনগত মানের রোগ নির্ণয় ( টেস্ট ) নিশ্চিত করতে চায় ? এবং তা কি আদৌ সম্ভব ? আমাদের চিকিৎসকরা কি চান না যে, ল্যাবে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় ( টেস্ট ) হোক ?- যা রোগীকে সঠিক চিকিৎসা দেয়ার পূর্ব শর্ত এবং ভুল চিকিৎসা এড়ানোর একমাত্র উপায়। আমার জিজ্ঞাসা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আর কত হটকারী সিদ্ধান্ত নিবে? আর কত অজ্ঞ ও অন্ধ হয়ে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে? রকীব আহমেদ সাবেক সাধারণ সম্পাদকঃ গ্রাজুয়েট বায়োকেমিস্টস এসোসিয়েশন। চেয়ারম্যানঃ বায়োভিস্তা বাংলাদেশ লিমিটেড, বাধঁন ফাউন্ডেশন এবং লিবার্টি ফাউন্ডেশন।

সম্পর্কিত সংবাদ

বিগ ডাটা কি এবং কেন! ( What is Big Data and Why? )

ফটোগ্যালারী

বিগ ডাটা কি এবং কেন! ( What is Big Data and Why? )

একটা সময় ছিলো যখন আমরা আমাদের সবকিছুই কাগজে লিখে রাখতাম। কখন খেতে যাবো, কবে মিটিং, কখন শপিং এ যাবো এসব টু ডু লিস্টগ...

শাহজাদপুরে ১৬ হাজার টাকার জন্য জবাই করে হত্যা! আটক ২

শাহজাদপুর

শাহজাদপুরে ১৬ হাজার টাকার জন্য জবাই করে হত্যা! আটক ২

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে পৌর এলাকার নলুয়া বটতলার মুদি দোকানী রইচ উদ্দিনের নিখোঁজের ১৫ দিন পর প্রতিবেশি শফিকুলের বাড়ির পাশের...

শাহজাদপুরে আবাসিক হোটেল ব্যবসার করুন অবস্থা, প্রনোদনা চায় ব্যবসায়ীরা

অর্থ-বাণিজ্য

শাহজাদপুরে আবাসিক হোটেল ব্যবসার করুন অবস্থা, প্রনোদনা চায় ব্যবসায়ীরা

এ বছরের ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া টানা একমাসের লকডাউনে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের আবাসিক হোটেলগুলো ফাকা পড়ে আছে। স্টাফ বেতন,...

শাহজাদপুর আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ‘মামলা না হওয়ার কারণ’ খুঁজছে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি

শাহজাদপুর

শাহজাদপুর আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ‘মামলা না হওয়ার কারণ’ খুঁজছে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি

আওয়ামী লীগ–সমর্থিত সাবেক সংসদ সদস্য, পৌরসভার মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কি না, না হ...

কোন পেশাই ছোট নয়, সব পেশাকে সম্মান করুন

উপ-সম্পাদকীয়

কোন পেশাই ছোট নয়, সব পেশাকে সম্মান করুন

মানুষের প্রয়োজনে দুনিয়ায় কত শত পেশা যে তৈরি হয়েছে তার ইয়ত্তা নাই । দেখুন না, জুতা সেলাই থেকে জাহাজ তৈরি কিংবা টিকা তৈরি...

শাহজাদপুরে ইসলামী জালসা অনুষ্ঠিত

ধর্ম

শাহজাদপুরে ইসলামী জালসা অনুষ্ঠিত

গতকাল রোববার রাতে উপজেলার শেলাচাপড়ী পশ্চিমপাড় গ্রামের পূর্ব উত্তরপাড়া মহল্লার ‘মাশয়ারিল হারাম’ জামে মসজিদের উন্নতিকল্পে...