আমির হোসাইন স্মিথ, নারায়ণগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হাসেম বলেছেন, এটি বড় একটি দুর্ঘটনা। আমার শেষ জীবনে বড় একটি ধাক্কা। এই ধাক্কা সামাল দেওয়া কঠিন। তবু, আমি সর্বোচ্চ দিয়ে হতাহত পরিবারগুলোর পাশে থাকার চেষ্টা করবো।
তিনি বলেন, যে কারখানায় দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটির ইনস্যুরেন্স করা আছে। ভয়ের কারণ নেই। ইনস্যুরেন্সের টাকায় কারখানা দাঁড় করানো যাবে না ঠিক, তবে পরিশ্রম করে আমাদের দাঁড় করাতে হবে। চেষ্টা করবো ঘুরে দাঁড়াতে, এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দেশ ছেড়ে পালাবো না।
শুক্রবার (০৯ জুলাই) বিকালে বাংলা ট্রিবিউনকে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত সেজান জুস কারখানা থেকে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে অধিকাংশই পোড়া লাশ। চেনার উপায় নেই। লাশগুলো ফায়ার সার্ভিসের চারটি অ্যাম্বুলেন্সে করে মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। এ নিয়ে কারখানায় আগুনে প্রাণ হারালেন ৫২ শ্রমিক।
মোহাম্মদ আবুল হাসেম, ‘দুর্ঘটনায় কারও হাত নেই। আমাদের অনেকগুলো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। কোনওটিতে এর আগে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। যারা মারা গেছে তারা সবাই আমাদের সহকর্মী। আমরা মালিক-শ্রমিক এক পরিবার। শ্রমিক ছাড়া ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চলে না। শ্রমিকরাই প্রতিষ্ঠানের প্রাণ। কাজেই আমরা হতাহত সব শ্রমিকের পরিবারকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেবো। নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেবো। কোনও পরিবারকে বঞ্চিত করবো না। হতাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমি সমবেদনা জানাই। একই সঙ্গে এই কঠিন বিপদে তাদের ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানাই।’
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর আমাদের প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। যাবতীয় চিকিৎসা খরচ প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়ার কথা বলেছি। আগে যেমন এসব শ্রমিকদের পাশে ছিলাম, সামনের দিনগুলোতেও থাকবো। সব ধরনের সহযোগিতা করবো। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সদস্যদের কারখানায় চাকরির ব্যবস্থা করবো। আশা করছি, আমরা এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবো।
মোহাম্মদ আবুল হাসেম আরও বলেন, ‘আমাদের সবগুলো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বৈধ উপায়ে করা। শ্রমিকরা পরিশ্রম করে এসব প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছেন। অনেকেই ভাবছেন, আমি এই কঠিন বিপদে তাদের একা রেখে বিদেশে পালিয়ে যাবো, প্রশ্নই আসে না। এতগুলো প্রতিষ্ঠান ফেলে পালানো যায় না। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে এমন বিপদে পড়লাম। এই বিপদ কাটিয়ে উঠতে সবার সহযোগিতা চাই।’
প্রসঙ্গত, রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। কারখানার ছয় তলা ভবনটিতে তখন প্রায় চারশ’র বেশি কর্মী কাজ করছিলেন। কারখানায় প্লাস্টিক, কাগজসহ মোড়কিকরণের প্রচুর সরঞ্জাম থাকায় আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সব ফ্লোরে।
প্রচুর পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় কয়েকটি ফ্লোরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের ২০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। শুক্রবার (০৯ জুলাই) দুপুরে কারখানার ভেতর থেকে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, আগুনে পুড়ে তিন জনের মৃত্যু হয়। সবমিলে এ পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। কারখানায় আগুনের ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউনসম্পর্কিত সংবাদ
অপরাধ
শাহজাদপুরে অটোবাইক ছিনতাই চক্রের ৬ সদস্য আটক
সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে ছিনতাই হয়ে যাওয়া দুটি অটোবাইক উদ্ধারসহ অটোবাইক ছিনতাই চক্রের ৬ সদস্যকে আটক করেছে থানা পুলিশ। সোমবার...
১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে ভূয়া এজেন্ট উধাও
স্টাফ রিপোর্টারঃ শাহজাদপুর উপজেলাসহ পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার ৩৯ জন হজ্জ যাত্রীর ১ কোটি ৫...