শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঠিক এক বছর আগে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন গিরীশচন্দ্র কর্মকার। মৃত্যুর সময় তিনি অক্সিজেনটাও পাননি। তাঁর চিরবিদায়ের এক বছর কেটে গেলেও বিদায় নেয়নি করোনা। এখনো করোনায় মারা যাচ্ছেন অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে গিরীশচন্দ্রের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রাদ্ধের বদলে হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে পরিবার। 

ছলছল চোখে গিরীশচন্দ্রের ছোট ছেলে কৃষ্ণ কুমার কর্মকার বলেন, 'আজ এক বছর হলো আমরা ছয় ভাইবোন পিতৃহীন হয়েছি। গত বছরের ৫ আগস্ট ঘাতক করোনা আমাদের বাবাকে কেড়ে নিয়েছে। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও করোনা তার ভয়াবহ রূপ দেখিয়েই যাচ্ছে। থামছে না মৃত্যুর মিছিল। হাসপাতালগুলোতেও অক্সিজেন সংকট। তাই বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে লোকজন খাওয়ানোর অনুষ্ঠান বন্ধ রাখলাম। প্রথাগত শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করার পরিবর্তে সেই খরচে করোনা রোগীদের অক্সিজেন দিয়েছি।' 

জানা যায়, টাঙ্গাইলের সখীপুর পৌরসভার অঙ্গশ্রী জুয়েলার্সের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন গিরীশচন্দ্র কর্মকার। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে পরিবারে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান আয়োজনে প্রস্তুতি সভায় চলছিল। এ সময় গিরীশচন্দ্রের বড় ছেলে স্বপন চন্দ্র প্রস্তাব করেন, আমরা কি করোনা রোগীদের জন্য কিছু করতে পারি না? মা বললেন হ্যাঁ, রোগীদের সেবা দিতে পারাই হবে উত্তম কাজ। এতেই তোমাদের বাবার আত্মা বেশি শান্তি পাবে। তোমাদের বাবার মতো অক্সিজেনের অভাবে যেন সখীপুরে আর কাউকে মরতে না হয় সেই ব্যবস্থা কর। পরে পরিবারের সম্মতিতে হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। 

বৃহস্পতিবার সকালে গিরীশচন্দ্রের সহধর্মিণী পারুল বালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনটি অক্সিজেন সিলিন্ডার হস্তান্তর করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চিত্রা শিকারী, ডা. আবদুস সোবহান, কেন্দ্রীয় মন্দির কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র কুমার সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

প্রয়াত গিরীশচন্দ্র কর্মকারের বড় ছেলে স্বপন চন্দ্র কর্মকার বলেন, মানুষ যেন মানবিক দিকটাকে গুরুত্ব দিয়ে সমাজের কথা ভাবে। শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করে লোকজন খাওয়ালে তা পেটে থাকবে না। কিন্তু সমাজের জন্য স্থায়ী কিছু করলে তা দীর্ঘদিন ধরে সেবা দেবে। এ চিন্তা থেকেই বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে করোনা রোগীদের অক্সিজেন দিতে পেরে শান্তি পাচ্ছি। যদি কিছু মানুষ সেবা পায়, তাহলে আমার বাবার পরলোকগত আত্মা শান্তি পাবে বলে আমাদের পরিবারের সকলের বিশ্বাস। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চিত্রা শিকারি বলেন, এ বিষয়ে যতটা না প্রকাশ করতে পারব তার চেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। করোনায় বাবার মৃত্যু বেদনাদায়ক। রোগীদের অসহায়ত্ব মন থেকে উপলব্ধি করতে পারলেই কেবল এমন মানবিক চিন্তা জাগ্রত হয়। এমন চিন্তাধারাকে আমি সব সময় স্বাগত জানাই। 

সম্পর্কিত সংবাদ

উল্লাপাড়ায় ষাঁড়ের শিংয়ের আঘাতে গৃহবধুর মৃত্যু

অপরাধ

উল্লাপাড়ায় ষাঁড়ের শিংয়ের আঘাতে গৃহবধুর মৃত্যু

তানিম তূর্যঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ষাঁড়ের শিংয়ের আঘাতে খুশি বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধুরর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বিক...

শাহজাদপুরে পৌরসভা ও অগ্নিবীণা সংসদে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

দিনের বিশেষ নিউজ

শাহজাদপুরে পৌরসভা ও অগ্নিবীণা সংসদে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : আজ শুক্রবার শাহজাদপুর পৌরসভা ও ঐতিহ্যবাহী অরাজনৈতিক সংগঠন অগ্নিবীণা সংসদের উদ্যোগে ইফত...

উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার

উল্লাপাড়া

উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার

তানিম তূর্যঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর পুকুর থেকে ইয়াম ইসলাম( ৮) নামের এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে...

উপজেলা কাপড়ের হাট আড়ৎ মালিক সমিতির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

অর্থ-বাণিজ্য

উপজেলা কাপড়ের হাট আড়ৎ মালিক সমিতির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

শাহজাদপুর উপজেলা সংবাদদাতাঃ শাহজাদপুর উপজেলার কাপড়ের হাট আড়ৎ মালিক সমিতির নব-নির্বাচিত ক...

নববর্ষ পহেলা বৈশাখ নিয়ে নানা কথা

উপ-সম্পাদকীয়

নববর্ষ পহেলা বৈশাখ নিয়ে নানা কথা

জামায়াত নেতা নিজামীর রায় বুধবার