শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে সারা বিশ্ব টিকার দিকে তাকিয়ে আছে। বিশ্বের কয়েকটি দেশ সে টিকার চূড়ান্ত পরীক্ষার মধ্যেই আছে। রাশিয়া এরইমধ্যে একটি করোনা টিকার অনুমোদনও দিয়েছে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও টিকা পাওয়ার অপেক্ষায় আছে। তবে করোনার টিকা বাজারে এলেও বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে একসঙ্গে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে না। সরকার তা কিনে আনতেও পারবে না। প্রথম ধাপে দেশের পাঁচ শতাংশ মানুষ টিকা পেতে পারে। সে অনুযায়ী ২০২১ সাল শেষ হলেও দেশের সব মানুষ টিকা পাবে না। বাংলানিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী। বিএমএ মহাসচিব বলেন, কোভিড-১৯ প্রতিরোধে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ পর্যন্ত ১৪১টি টিকা (ভ্যাকসিন) তৈরির কাজ হচ্ছে। এর মধ্যে ২৫টি টিকা মানুষের ওপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হচ্ছে। মাত্র ছয়টি টিকা পরীক্ষামূলক প্রয়োগের তৃতীয় ধাপে আছে। সেগুলোর গবেষণা কবে নাগাদ শেষ হবে বলা যাচ্ছে না। টিকা যদি ডিসেম্বরে বের হয়ে যায়, তা হলেও আমাদের দেশে আসতে আসতে জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারি লেগে যাবে। তাও সবাই প্রথম ধাপে পাবে না। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আপনি যদি একটি সুড়ঙ্গের মুখে অবস্থান করেন তাহলে এটার শেষ প্রান্ত কোথায় গিয়ে ঠেকেছে সেটা প্রথমেই বলতে পারবেন না। এই সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তটা সিলেটও হতে পারে, এমনকি ভারতেও হতে পারে। সুড়ঙ্গটা কত লম্বা, সেটা সঠিকভাবে বলা কঠিন। ভ্যাকসিনের ব্যাপারটাও তাই। তারা আগে বলছে, অক্টোবরে এসে যাবে। এখন বলছে ডিসেম্বরে আসবে। কেউ কেউ ভ্যাকসিন ডিসেম্বরেও আনতে পারবেন। তখন আমাদের অবস্থাটা কী হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৪৫ থেকে ৫০ জনের মৃত্যু হচ্ছে। আমরা যখন পিক টাইমে ছিলাম, তিন মাস আগেও মৃত্যুর সংখ্যা আরও কম ছিল। তাহলে বলতে হয় আমাদের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। কখন পিক, কোথায় পিক আমরা কিছুই বুঝলাম না। আমরা কোন জায়গায় আছি সে জায়গাটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিংবা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে বলতে হবে। মিডিয়া এসে সংবাদ সম্মেলন করে ১৬ কোটি মানুষকে জানাতে হবে, সাইন্টিফিকভাবে ডাটা উপস্থাপন করতে হবে এবং সঠিকভাবে বলতে হবে, আমরা কখন পিকে ছিলাম, আমরা এখন কোন অবস্থানে আছি, কিংবা আমরা নিচের দিকে নামছি অথবা আমরা ওপরের দিকে উঠছি। ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, বইপত্রে বৈজ্ঞানিকভাবে সেকেন্ড ওয়েভ বলতে কোনো শব্দ নেই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, আমাদের ঈদের আগে একটা পর্যায়ে ছিল। তখন অনেক মানুষ শহর থেকে গ্রামে গেছেন। ট্রেনে, বাসে চড়েছেন, বাজারে গেছেন, ঈদের কোলাকুলি করেছেন। ঈদের পরে কিংবা পরবর্তী সময়ে এর একটা ইফেক্ট হতে পরে। এটাকে সেকেন্ড ওয়েভ কিংবা থার্ড ওয়েভ বলা যেতে পারে। তিনি বলেন, বিশ্বের যেসব দেশে করোনার সংক্রমণ কমেছে, তারা ধাপে ধাপে সবকিছু খুলে দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের এখানে এখন সবকিছু স্বাভাবিক। আমদের কখন প্রথম ওয়েভ গেল, কখন দ্বিতীয় ওয়েভ আসবে কিছুই বুঝতেছি না। বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ের বিভিন্ন গবেষণা সম্পর্কে মন্তব্য করে বিএমএ মহাসচিব বলেন, এই গবেষণার দিয়ে, এই অল্প সংখ্যক মানুষের ওপর গবেষণা চালিয়ে যদি মনে করে করোনা কমে গেছে, করোনা আটকে ফেলবেন, করোনা চলে গেছে, তাহলে আপনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন। করোনাকে এত অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ৬৪ জেলার ৮ থেকে ১০ লাখ মানুষের তথ্য নিয়ে যদি গবেষণা করা যেত, তাহলে বোঝা যেত বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা। ঢাকা শহরের দুই থেকে চার হাজার মানুষের নমুনা নিয়ে স্টাডি করলে সেটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ঢাকা জেলার জনসংখ্যা যেখানে দুই কোটি, সেখানে অন্তত দুই লাখ মানুষের নমুনা সংগ্রহ করে স্টাডি করলে প্রকৃত তথ্য উঠে আসত। সরকারের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার প্রকোপ কমেছে। এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করতেই তিনি বলেন, ঢাকা, গত তিন মাসের তথ্য উপস্থাপন করে যদি তারা এ কথা বলতেন, তাহলে মানুষ হয়তো তা বিশ্বাস করতো। তিনি বলেন, যেখানে উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে আমাদের মন্ত্রী, আমলারা কীভাবে এসব কথা বলেন। দেশে না আছে গবেষণা, না আছে টেস্টিং ফ্যাসিলিটি, না আছে হসপিটাল ফ্যাসিলিটি, না আছে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার ক্ষমতা। তারা একেক জন একেক রকম কথা বলছেন। একজনের কথার সঙ্গে অন্যজনের কথার কোনো মিল নেই। তারা সবাই রাজনীতিবিদদের মতো কথা বলছেন। জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যরা যদি সংবাদ সম্মেলন করে কিছু বলতেন, তাহলে কিছু গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হতো। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। তথ্য সুত্রঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সম্পর্কিত সংবাদ

বিগ ডাটা কি এবং কেন! ( What is Big Data and Why? )

ফটোগ্যালারী

বিগ ডাটা কি এবং কেন! ( What is Big Data and Why? )

একটা সময় ছিলো যখন আমরা আমাদের সবকিছুই কাগজে লিখে রাখতাম। কখন খেতে যাবো, কবে মিটিং, কখন শপিং এ যাবো এসব টু ডু লিস্টগ...

শাহজাদপুরে ১৬ হাজার টাকার জন্য জবাই করে হত্যা! আটক ২

শাহজাদপুর

শাহজাদপুরে ১৬ হাজার টাকার জন্য জবাই করে হত্যা! আটক ২

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে পৌর এলাকার নলুয়া বটতলার মুদি দোকানী রইচ উদ্দিনের নিখোঁজের ১৫ দিন পর প্রতিবেশি শফিকুলের বাড়ির পাশের...

শাহজাদপুরে আবাসিক হোটেল ব্যবসার করুন অবস্থা, প্রনোদনা চায় ব্যবসায়ীরা

অর্থ-বাণিজ্য

শাহজাদপুরে আবাসিক হোটেল ব্যবসার করুন অবস্থা, প্রনোদনা চায় ব্যবসায়ীরা

এ বছরের ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া টানা একমাসের লকডাউনে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের আবাসিক হোটেলগুলো ফাকা পড়ে আছে। স্টাফ বেতন,...

শাহজাদপুর আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ‘মামলা না হওয়ার কারণ’ খুঁজছে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি

শাহজাদপুর

শাহজাদপুর আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ‘মামলা না হওয়ার কারণ’ খুঁজছে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি

আওয়ামী লীগ–সমর্থিত সাবেক সংসদ সদস্য, পৌরসভার মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কি না, না হ...

কোন পেশাই ছোট নয়, সব পেশাকে সম্মান করুন

উপ-সম্পাদকীয়

কোন পেশাই ছোট নয়, সব পেশাকে সম্মান করুন

মানুষের প্রয়োজনে দুনিয়ায় কত শত পেশা যে তৈরি হয়েছে তার ইয়ত্তা নাই । দেখুন না, জুতা সেলাই থেকে জাহাজ তৈরি কিংবা টিকা তৈরি...

শাহজাদপুরে ইসলামী জালসা অনুষ্ঠিত

ধর্ম

শাহজাদপুরে ইসলামী জালসা অনুষ্ঠিত

গতকাল রোববার রাতে উপজেলার শেলাচাপড়ী পশ্চিমপাড় গ্রামের পূর্ব উত্তরপাড়া মহল্লার ‘মাশয়ারিল হারাম’ জামে মসজিদের উন্নতিকল্পে...