রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Abul Basar Pictureআমাদের দেশের শাসন ব্যবস্থায় বৈশ্যরা যে উল্ল্যেখ যোগ্য স্থান করে নিয়েছে সেটি কারো অজানা নয়। দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি জনস্বার্থের সমার্থক নয়। কথিত ভোট গণতন্ত্রের মাঝে জনগণ শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। এরপরেও এধরনের ব্যবস্থার বাইরে আসার মত রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে না। প্রজন্ম পর প্রজন্ম এক অধোপতিত রাজনৈতিক অন্ধকারাচ্ছন পথে হেটে চলেছে । মুক্তির উপায় খোঁজার অবকাশও নেই। এ ধারাবাহিকতার মাঝে নির্বাচন কমিশন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্রগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী তফশীল ঘেষেণা করেছে। ঘোষণা অনুযায়ী ভোট গ্রহণ হবে আগামী ২৮ এপ্রিল। সিটি করপোরেশনের প্রার্থীদের যোগ্যতা কি হবে ? কি হওয়া উচিৎ এ নিয়ে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের জামানত অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি করাসহ টিআইএন সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে ৫০ হাজার কাউন্সিলার পদে ৩০ হাজার টাকা জামানত করা হয়েছে এমনটাই নানা প্রচার মাধ্যমে জানাগেছে। এ নির্বাচন বিষয়ে গত ১৮ মার্চ বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সিপিবি-বাসদ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সমাবেশে সভাপতির বক্তৃতায় মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, নির্বাচনের আগেই শ্রমজীবি,নিম্নবিত্ত, মেহনতি সাধারণ মানুষকে নির্বচনী প্রক্রিয়ার বাইরে রাখার আয়োজন করা হচ্ছে। নির্বাচনকে ধনিক শ্রেণির টাকার খেলায় পরিণত করার বাকি কাজটুকু সম্পন্ন করার চক্রান্ত চলছে। তিনি প্লেয়িং লেভেল ঠিক রাখতে প্রার্থীদের বার্ষিক আয়ের ১০ শতাংশ জামানত দেয়ার সিন্ধান্ত গ্রহনের দাবিসহ বিনামূল্যে ভোটার তালিকা সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আমাদেরকে স্বামী বিবেকানন্দ এর উক্তির কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি বলেছিলেন- এই দেশকে প্রথম শাসন করেছে ব্রাক্ষণরা,তারপরে ক্ষত্রিয়রা,এরপরে বৈশ্যরা, সবশেষে শাসন করবে সূদ্ররা। সেসময়ে ভারতবর্ষে মনে করতো ব্রহ্মা পৃথিবী এবং মানুষের সৃষ্টিকর্তা। সেজন্য ভারতীয় পুরোহিতদের নাম ব্রাহ্মণ। ব্রাহ্মণরা প্রচার করেছিল যে, ব্রহ্মা নিজ শরীরের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ থেকে মানুষ সৃষ্টি করেছেন। ব্রহ্মার মুখ থেকে সৃজিত হয়েছে ব্রাহ্মণ(সেজন্য তারা দেবতার পক্ষ থেকে কথা বলতে পারে), হাত থেকে সৃজিত হয়েছে ক্ষত্রিয় ( অর্থাৎ যোদ্ধা শ্রেণী), উরু থেকে বৈশ্য (অর্থাৎ বণিক শ্রেণী), আর পদযুগলের ময়লা থেকে শুদ্র (অর্তাৎ ভৃত্য শ্রেণী)। এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে- ব্রাহ্মণদের কথা সত্যি হলে, সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মাই মনুষ্যজাতিকে চতুবর্গে বিভক্ত করে মর্তে পাঠিয়েছেন্ এই বর্ণভেদ প্রথাও বংশানুক্রমিক- ব্রাহ্মণ সন্তান হবে ব্রাহ্মণ, আর শুদ্রের সন্তান হবে সবসময়েই শুদ্র। যে বর্ণ হিসেবে জন্ম গ্রহণ করেছে সে বর্ণে থেকে জীবন অতিবাহিত করাই নিয়তি। সেসময়ে উদ্ভাবিত রাষ্ট্রে কৃষক ও দাসদের পদানত রাখার জন্য রাজারা অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত যোদ্ধা সংগ্রহ করতো। রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে শক্তিশালি করার জন্য সংগৃহীত যোদ্ধাদের নিয়ে তারা পরে সৈন্যবাহিনী গঠন করলো। দাস পরিদর্শকরা উন্নীত হয়ে গেল প্রহরীতে। আর রাজার ভৃত্যদল যারা ফসল ও পশুসম্পদ সংগ্রহ করতো প্রতিবেশী জনগোষ্ঠিগুলো থেকে তাদের আমলা পদে অধিষ্টিত করা হলো । এদের কাজ ছিল কর সংগ্রহ ও বিচার করা । নির্বাচনের মাধ্যমে রাজা ক্রমে ক্রমে হয়ে দাঁড়ালো সম্রাট; তার এই ক্ষমতা ও পদ হয়ে গেল পুরুষানুক্রমিক। এইভাবে খ্রীষ্টপূর্ব ১ম সহস্রাব্দে সম্রাট, সৈন্যদল, প্রহরী ও আমলাবর্গ ইত্যাদি নিয়ে উদ্ভব হলো রাষ্ট্রের। নিজেদের জীবন ও ধনসম্পদ রক্ষা করার জন্য যে রাষ্ট্রের দরকার তা দাসমালিকরা বুঝতে পেরেছিল। তারা বলতো- যদি সম্রাটকে টিকিয়ে রাখা না হয়. তা হলে ধনী ব্যক্তিরা নিহত ও একেবারে উৎখাত হয়ে যাবে। শোষিতের উপরে নিজেদের পূর্ণ আধিপত্য জোরদার করার জন্য একইভাবে তারা ধর্মকেও নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছিল। অতীতের দাসমালিক রাষ্ট্রের উদ্ভব এর বিকাশ এবং বিবর্তন হয়ে বর্তমান প্রেক্ষাপটে নাম পরিবর্তনে বিশ্বব্যাপী আধুনিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রূপান্তরিত হলেও রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন হয়েছে এমনটা বলা যায়না। বিশ্বব্যাপি নতুন নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হলেও রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সংস্কৃতির তেমন পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয়না। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ বিষয়ে নতুন প্রজন্মকে ধারনা ও জ্ঞানদান করা ছারা বিকল্প আছে বলে মনে হয় না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রের আইনী ব্যবস্থায় রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন ছারা ভোট গণতন্ত্রে ফলাফল জনকল্যাণমুখী করা দূরহ ব্যাপার বলেই মনে করছে নাগরিকবৃন্দ। সারা বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতি ধনিক বণিক শ্রেণীর হাতে বন্দী হয়ে পড়েছে এটাও বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধু সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিধিমালা নয় আগামিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধনিক-বনিক শ্রেণীর লোকেরা ছারা সৎ ও সাধারণ মানুষের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহন করা আদৌ সম্ভব হবে কিনা তা ভবিয্যৎ বলে দেবে। প্রধান সম্পাদক

সম্পর্কিত সংবাদ

শাহজাদপুরের সাবেক এমপি কবিতা ও চয়নের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা

রাজনীতি

শাহজাদপুরের সাবেক এমপি কবিতা ও চয়নের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্যসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। ঘটনার দুই বছর পর বৃহস্পতিব...

শাহজাদপুরে ওয়াজ শুনে বাড়ি ফেরার পথে সড়কে প্রাণ গেল শিশু হোসাইনের

শাহজাদপুর

শাহজাদপুরে ওয়াজ শুনে বাড়ি ফেরার পথে সড়কে প্রাণ গেল শিশু হোসাইনের

ওয়াজ শুনে বাড়ি ফেরার পথে মহাসড়ক পাড়ি দেয়ার সময় পাবনা থেকে ঢাকাগামী একটি মাইক্রোবাস চাপায় হোসাইন সরদার নামের এক ৯ বছরের শ...

নগ্ননৃত্য ও দেহ ব্যবসার সাথে জড়িত ১১ নারী ও ৫ ব্যবসায়ী গ্রেফতার

অপরাধ

নগ্ননৃত্য ও দেহ ব্যবসার সাথে জড়িত ১১ নারী ও ৫ ব্যবসায়ী গ্রেফতার

শাহজাদপুরে বিভিন্ন নদী-বিলে নৌকায় পিকনিক ও বিনোদনের...

সরকারি রাস্তা উদ্ধারের দাবিতে শাহজাদপুরে মানববন্ধন

শাহজাদপুর

সরকারি রাস্তা উদ্ধারের দাবিতে শাহজাদপুরে মানববন্ধন

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরের পোরজনা ইউনিয়নের হরিনাথপুর(পাঠার মোর) গ্রামে সরকারি রাস্তা উদ্ধারের দাবিতে এলাকাবাসী ও পোরজনা উচ্চ...

শাহজাদপুর আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ‘মামলা না হওয়ার কারণ’ খুঁজছে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি

শাহজাদপুর

শাহজাদপুর আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ‘মামলা না হওয়ার কারণ’ খুঁজছে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি

আওয়ামী লীগ–সমর্থিত সাবেক সংসদ সদস্য, পৌরসভার মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কি না, না হ...

শাহজাদপুরে আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষ্যে মতবিনিময় করলেন চয়ন ইসলাম

রাজনীতি

শাহজাদপুরে আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষ্যে মতবিনিময় করলেন চয়ন ইসলাম

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ডায়া ও বেড়াকুচাটিয়া গ্রামবাসীর উদ্যেগে ডায়া বাজারে আওয়ামী...