শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
index_55486 স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য এ পর্যন্ত আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ১০ হাজার। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তরা মাসিক ৯ হাজার ৭০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। বর্তমানে এই সুবিধা ভোগ করছেন পাঁচ হাজার ২৭ জন।যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে গত বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ৯ হাজার ৮১৫ জনের আবেদন জমা পড়ে। এই আবেদনপত্রগুলো মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ফাইলবন্দি করে রাখা হয়েছে। এদিকে কল্যাণ ট্রাস্টের কল্যাণ শাখায় যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির আবেদন এখনো অব্যাহত রয়েছে। গত এপ্রিল মাসের পর কমপক্ষে আরো দুই-তিন শ আবেদন জমা পড়েছে। মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশ নিয়ে যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁদের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭২ সালে যারা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন তাঁরা সে সময় থেকেই নিয়মিত সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। এখন জনমনে প্রশ্ন মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশ নেয়া এই বিশাল অংকের যুদ্ধাহত ব্যক্তিরা যারা এখন তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন এতদিন তারা কোথায় ছিলেন?স্বাধীনতার ৪৩ বছরপর হঠাৎ করে তাদের স্মরণ হলো তারা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন!ছিঃ কি লজ্জা। ঘৃনায় মাথা নত হয়ে আসে।আমরা এতটাই লোভী ভাবতে পারি না। জাতী হিসেবে আমাদের এতটা হীন মানষিকতার পরিচয় দিতে হবে বিষয়টি কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। যেভাবে ভূয়া ব্যাক্তিরা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সাজার সুযোগ পায় :- ১। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠিত হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্তি এবং তাঁদের রাষ্ট্রীয় ভাতা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তখন কল্যাণ ট্রাস্টে নিয়োজিত ডাক্তার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আবেদনকারীর পঙ্গুত্বের মাত্রা চিহ্নিত করতেন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে কল্যাণ ট্রাস্টের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভায় অনুমোদন দেওয়া হতো। এ ভাবে সে সময়ে যারা প্রকৃত রণাঙ্গনে যুদ্ধাহত হয়েছিলেন তাঁরা তালিভুক্ত হয়ে সরকারি সুযোগ সুবিধা গ্রহন করেন। ৭২ সালে কল্যাণট্রাষ্ট থেকে যুদ্ধাহত তালিভুক্তদের ৫০/৬০ হিসেবে ভাতা প্রদান শুরু হয়। ২। ১৯৭৫ এর দু:খজনক পট পরিবর্তনের পর দৃশ্যপট পাল্টে যায়। সৈরশাসক জিয়া এরশাদের শাসনামলে ভূয়া এবং বিতর্কিত ব্যক্তি এমনকি রাজাকাররাও মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লেখাতে সক্ষম হয়। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরা এবং কল্যাণট্রাষ্টের অসৎ কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজসে পর্যায়ক্রমে ভুয়ারা মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে থাকেন। ৩। ৯০ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণট্রাষ্টে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সাজার হিড়িক পড়ে যায়।রাজাকার,স্বাধীনতা বিরোধী,পকিস্তান ফেরত সেনাবাহিনীর সদস্যসহ ভুয়াব্যাক্তিরা আবেদন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য আবেদন করে। রাজনৈতিক তদবীরে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধে আহত রাজাকার এবং ভুয়া ব্যক্তিরা নানা অসামাজিক কাজ করতে গিয়ে আহত হয়েছিলেন এমনকি মারামারি করতে গিয়ে আহত হয়েছিলেন এমন ব্যাক্তিরাও মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণট্রাষ্টের অসৎ কর্র্মচারীদের্ যোগসাজসে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হয়ে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কল্যাণট্রাষ্টের ভাতা প্রাপ্তিতে স্বক্ষম হন। কারন সে সময়ে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধে আহত কিনা এ বিষয়টি ক্ষতিয়ে হতো না। তখণ থেকেই ভূয়ারা প্রতিমাসে ২৫০০/-(দুই হাজার পাঁচশত) টাকা করে ভাতা গ্রহণ করেন। ৪। ৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণনয়নে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ সময় দেশব্যাপি প্রত্যেকটি উপজেলা পর্যায়ে যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। এই যাচাই-বাছই কালে যুদ্ধাহত তালিকাভুক্তদের যাচাই-বাছাই আওতার বাইরে রাখা হয়। কল্যাণট্রাষ্টের তালিকাভুক্তও প্রশাসনিক আওতাভুক্ত থাকায় এবং ভাতাভোগী হওয়ায় ভুয়া যুদ্ধাহতরা ট্রাষ্টের কর্র্মকর্তাদের সাথে যোসাজসে এবং কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নেতাদের সহযোগিতায় ভুয়া ব্যক্তিরা মুক্তিবার্তা (লাল বেই) তে তাদের নাম অর্ন্তভুক্তি তরতে সক্ষম হন। কিন্ত তালিকাভুক্তিদের গেজেট আকারে প্রকাশ করার পূর্বেই সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ৫। ২০০১ সালে বিএনপি পুনরায় সরকার গঠন করেন।মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য গঠন করা হয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সে সময়ে সরকার আবারো মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ সময় যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বাড়তে থাকে। সরকার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট তালিকা প্রকাশ করার উগ্যোগ গ্রহন করেন। সে মতে ২০ শে ভাদ্র ১৪১০ বাংলা/ ৪ঠা সেপ্টম্বর ২০০৩ ইং তারিখের সরকারি প্রজ্ঞাপণ অনুয়ায়ী- সোমবার, ডিসেম্বর ২২, ২০০৩ ইং সালে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি গেজেট প্রকাশিত হয়। ঐ গেজেটে মৃত ২ শত ৬৭ জন এবং জীবিত ১ হাজার ২ শত ৪৪ জন ব্যক্তির নাম স্থান পায়। তালিকাতেও ভূয়ারা স্থান করে নেয়। এ সময় যুদ্ধাহতদের পঙ্গুত্ব নির্ধারণে শ্রেণী বিণ্যাসে (এ থেকে ডি শ্রেণীভুক্ত) করা হলেও কোন সেক্টরের কোন সম্মুখ যুদ্ধে আহত কিম্বা নিহত হয়েছিলেন এমন প্রমানপত্র নেয়ার বিষয়ে কোন সঠিক কাগজপত্র যাচাই করা হয়নি।এরপরেও ২৩ মে,২০১০- ৪ঠা জানুয়ারি,২০১১- ১৩ই সেপ্টম্বর,২০১১- ৩রা জুন,২০১২ এবং পরবর্তীতে এভাবে একের পর এক যুদ্ধাহতদের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। এসকল গেজেটে প্রায় সবই ভূয়া যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম স্থান পেয়েছে। ৬। র্দীর্র্ঘ ৩০ বছর পর পঙ্গুত্ব নির্ধারণ করা জটিল বিষয় হলেও ঐ সময়ে যুদ্ধাহতদের পঙ্গুত্ব নির্ধারণের জন্য সিএমএইচ এর ডাক্তারেদের নিয়ে বোর্র্ড গঠন করা হয়। ঐ বোর্ড ২০% এর উর্দ্ধে পঙ্গুত্বদের ভাতা প্রাপ্তির জন্য যোগ্য বলে সিুপারিশ করে। তখন ২০% এর উর্দ্ধে পঙ্গুত্বদের জন্য ৮ হাজার ১ শত টাকা এবং ২০% এর নীচে ৬ শত টাকা হারে ভাতা প্রদান করতে থাকে কল্যাণট্রাষ্ট। এ সময় ২০% এর নীচে পঙ্গুত্বদের ভাতা না তুলে কণ্যাণ ট্রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শক্রমে তারা হাইকোর্টে রীট পিটিশণ দায়ের করে। হাইকোট আবেদনকারীর পক্ষে রায় প্রদান করে। সরকার তখন এ মামলায় উচ্চ আদালতে আপীল দায়ের করেননি। ঐ মামলার রায় অনুসরণ করে কল্যাণট্রাষ্টের কর্মকর্তাদের উৎকোচের বিনিময়ে তারা তাদের ভাতা পুণরায় চালু করতে সক্ষম হন । ঐ মামলার রায় অনুসরণ করে ভূয়া ব্যক্তিরা একের পর এক হাইকোর্টে রিটপিটিশণ দায়ের করে তাদের পক্ষে রায় গ্রহণে সক্ষম হন। এভাবে যুদ্ধাহত ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকা বাড়তে থাকলে সরকার পক্ষের টনক নড়ে। তখন সরকার পক্ষ ঐ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল দায়ের করেন। ঐ মামলা চালু থাকলেও কল্যাণট্রাষ্টের অসৎ কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজসে এখনও ভূয়া ব্যাক্তিদের ভাতা চালু রয়েছে।পূর্বে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্তির জন্য মুক্তিযোদ্ধা প্রমানের জন্য কোন সূনির্দিষ্ট নীতিমালা ছিল না। শুমাত্র পঙ্গুত্ব দেখিয়ে কল্যাণট্রাষ্টে আবেদন করলেই যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সাজা যেত । ৭। বর্তমানে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য কেউ আবেদন করলে তাঁর পঙ্গুত্ব নির্ধারণের জন্য সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের কাছে পাঠানো হয়। আর আবেদনকারী প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কি না তা নির্ধারণের জন্য মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) পাঠানো হয়। জামুকা বর্তমান সরকারের মেয়াদে এসে মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্তির কাজ স্থগিত রেখেছে। উপজেলা পর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে তালিকা চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্তির আবেদনও সেই প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৮। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে বর্তমান মন্ত্রী দায়িত্বে আসার পর পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এখন কেউ পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি চাইলে তাঁর কাছে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের চিকিৎসার কাগজপত্র চাওয়া হচ্ছে। তাই অনেকে আবেদন করলেও শেষ পর্যন্ত পরীক্ষার মুখোমুখি হচ্ছেন অল্পসংখ্যক। ৯। দেশে বর্তমানে মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা সাত হাজার ৮৩৮ জনের পরিবার রাষ্ট্রীয় সম্মানী ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছেন পাঁচ হাজার ২৭ জন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, দুই হাজার ৫০০ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবার, ৩০৩ মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবার, সাত বীরশ্রেষ্ঠের শহীদ পরিবার এবং তারামন বিবি বীরপ্রতীক। চারটি শ্রেণিতে ভাগ করে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। এর মধ্যে ‘এ’ শ্রেণি হচ্ছে যাঁদের পঙ্গুত্ব ৯৬-১০০, ‘বি’ শ্রেণির পঙ্গুত্ব ৬১-৯৫, ‘সি’ শ্রেণির ২০-৬৬ এবং ‘ডি’ শ্রেণির ১-১৯ শতাংশ। মাসিক ভাতা হিসেবে ‘এ’ শ্রেণিভুক্তরা ৩০, ‘বি’ শ্রেণি ২০, ‘সি’ শ্রেণি ১৬ এবং ‘ডি’ শ্রেণি ৯ হাজার ৭০০ টাকা পেয়ে থাকেন। মাসিক ভাতা ছাড়াও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবার রেশনসামগ্রী হিসেবে চাল, আটা, চিনি, ভোজ্য তেল, ডাল পেয়ে থাকেন। সর্বোচ্চ চারজনের পরিবারের জন্য ৮৬ কেজি(৩৫ কজি চাল, ৩০ কেজি আটা,৮ কেজি তেল, ৮ কেজি ডাউল,৫ কেজি চিনি) রেশনসামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিল, দুই বার্নারের একটি গ্যাসের চুলা, জনপ্রতি মাসিক ১২৫ লিটার পানির বিল এবং এক হাজার ৫০০ বর্গফুট হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ করা হয়েছে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেশে চিকিৎসা প্রদানের ব্যাপারেও একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। একজনকে ট্রাস্টের মাধ্যমে সর্বোচ্চ আট লাখ টাকা পর্যন্ত বিদেশে চিকিৎসার জন্য প্রদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এসবের বাইরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল বিশেষ বৃত্তির ব্যবস্থা করেছে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের দুই সন্তানের জন্য প্রতিবছর এক হাজার ৬০০ টাকা শিক্ষা অনুদান প্রদান করে থাকে। অনধিক দুই সন্তানের জন্য কন্যা বিবাহ ভাতাও প্রদান করা হয়ে থাকে। ১০। পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য বিপুল আগ্রহের পেছনে উপরোল্লেখিত সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির আশা কাজ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার উত্তরসূরিদের ব্যাপারে ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করার কারণে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধার সঠিক সংঙ্গা না থাকার কারনে সুযোগ সন্ধানীরা মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সেজে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকারী দেও সুযোগ সুবিধাদি ভোগ করছেন।এ ধরনের নৈতিকতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ জরুরী হয়ে পড়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সংঙ্গা নিয়ে হাইকোর্টের রুল :- অতীতে একেক সরকার একেক সময়ে বিধিমালা, গাইডলাইন দিয়ে একেকভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞায়িত করছে। এবং তাদের পছন্দ মাফিক ব্যক্তিদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে।বর্তমান সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিশেষ কিছু ক্যাটাগরিতে মুক্তিযোদ্ধার সংঙ্গা নির্ধারণ করে যাচাই-বাছাই এর মাধ্যমে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়নের জন্য উদ্যোগ গহণ করেছে। এদিকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন ও প্রকাশের পূর্বে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ সংজ্ঞা নিরূপণ কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। ১৮ মার্চ বুধবার এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করে। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন সচিব ও তালিকা প্রস্তুতকরণ কমিটিকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এর আগে সম্প্রতি জামাল উদ্দিন শিকদারসহ ৬ মুক্তিযোদ্ধা এই রিট আবেদনটি দায়ের করেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রফিকুর রহমান। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ আল আমিন সরকার। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বক্তব্য হলো- কেবলমাত্র একটি সঠিক সংঙ্গা নির্ধারণই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়নের সহায়ক হতে পারে। একমাত্র ভারতীয় তালিকা ছাড়া প্রস্তুতকৃত অন্যান্য তালিকাকে ও গেজেটকে সঠিক ভেবে তালিকা প্রণয়ন কখনই যুক্তিযুক্ত হবেনা বলে মুক্তিযোদ্ধারা মনে করছেন।

সম্পর্কিত সংবাদ

শাহজাদপুরে পৌরসভা ও অগ্নিবীণা সংসদে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

দিনের বিশেষ নিউজ

শাহজাদপুরে পৌরসভা ও অগ্নিবীণা সংসদে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : আজ শুক্রবার শাহজাদপুর পৌরসভা ও ঐতিহ্যবাহী অরাজনৈতিক সংগঠন অগ্নিবীণা সংসদের উদ্যোগে ইফত...

উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার

উল্লাপাড়া

উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার

তানিম তূর্যঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর পুকুর থেকে ইয়াম ইসলাম( ৮) নামের এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে...

উপজেলা কাপড়ের হাট আড়ৎ মালিক সমিতির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

অর্থ-বাণিজ্য

উপজেলা কাপড়ের হাট আড়ৎ মালিক সমিতির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

শাহজাদপুর উপজেলা সংবাদদাতাঃ শাহজাদপুর উপজেলার কাপড়ের হাট আড়ৎ মালিক সমিতির নব-নির্বাচিত ক...

নববর্ষ পহেলা বৈশাখ নিয়ে নানা কথা

উপ-সম্পাদকীয়

নববর্ষ পহেলা বৈশাখ নিয়ে নানা কথা