শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

(৪৩ বছরে কয়েক দফা মুক্তিযোদ্ধা সংঙ্গার রদবদল) “যতবার তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে ততবারই মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেড়েছে”

Abul-Basar-Picture

আবুল বাশার মুক্তিযুদ্ধ যাঁরা করেছেন, তাঁরাই মুক্তিযোদ্ধা। কারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত হবেন, সেটি ১৯৭২ সালে এক সরকারী আদেশে নির্ধারণ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা মানে এমন একজন ব্যক্তি, যিনি মুক্তিযুদ্ধে নিয়োজিত যে কোন সংগঠিত দলের (ফোর্স) সদস্য হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু ১৯৭৯ সালে রাজাকার পুনর্বাসনকারী জিয়াউর রহমানের শাসনামলে একটি যাচাই-বাছাই কমিটির মাধ্যমে নতুন সংজ্ঞায় মুক্তিযোদ্ধা চিহ্নিত করা হয়। এরপর ২০০৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের জারি করা এক পরিপত্রে নয়া সংজ্ঞা করা হয়, এতে কারা মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারী হবেন তার সংজ্ঞা বা চারটি শর্ত দেয়া হয়। এ চারটির যে কোন একটি শর্তে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সুযোগ পান মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারীরা। এরপর থেকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্তির জন্য হিড়িক পরে যায়। চাকুরীজীবি সহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ মিথ্যা তথ্য প্রদানে মোটা অংকের অর্থকরি ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা গেজেটভুক্ত হয়। বাগিয়ে নেয় নানা সুযোগ সুবিধা। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুনর্গঠিত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল একটি সংজ্ঞা নির্ধারণ করে। পরে আবার নতুন করে নতুন সংজ্ঞায় মুক্তিযোদ্ধা চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর এই সংজ্ঞা নির্ধারণ কি কারণে। কার স্বার্থে, কিসের প্রয়োজনে সেসবের জবাব মেলে না। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন, সকল আইন, বিধি বিধানের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন সংজ্ঞায় বলা হয়েছে,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যে সকল ব্যক্তি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তাঁরাই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন।’ সংজ্ঞা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নিয়ে পঁচাত্তর-পরবর্তীকাল হতে নানা রকম জটিলতা তৈরি করা হয়েছে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদধারীর সংখ্যা বেড়েছে। সামরিক জান্তা শাসকরা ক্ষমতা দখল করে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহার করেছেন। নতুন করে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ আবার সংজ্ঞায়িত করার এই উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত সংজ্ঞা ক্ষুণœ হবে নাতো? সেটা যাতে না হয়, যাতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা সঠিক মূল্যায়ন পান সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা এবং বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়সূত্র জানাযায়, খসড়া প্রস্তাবে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় মুক্তিযোদ্ধার উপাধি বা সনদ পাওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে আট ধরনের যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, যেসব ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ট্রেনিং ক্যাম্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ দিতে যেসব শিল্পী, সাহিত্যিক, খেলোয়াড়, চিকিৎসক, লেখক, সাংবাদিক বিদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অবদান রেখেছেন। যারা মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে ভূমিকা রাখা ছাড়াও বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে যারা বিভিন্ন মুক্তিবাহিনীর সদস্য ছিলেন। যেমন- কাদেরিয়া বাহিনী, হেমায়েত বাহিনী, আনসার বাহিনী প্রভৃতি। আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে ভারতের ত্রাণশিবিরে অবস্থান করলেও পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন এমন ব্যক্তি। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পুলিশ, আনসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অথবা মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব গণপরিষদ সদস্য। সবশেষে বিশ্ব জনমত গঠনে সক্রিয় বাংলাদেশী নাগরিকরা। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যখনই নতুন তালিকা করা হয়েছে, তখনই দেখা গেছে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার তালিকার মধ্যে রয়েছে- মুক্তিবার্তা লালবইয়ে এক লাখ ৫৪ হাজার, বিএনপি-জামায়াত জোটের আমলে ৪৪ হাজার এবং মহাজোট সরকারের সময় ১১ হাজার। এর মধ্যে নানা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিন হাজার নামের গেজেট ও সনদ বাতিল করা হয়েছে। আর প্রায় ৬০ হাজারের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। যাচাই-বাছাই কমিটি মূলত জোট সরকারের আমলের ৪৪ হাজার, অভিযুক্ত ৬০ হাজার এবং নতুনভাবে আবেদনকৃত এক লাখ ৩৩ হাজার আবেদনের ওপর কাজ করবে যাচাই-বাছাই কমিটি। লেখকঃ- মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক,কলামিষ্ট ও গবেষক প্রধান সম্পাদক শাহজাদপুর সংবাদ ডটকম মোবাইলনং- ০১৮৫৫-৬৯৪৯৪৬ তারিখ- ১২ মার্চ, ২০১৫ ইংরেজি।

সম্পর্কিত সংবাদ

উল্লাপাড়ায় ষাঁড়ের শিংয়ের আঘাতে গৃহবধুর মৃত্যু

অপরাধ

উল্লাপাড়ায় ষাঁড়ের শিংয়ের আঘাতে গৃহবধুর মৃত্যু

তানিম তূর্যঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ষাঁড়ের শিংয়ের আঘাতে খুশি বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধুরর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বিক...

কাল থেকে শুরু এইচএসসি পরীক্ষা, অংশ নিচ্ছে ১২ লাখ শিক্ষার্থী

জাতীয়

কাল থেকে শুরু এইচএসসি পরীক্ষা, অংশ নিচ্ছে ১২ লাখ শিক্ষার্থী

আগামীকাল রোববার (৬ নভেম্বর) থেকে সারা দেশে একযোগে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।

উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার

উল্লাপাড়া

উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার

তানিম তূর্যঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর পুকুর থেকে ইয়াম ইসলাম( ৮) নামের এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে...

শাহজাদপুরে পৌরসভা ও অগ্নিবীণা সংসদে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

দিনের বিশেষ নিউজ

শাহজাদপুরে পৌরসভা ও অগ্নিবীণা সংসদে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : আজ শুক্রবার শাহজাদপুর পৌরসভা ও ঐতিহ্যবাহী অরাজনৈতিক সংগঠন অগ্নিবীণা সংসদের উদ্যোগে ইফত...

উল্লাপাড়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা

খেলাধুলা

উল্লাপাড়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা

তানিম তূর্যঃ সোমবার উল্লাপাড়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা-২০১৭ স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হ...

দুধ নিয়ে বিপাকে শাহজাদপুরসহ বাঘাবাড়ি মিল্কশেড এরিয়ার খামারিরা

অর্থ-বাণিজ্য

দুধ নিয়ে বিপাকে শাহজাদপুরসহ বাঘাবাড়ি মিল্কশেড এরিয়ার খামারিরা

নিজস্ব প্রতিনিধি : মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষ খামারী পর্যায়ে দুধের দাম কমিয়ে এবং কোঠা পদ্ধতি চালু করে দুধ সংগ্রহ করছে। খামারী...