শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
-আবুল বাশার-প্রধান সম্পাদক সময়ের কথা- এক সময় গণমাধ্যম বলতে শুধু খবরের কাগজকে বোঝাত। উনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে এসে গণমাধ্যম হিসেবে খবরের কাগজের একচেটিয়া প্রভাব ক্ষুণ্ন হতে থাকে। তবে খবরের কাগজের পাশাপাশি বর্তমানে অন্যান্য গণমাধ্যমের আবির্ভাব ঘটলেও এখনও খবরের কাগজই হল প্রধান গণমাধ্যম। প্রতিযোগিতার যুগে বাংলাদেশে গণমাধ্যম হিসেবে ভোরের পাতার যুগপদার্পণের এই দিনটিকে ছোট করে ভাববার বা দেখবার অবকাশ নেই। অসাম্প্রদায়িকতা, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের চেতনাকে ধারণ করে মুক্ত মানুষের চিন্তা ও জিজ্ঞাসার জানালায় নতুন আকাশ মেলে ধরার প্রত্যাশায় “আনন্দ ধ্বনি জাগাও গগনে” প্রতিপাদ্যে যুগপদার্পণের এ ক্ষণটিকে স্মরণীয় ও বরনীয় করে রাখতে ভোরের পাতার পাঠক ও শুভাকংখীদের উদ্যোগে আজ ১৮ মে/২০১৬ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা পরিষদ হলরূমে বর্ণ্যাঢ্য কেককাটা অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে। এর প্রধান সমন্বয়কারী ভোরের পাতার প্রতিনিধি মামুন বিশ্বাসকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যুগপদার্পণে ‘শাহজাদপুর সংবাদ ডটকমের’ পক্ষ থেকে ভোরের পাতা এবং পত্রিকার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি রইলো আমাদের আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।   সংবাদপত্রগুলো কি পাঠকের প্রত্যাশা মেটাতে পারছে ? সংবাদপত্রের বিকাশমান ধারার এই স্বর্ন যুগে এবং ডিজিট্যাল পদ্ধতির সহযিকরণের নানা সহায়ক আবিস্কারের পরেও সংবাদপত্রগুলো কি পাঠকের প্রত্যাশা মেটাতে পারছে ? এ প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রসঙ্গিক ভাবনা থেকেই অতীতের কিছু কথা লেখার চেষ্টা মাত্র। বিষয়টি পাঠকেরা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি দিয়ে বিবেচনা করলে খুশী হবো। কিশোর বয়ষ থেকেই সংবাদপত্র পাঠে অভ্যস্ত্ ছিলাম। পাকিস্থান পর্বে নানা পত্রপত্রিকা পাঠের কারনেই লেখা-লেখিতেও উৎসাহ উদ্দিপনা ছিল।পাকিস্তানের শাষকগোষ্ঠির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কন্ঠস্বর হিসেবেই সে সময়ে লেখালেখিতে অংশগ্রহন ছিল অনেকটা নিজ প্রয়োজনের তাগিদেই। এরপর জাতীয় ও সামাজিক দায়বদ্ধতার কারনে স্বচেতন ভাবেই ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। দেশ স্বাধীন হয়। আমরা আপাতত: শত্রুমুক্ত হই কিন্তু শোষণ চিরাচরিত নিয়মের ধারাবাহিকতায় আমাদেরকে ঘিড়েই চলমান।আমি স্বাধীন দেশে সংবাদপত্রের পাঠক হতে চেয়েছিলাম, লেখক কিম্বা সংবাদকর্মী হতে চাইনি। মুক্তিযুদ্ধ শেষে অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরত যেতে চেয়েছিলাম।কালের প্রেক্ষাপটে সেটি হয়নি।অন্যায়, অনিয়ম, অসামঞ্জস্য, শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে অস্ত্রহাতে যুদ্ধকরে মুক্তি চেয়েছিলাম, স্বাধীনতা চেয়েছিলাম, স্বাধীনদেশ ও স্বতন্ত্র পতাকার জন্য লড়াইতে অংশনিয়ে আত্নহুতি দিতে গিয়েছিলাম। স্বাধীন দেশের মানচিত্র ও স্বতন্ত্র পতাকা মিললো।বাকিটা কেমন যেন এলোমেলো, প্রশ্নাধীন ? জনতার সত্যিকারের আকাংখার প্রতিফলন কি ঘটেছে ? প্রশ্নের উত্তর মেলেনি ? জেনেছিলাম অসির চেয়ে মসি বড়। অবশেষে জনতার প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেয়া বা জানানোর সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই আবার মসি হাতে নিয়েছি। মৃত্যুর আগমুহুর্ত পর্যন্ত সেটি হাতে থাকবে। কিন্তু কতটুকু করতে পেরেছি,পারছি কিম্বা পারবো এর উত্তর মেলা দায়।কারন আমরা পাঠকের প্রত্যাশা মেটানোর মত কিছু করতে পারছি না।নানা সীমাব্দ্ধতার ঘেরাটোপে আমাদের অবস্থান। স্বচ্ছতাও নেই।   পত্রিকা জগতের কিছু বিচিত্র অভিজ্ঞতা- নানা পত্রপত্রিকার সাথে লেখালেখি করতে গিয়ে কিছু বিচিত্র অভিজ্ঞতার সন্মুখীন হয়েছি এবং হচ্ছি এর কিছু অংশ তুলে ধরার চেষ্টা করছি।বাংলা বা ইংরেজি যে পত্রিকাই হোক না কেন, প্রতিটিরই কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য, নিয়ম ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে যেগুলোর দ্বারা পত্রিকাটি নিয়ন্ত্রিত হয়। বিশেষ কিছু রীতিকে অনুসরণ করে একটি পত্রিকা পরিচালিত হয়। পত্রিকা প্রকাশ এক ধরনের কঠিন ও জটিল শিল্প। এর গুরুত্ব অনেক। পত্রিকা পড়া এক অপরিসীম আনন্দ। বেশকিছু জটিল স্তর পার হয়ে একটি পত্রিকা মুদ্রিত হয় এবং তা সকালে যখন পাঠকের কাছে পৌঁছে, তখন পাঠক যদি তার চাহিদা অনুযায়ী বিষয়গুলো দেখতে পান, পড়তে পারেন এবং মোটামুটি তার চাহিদা মেটাতে পারেন তবেই এই শৈল্পিক স্তরগুলো পার হয়ে আসাটা সার্থক হয়। আর এই চাহিদা মেটানোর ওপরই নির্ভর করে একটি পত্রিকার সাফল্য, বিস্তৃতি ও স্থায়িত্ব। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আর্থ সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে পত্রিকাগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগনের আকাংখার প্রতিফলন জনিত সংবাদ কিম্বা অন্যান্য লেখার প্রকাশনার দায়িত্ব পালন করছেন না কিম্বা এড়িয়ে চলছেন এমনটাই মনে হয়। মিডিয়ার মালিকগনও গোষ্ঠিতন্ত্রের বাইরে বানিজ্যিক সুবিধাপ্রাপ্তিকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন।জনস্বচেতনতার দায়দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছেন। সবসময় ক্ষমতাসীনদের স্বার্থের প্রাধান্য দিচ্ছেন। জনগণের কথা এড়িয়ে চলার নীতি অবলম্বন করছেন। সত্য প্রকাশের নীতিবোধটা হাড়িয়ে গেছে বলেই মনে হচ্ছে। বিচিত্র আমাদের দেশের মিডিয়াগুলো- স্বাধীন দেশে স্বাধীনতা ও  মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের পত্রপত্রিকা আছে। মিডিয়া জগতের একটি বৃহৎ অংশে তাদের অবস্থান। তারা দেশের জনগণকে ধর্মের সুরসুরি দিয়ে সর্বদা উত্তেজিত করছে।দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির জন্য নানা প্রচার প্রপাকান্ডা চালাচ্ছে তাদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকায়।আমরা নির্বিকার। কোন স্বার্থে এ ধরনের ছার দেয়া হচ্ছে জানিনা। একটি পত্রিকার অনেক ধরনের পাঠক থাকে। কেউ কেউ দেশে ঘটে যাওয়া অতি সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রকৃত সত্য জানার জন্য মূলত একটি পত্রিকা পড়েন। ওই পত্রিকাটিই পাশের দেশ কিংবা বিদেশে কী ঘটছে তা জানার জন্য পড়েন অন্য কিছু পাঠক। কারও চোখ থাকে শুধু খেলার পাতায়- দেশী-বিদেশী বিভিন্ন খেলাধুলার খবর ও বিশ্লেষণের দিকে। আবার কেউ পত্রিকা পড়েন তার সম্পাদকীয় ভালো লাগার কারণে। কেউ পড়েন তাদের পছন্দের কোনো লেখকের লেখা প্রকাশ পেলে। আবার কেউ তাদের পেশা সংক্রান্ত কোনো ট্রপিক ওই পত্রিকায় প্রায় নিয়মিত ছাপা হয় বলে সে ধরনের কিছু পাওয়ার আশায় পত্রিকাটি কেনেন ও পড়েন। আবার অনেকে পত্রিকাটি কেনেন শুধু বাণিজ্যিক কারণে অর্থাৎ বিজ্ঞাপন দেখার জন্য। আমাদের দেশের পত্রিকাগুলো এ বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা, স্টাডি, বিশ্লেষণ করে কি-না এবং পত্রিকায় এর প্রতিফলন ঘটায় কি-না, জানা নেই। তবে হাতেগোনা দু-একটি পত্রিকা হয়তো এসব বিষয়ে চিন্তা করে থাকে, বাকিদের ক্ষেত্রে এ ধরনের কিছু ঘটে না বলেই মনে হয়। পত্রিকা (বাংলা ও ইংরেজি) পড়ার অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, বিষয়বস্তুর চেয়ে লেখকদের ফেইস ভ্যালুই এখানে মুখ্য। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা পাঠকের জানা দরকার, কোনো কোনো পত্রিকায় সে বিষয়ে কোনো লেখা দেখা যায় না। আবার এমন একটি বিষয়ে লেখা, যা নিয়ে মানুষের খুব একটা আগ্রহ নেই, ব্যক্তির ফেইস ভ্যালু বিবেচনায় সেটা প্রকাশিত হয়। পত্রিকা কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে হয়তো চিন্তা করে না। আসলে ব্যাপক সমীক্ষা ও গবেষণা না হওয়ায় পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কাছে অজানা থেকে যাচ্ছে কোন ধরনের পাঠকের কী ধরনের লেখা পছন্দ। জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোর এডিটরিয়াল বোর্ড আছে। বোর্ডের অধিকাংশ সদস্য কোনো লেখা প্রকাশের পক্ষে মত দিলে ওই লেখাটি আলোর মুখ দেখে। এটি একটি ভালো নিয়ম বলে মনে হয়। আবার কোনো কোনো পত্রিকা শুধু কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তির লেখা প্রকাশ করে, তা সে যে ধরনের লেখাই হোক না কেন। সেসব পত্রিকায় সবার প্রবেশাধিকার নেই। পত্রিকার যে এত জটিল রসায়ন ও সমীকরণ থাকে, তা অনেক পাঠকই জানেন না। অনেকে জানতে চান, অমুক পত্রিকায় আর আপনার লেখা দেখি না কেন? তাদের বলি, পত্রিকায় লেখা প্রকাশ হওয়া বা না হওয়া তো আমার ওপর নির্ভর করে না। পত্রিকায় স্পেস থাকতে হবে, লেখাটি পত্রিকা কর্তৃপক্ষের পছন্দ হতে হবে, তবেই না তা প্রকাশ পাবে। তবে আমি বলি- অধিক সত্য হলে, জনগণের কথা হলে, জনস্বার্থে হলে, প্রশাসন ও সরকারে বিপক্ষে হলে, অনেক পত্রিকায়ই লেখা ছাপতে বিরত থাকেন। পাশাপাশি এটাও বলতে হয়, অনেক পত্রিকার সম্পাদক প্রকাশক সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে শত শত মামলাও দায়ের রয়েছে। সেকারনে আমাদেরকে বলতেই হবে মিডিয়ার বিষয়ে আমাদের কোন পক্ষেরই স্বচ্ছতা নেই।   প্রতিটি গণমাধ্যমের, তা কাগুজে বা ইলেকট্রনিক যাই হোক না কেন, নিজস্ব নীতিমালা থাকে এবং এ নীতিমালা অবশ্যই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও প্রবন্ধ প্রকাশের জন্য। এর পাশাপাশি নীতিমালা সত্য, গণমুখী ও ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশে সহায়ক হওয়া উচিত। সম্প্রতি দেখা গেছে, সরকারের একান্ত অনুগত দু-একটি কাগুজে, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যম আমাদের দেশের একটি প্রধান দলের নেতার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী একটি বৃহৎ দেশের প্রধান দলের সভাপতির টেলিফোনে কথোপকথন হয়েছে কী হয় হয়নি, তা নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশে সচেষ্ট ছিল। এসব ক্ষেত্রে মালিকানার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ইচ্ছার কাছে সংবাদকর্মীদের ইচ্ছা পরাভূত বিধায় বাস্তব সত্য জানা থাকা সত্ত্বেও তারা মালিকের ইচ্ছার বাইরে যেতে পারেননি। আর এ কারণেই দেখা গেছে, আমাদের দেশের প্রখ্যাত একজন লেখক, যিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্য প্রবাসী, সম্প্রতি তিনি ঢাকায় অবস্থানকালীন কোনো এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেছেন, আমাদের দেশে বর্তমানে সম্পাদক নেই। আর সম্পাদক হিসেবে যারা আছেন তারা হলেন কর্পোরেটদের ম্যানেজার। সেদিন সভাস্থলে উপস্থিত তাৎক্ষণিক কেউ তার বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেননি এবং অদ্যাবধিও কেউ তার বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে কোনো সংবাদ বা নিবন্ধ প্রকাশ করেননি। তাই তার বক্তব্য বস্তুনিষ্ঠ নয় বা বাস্তবতা বিবর্জিত এমন ধারণা পোষণের অবকাশ নেই। আমাদের দেশ ব্রিটিশ ও পাকিস্তানের শাসনাধীন থাকাবস্থায় সাংবাদিকদের মালিকানাধীন খবরের কাগজ সরকারি বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বারবার চেষ্টা চালানো সত্ত্বেও খবরের কাগজের মালিকরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে পিছপা হননি। সেদিনও তাদের সামনে জেল-জুলুমের ভয় ছিল। কিন্তু আত্মমর্যাদায় বলিয়ান সেসব অকুতোভয় সম্পাদক ও সাংবাদিক তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধের প্রতি অবিচল থেকে নিজস্ব আদর্শ ও লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হননি। আজ অনেকের মধ্যে অতীতের সেই আত্মত্যাগ, সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও আদর্শ অনুপস্থিত।   গণতন্ত্র স্বাধীন সংবাদপত্রের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য- যেখানে স্বাধীন ও শক্তিশালী সংবাদপত্র রয়েছে, সেখানে মানুষ তার পছন্দমতো একটি সরকার পদ্ধতি বেছে নিতে পারে। স্বাধীন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদপত্রহীন গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ করতে পারে না।গণতন্ত্রহীন সমাজেই সংবাদপত্রের শুরু। সেই সমাজে সংবাদপত্রের দায়িত্ব ছিল সমাজকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত করা। মানুষের গণতান্ত্রিক আশা-আকাংক্ষাকে তুলে ধরা, গণতান্ত্রিক চেতনাকে শাণিত করা। তারপর এলো গণতন্ত্রের যুগ। একটি ভালো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংবাদপত্র তার স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করে। সমাজ ও রাষ্ট্রের বিচিত্র কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করে। কিন্তু যেখানে গণতন্ত্র নেই অথবা থাকলেও আছে নামেমাত্র কিংবা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিপর্যস্ত, সেখানে সংবাদপত্রের ভূমিকা খুব বড়। যে স্বাধীন দেশে সংবাদমাধ্যম স্বাধীন নয়, সে দেশের মানুষ স্বাধীন নয়। পৃথিবীর বহু স্বাধীন দেশের মানুষেরই এখন মুখে কাপড় বাঁধা এবং হাতে-পায়ে শেকল। কারণ তারা তাদের মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে পারে না। কর্তৃত্ববাদী সরকার সংবাদপত্রকে স্বাধীনতা দিতে নারাজ। যদিও বহু কর্তৃত্ববাদী সরকার জনগণের অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা ও প্রয়োজন সম্পর্কে সচেতন। কিন্তু মানুষ শুধু প্রয়োজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার প্রাণী নয়। সে তার ভাত-কাপড়-বাসস্থান-চিকিৎসার বাইরেও আরও অনেক কিছু নিয়ে ভাবে। তার সেই স্বপ্নগুলোকে রাষ্ট্র মনে করতে পারে আপাতত অপ্রয়োজনীয়। কিন্তু অপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ভাবার এবং তার সেই ভাবনা প্রকাশের অধিকার হরণ করার ক্ষমতা রাষ্ট্রের থাকা উচিত নয়। মানুষের স্বপ্নগুলোকে তুলে ধরার অর্থাৎ প্রকাশ করার অন্যতম প্রধান আধার বা পাত্র হল সংবাদপত্র। আধুনিক সংবাদপত্র শুধু সংবাদ প্রকাশের পত্র নয়। রাষ্ট্রের বাস্তবতা এবং জনগণের স্বপ্ন এই দুটি বিষয়ই তুলে ধরার কঠিন দায়িত্ব বর্তেছে সংবাদপত্রের ওপর। উদার গণতন্ত্র ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদপত্র যে দেশে আছে, সে দেশের মানুষ বিশেষ ভাগ্যবান। এমনকি মন্দ গণতন্ত্র যেখানে আছে, সেখানেও যদি স্বাধীন সংবাদপত্র থাকে তা মন্দের ভালো। ভালো এজন্য যে, জনগণ তাদের মতামতটা প্রকাশ করতে পারে। জনমতের চাপে অনেক সময় সরকার জনস্বার্থে কিছু কাজ করতে বাধ্য হয়। সামরিক বা অসামরিক স্বৈরশাসনের মধ্যে সংবাদপত্রের দায়িত্ব যেমন বেশি, ঝুঁকিও বেশি। জনস্বার্থে লেখালেখি করে যে কাগজ যত বেশি ঝুঁকি নেয়, সে কাগজের মূল্য তত বেশি। তবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিপদ থাকলে কোনো রকমে যোগ-বিয়োগ করে অস্তিত্ব রক্ষা করায় দোষ নেই। সংবাদপত্র একটি পণ্য। তা প্রকাশ করতে পুঁজির প্রয়োজন। তাতে লাভ-লোকসানের প্রশ্ন রয়েছে। ভালো লাগলে মানুষ তা টাকা দিয়ে কেনে। ভালো না লাগলে কিনবে না। প্রকাশককে লোকসান দিতে হবে। একালে সংবাদপত্র অন্যান্য শিল্পের মতো একটি শিল্পও বটে। কোনো শিল্পের মালিক লোকসান দেয়ার জন্য পুঁজি বিনিয়োগ করেন না। সংবাদপত্র শিল্পের সঙ্গে অন্য পণ্যের শিল্পের পার্থক্য এখানে যে, সেসব ক্ষেত্রে মালিকের সামাজিক দায়িত্ব পালনের প্রশ্ন আসে না। মানসম্মত পণ্য বাজারে ছেড়ে দিয়েই মালিকের দায়িত্ব শেষ। কিন্তু শুধু মানসম্মত অতি সুন্দর একটি পত্রিকা বাজারে ছেড়ে দিলেই সম্পাদক-প্রকাশকের দায়িত্ব শেষ হয় না। পাঠক বিচার করে দেখবে ওই কাগজ জনগণ ও দেশের স্বার্থ কতটা রক্ষা করছে। জনগণ ও দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে গেলে কায়েমি স্বার্থের বিরাগভাজন হতে হয়। কখনও দেশ ও জনগণের শত্রুদের সঙ্গে লড়াই করতে হয়। বিপদের ঝুঁকি নিতে হয়। ঝুঁকি সামাল দিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন কঠিন বৈকি। এখন শুধু সরকার সংবাদপত্রের জন্য বড় বিপদ নয়। সরকার ও সংবাদপত্র সহ-অবস্থান করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কায়েমি স্বার্থ ও সমাজবিরোধীরাই বর্তমানে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদপত্রের জন্য বড় বিপদ। সৎ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করতে গিয়ে এখন দেশে দেশে সাংবাদিকদের প্রাণ পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে কম সাংবাদিক প্রাণ দেননি। জেলজুলুম তো আছেই। আদালত অবমাননা ও মানহানির মামলার হয়রানির শেষ নেই। সরকারের চেয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীই সাংবাদিকদের সঙ্গে বিরক্তিকর আচরণ করেবেশি।স্বাধীনসংবাদপত্রকেও রাষ্ট্রের সঙ্গে, সরকারের সঙ্গে অথবা অন্য কোনো ক্ষমতাবান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অল্প পরিমাণে হলেও আপস করতে হয়। শুধু সরকারের সঙ্গে নয়, ধর্মীয় গোষ্ঠীর সঙ্গেও আপস করতে হয়। কর্পোরেট পুঁজির সঙ্গে ব্যবসার স্বার্থে আপস করতে হয়। সমাজের এলিটদের সঙ্গে একধরনের আপস না করে অস্তিত্ব রক্ষা করা কঠিন। আপস শুধু সংবাদপত্রকে নয়, অন্যান্য প্রচারমাধ্যমকেও করতে হয়। আপস না করলে প্রচারমাধ্যম টিকে থাকতে পারে না। টিকেই যদি না থাকে তাহলে ভূমিকা রাখবে কীভাবে? যে সংবাদপত্র ও প্রচারমাধ্যম যত বড় ও শক্তিশালী- তাকে সরকার ও কর্পোরেট পুঁজির সঙ্গে তত সাবধানি সম্পর্ক বজায় রাখতে হয়।   সময়ের প্রেক্ষাপট- বর্তমানে গণমাধ্যম চার ভাগে বিভক্ত- সংবাদপত্র, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, রেডিও ও অনলাইন মিডিয়া। তাছাড়া অনেক সংবাদকর্মী বর্তমানে ইউটিউবের সাহায্যে টেলিভিশনের মতো অনুষ্ঠান প্রচার করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করছেন। অধুনা সামাজিক গণমাধ্যম হিসেবে ফেসবুক ও টুইটার খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গত কয়েক মাসে অনলাইন পত্রিকা বিষয়ে সরকারের প্রথম সমালোচনার বিষয় ছিল এগুলোর সংখ্যা নিয়ে, দ্বিতীয় সমালোচনা এ ধরনের পত্রিকার অপসাংবাদিকতা নিয়ে। কিন্তু সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগের কারণ দেখি না। গত ২৫ নভেম্বর জাতীয় সংসদে মাননীয় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দেশে দৈনিক, সাপ্তাহিকসহ বিভিন্ন পত্রিকার সংখ্যা ২ হাজার ৮১০টি। এ ছাড়া দেশে টেলিভিশন, বেতার, এফএম রেডিও ও কমিউনিটি রেডিওর সংখ্যা প্রায় ১৫০। ১৬ কোটি মানুষের দেশে এবং যে দেশের অর্ধেক মানুষ শিক্ষিত, সেখানে এতো গণমাধ্যমের প্রয়োজন আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ও বিতর্ক উঠেছে জোরেশোরে।  রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে একই ঠিকানায় একাধিক পত্রিকার কার্য্যালয় যেমন আছে, তেমনি একই ছাপাখানায় অনেকগুলো পত্রিকাও ছাপা হচ্ছে। দেয়ালপত্রিকা নামে পরিচিত এসব ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ পত্রিকা যদি টিকে থাকতে ও সরকারের সুবিধা পেতে পারে, তাহলে অনলাইন পত্রিকাগুলোর সংখ্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ দেখি না। মন্ত্রী জাতীয় সংসদে আরো বলেছেন,সংসদে প্রচার সংখ্যার ভিত্তিতে মিডিয়াভুক্ত দেশের ৫২৮ দৈনিক পত্রিকার তালিকা প্রদান করেছেন। সংসদে দেয়া মন্ত্রীর তালিকানুযায়ী ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৩শ’ প্রচার সংখ্যা নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রচার সংখ্যার শীর্ষে রয়েছে। ৫ লাখ ১ হাজার ৮শ’ প্রচার সংখ্যায় দ্বিতীয় প্রথম আলো, ২ লাখ ৫০ হাজার ৮২০ প্রচার সংখ্যা নিয়ে তৃতীয় কালেরকণ্ঠ এবং ২ লাখ ২৩ হাজার ১০ প্রচার সংখ্যা নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে দৈনিক জনকণ্ঠ। এছাড়া প্রচার সংখ্যায় আমাদের সময় পঞ্চম, দৈনিক যুগান্তর ষষ্ঠ, দৈনিক ইত্তেফাক সপ্তম, দৈনিক সমকাল অষ্টম, দৈনিক ভোরের কাগজ নবম স্থানে রয়েছে। ডিজিট্যাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে পত্রপত্রিকার ভূমিকা- ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বরের পর থেকেই আমাদের দেশটিতে ডিজিটাল রূপান্তরের বিষয়টি জাতীয়ভাবে অনুভব হতে থাকে। এরপর ২০১৬ সাল অবধি সাত বছরের সরকার পরিচালনায় আমাদের সরকার ও জীবনধারা ব্যাপকভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তরিত হয়েছে। এক্ষত্রে দেশের পত্র-পত্রিকাগুলোও পিছিয়ে নেই। তারাও প্রিন্টিং এর পাশাপাশি অনলাই ভার্সণপ্রেকাশ করছে। এর ফলে পাঠকের কাছে দ্রুত পৌঁছে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদগুলো। ডিজিট্যাল প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটায় পাঠকের সুবিধা হয়েছে। একই সঙ্গে এটিও অনুভব করা গেছে, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল অপরাধ করার প্রবণতাও বেড়েছে। বর্তমান সভ্যতাকে বলা হয় ইন্টারনেট সভ্যতা। ইন্টারনেট মানেই অনলাইন। এই সভ্যতায় আমাদের যাত্রাকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। আমাদের স্বপ্ন আমরা ২০২১ সালের মাঝে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবো। আমরা এই সময়ে হতে চাই একটি সমৃদ্ধ-উন্নত মধ্য আয়ের দেশ, যাতে থাকবেনা দারিদ্র, থাকবেনা অশিক্ষা বা বৈষম্য। আমরা সেই স্বপ্নকে পূরণ করতে চাই ডিজিটাল প্রযুক্তিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সরকার এরই মাঝে আমাদের চারপাশের সবকিছুকে ডিজিটাল রূপান্তরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সেই লক্ষ্য অর্জন এবং সার্বিকভাবে সারা দুনিয়ার মতো জাতিগতভাবে আমাদের ইন্টারনেট নির্ভরতাও প্রশ্নাতীত। ২০১৩ সালের জুন মাসের হিসাব অনুসারে দুনিয়ার ২৪০ কোটি ৫৫ লাখ ১৮ হাজার ৩৭৬ জন ইন্টারনেট ব্যবহার করতো, যার শতকরা ৪৪ ভাগই এশিয়ার। বাংলাদেশের অবস্থা দুনিয়ার থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। এদেশে ২০১৩ সালের জুন মাসে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিলো ৩ কোটি ৫৯ লাখ।প্রযুক্তিগত দিকে থেকেও ইন্টারনেট এখন আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখন মানুষের জীবনযাপন, তথ্য আদান- প্রদান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সরকার পরিচালনা, ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ও পারস্পরিক সম্পর্কের সবচেয়ে বড় মাধ্যম ইন্টারনেট। লেখা, চিত্র ও শব্দ ও ইন্টারএ্যাকটিভিটি সহযোগে ইন্টারনেটে তথ্য ও উপাত্তকে এমনভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব যা আর কোন মাধ্যমেই তেমনটা সম্ভব নয়। এটি একদিকে হতে পারে খবরের কাগজ, ব্যক্তিগত ডাইরী বা সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক। অন্যদিকে ইন্টারএ্যাকটিভিটিসহ রেডিও, টিভি সম্প্রচারও এই প্রযুক্তিতে সম্ভব। এখনই বিভিন্ন ধরনের নিউজ পোর্টাল, নিউজ ব্লগ, আইপি টিভি, ইন্টারনেট রেডিও ইত্যাদি নানা ধরনের অনলাইন গণমাধ্যমের আবির্ভাব ঘটছে। দেশের বিদ্যমান কাগজ ও সম্প্রচারনির্ভর জাতীয় গণমাধ্যমগুলোও এখন ইন্টারনেটকে নির্ভর করছে এবং তাদের তথ্য-উপাত্ত ও সম্প্রচার ইন্টারনেটেও প্রকাশ করছে। ফলে ইতিমধ্যে বিরাজমান সকল গণ মাধ্যমের চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছে অনলাইন গণ মাধ্যম। বস্তুত দেশে অনলাইন গণ মাধ্যমের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এটি দিনে দিনে আরও বাড়তেই থাকবে। সেই প্রেক্ষিতটির প্রতি লক্ষ্য রেখে এখনই একথা বলা যায় যে, অনলাইনে প্রকাশিত গণমাধ্যমের বিষয়টিকে আর অবহেলা করা যায়না।বিদ্যমান অবস্থায় এইসব গণ মাধ্যম একদিকে কোন স্বীকৃতি বা সুযোগসুবিধা পায়না, অন্যদিকে গণমাধ্যমের জাতীয় মান রক্ষা করাও সম্ভব হচ্ছেনা। এটি এখন যেমন খুশি তেমন অবস্থায় চলছে। কোন আইন কানুন নিয়ম নীতি, নিবন্ধন ইত্যাদি এখানে বিদ্যমান নেই। এমন অবস্থা কোন মহলেরই কাম্য হতে পারেনা।এজন্যেই জাতীয় অনলাইন গণ মাধ্যমের স্বীকৃতি, মান বজায় ও নীতিনৈতিকতা গড়ে তোলার জন্য একটি জাতীয় অনলাইন গণ মাধ্যম নীতিমালা প্রণীত হচ্ছে তা বাস্তবায়নের জন্য তৎপরতা চলছে। এ সকল রূপান্তর বিবেচনা করলে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে তাহলে কি একসময় সংবাদপত্রের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে? না, তা নিশ্চয়ই নয়। যখন রেডিও চালু হয়, মানুষ মনে করেছিল সংবাদপত্র ধীরে ধীরে গৌণ প্রচারমাধ্যম হয়ে যাবে। তা হয়নি। যখন টেলিভিশন দেশে দেশে সম্প্রচার শুরু করল, তখন ভাবা হয়েছিল সংবাদপত্রের দিন শেষ। তা হয়নি। বরং টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে সংবাদপত্র নতুনতর প্রযুক্তির সাহায্যে আরও বিকশিত হয়েছে। এখন প্রচারমাধ্যম হিসেবে সংবাদপত্র, রেডিও ও টেলিভিশন সমান গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে। জনগণের এই তিনটিরই প্রয়োজন রয়েছে। সেটাই এ সময়ের দাবি। সুতরাং আমরা এ কথাও বলতে পারি, বিকল্প যোগাযোগ নেটওয়ার্ক- অনলাইন সংবাদপত্র, ফেসবুক, টুইটার, ওয়েবসাইট ইত্যাদিও এ যুগেরই দাবি। সংবাদপত্রও থাকবে, সেগুলোও থাকবে।আধুনিক রাষ্ট্রের একটি অপরিহার্য স্তম্ভ সংবাদপত্র। কোনো কিছুর একটি স্তম্ভ দুর্বল থাকলে গোটা জিনিসটিই দুর্বল হয়ে পড়ে। সংবাদমাধ্যমকে সরকার দুর্বল করে রাখলে রাষ্ট্র শক্তিশালী হতে পারে না। শেষ পর্যন্ত ক্ষতিটা রাষ্ট্রেরই। রাষ্ট্রের ক্ষতি মানে জনগণেরই ক্ষতি- সরকারের ক্ষতি নয়। কোনো সরকারের লাভ-ক্ষতিতে রাষ্ট্রের কিছু যায় আসে না। সাংবাদিকদেরা দেশের চতুর্থ স্তম্ভ- সাংবাদিকেরা দেশের চতুর্থ স্তম্ভ বলে বিবেচিত সে কারনে অপসাংবাদিকতা বা হলুদ সাংবাদিকতা রোধে অনলাইন নিউজপোর্টাল এবং সাংবাদিক রেজিষ্ট্রেশন আওতায় আনতে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার।এদিকে অনলাইন নিউজপোর্টালের নিবন্ধন পাশাপাশি সাংবাদিক নিবন্ধন ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে সরকার। সারাদেশে সাংবাদিকদের রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা হবে এবং সনদ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। সারাদেশে সাংবাদিকদের রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি সনদও দেয়া হবে। ওয়েবসাইটে সাংবাদিকদের নাম ও ছবিসহ তালিকা থাকবে। সাংবাদিকদের শপথ নিতে হবে। অন্যায় করলে সনদ বাতিল করা হবে। এর মাধ্যমে আশা করা যায় হলুদ সাংবাদিকতা কমে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। হলুদ সাংবাদিকতা ও সাংবাদিকের পরিচয়পত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, এটি করা গেলে স্কুল পাসসহ যে কেউ সাংবাদিক হতে পারবেন না। এছাড়া কোথাও সমস্যা হলে ওয়েবসাইট দেখিয়ে বলতে পারবেন তিনি সাংবাদিক। এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সতর্ক থাকতে হবে যাতে মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়। এখানে কোনো ধরনের অপসাংবাদিকতা নয়। সাংবাদিকদের দেশের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়। সে কারনেই এই আসনকে সমুন্নত রাখতে হবে। আমরাও  এর সাথে একমত পোষণ করি। সমাপ্ত।  

সম্পর্কিত সংবাদ

শাহজাদপুরে আবাসিক হোটেল ব্যবসার করুন অবস্থা, প্রনোদনা চায় ব্যবসায়ীরা

অর্থ-বাণিজ্য

শাহজাদপুরে আবাসিক হোটেল ব্যবসার করুন অবস্থা, প্রনোদনা চায় ব্যবসায়ীরা

এ বছরের ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া টানা একমাসের লকডাউনে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের আবাসিক হোটেলগুলো ফাকা পড়ে আছে। স্টাফ বেতন,...

১১ আগস্ট থেকে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু

বাংলাদেশ

১১ আগস্ট থেকে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) ভার্চুয়ালি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সচিবালয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদে...

শাহজাদপুরে দুই মেয়েকে বিষ পান করিয়ে মায়ের আত্মহত্যা

শাহজাদপুর

শাহজাদপুরে দুই মেয়েকে বিষ পান করিয়ে মায়ের আত্মহত্যা

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের ইসলামপুর ডায়া নতুনপাড়া গ্রামে স্বামীর সাথে ঝগড়া করে বিষপান করে ম...