শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
linkedin
শুধু পড়াশোনা করে কেরিয়ারের উন্নতি হবে না৷ লেগে থাকতে হবে সোশ্যাল নেটওয়ার্কেও৷ তবে তা বেছে বেছেই৷ কোথায়? লিখছেন অনিরুদ্ধ ধর
সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা খুব কম মানুষেরই আছে৷ অনেকেই বিশ্বাস করেন সোশ্যাল মিডিয়া মানেই নিজের ছবি তুলে পোস্ট করে 'লাইক' আর 'কমেন্ট' পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা৷ কিন্ত্ত, এই সোশ্যাল মিডিয়াই যে কেরিয়ার বা জীবন গড়ে দেওয়ার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে, সেটা অনেকেরই অজানা৷ সামাজিক যোগাযোগের বা সোশ্যাল ইন্টারঅ্যাকশনের জন্যে ব্যবহূত হওয়া ছাড়াও পেশাগত এবং শিক্ষাগত ক্ষেত্রেও যে যে-কোনও সোশ্যাল মিডিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা যে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে কোনও সন্দেহই নেই৷ কেরিয়ার তৈরির ক্ষেত্রে অন্তত খান দশেক নেটওয়ার্কিং সাইট রয়েছে৷ এর মধ্যে 'লিংকডইন.কম' যে শীর্ষে রয়েছে সে-ব্যাপারে কারও মধ্যেই দ্বিমত নেই৷ তবে শুধু লিংকডইন-ই নয়, যে কোনও সাইটেই কেরিয়ার তৈরির ক্ষেত্রে যেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল আপনার 'প্রোফাইল'৷ এই প্রোফাইল তৈরির ক্ষেত্রে আপনার মাথায় রাখতে হবে একটাই বিষয়৷ সেটা হল, কারা আপনার প্রোফাইল দেখছেন৷ যাঁরা দেখছেন, প্রাথমিকভাবে তাঁদের কাছে আপনার এই প্রোফাইলই হল আপনার পরিচয়৷ আপনার দক্ষতা এবং আপনার অভিজ্ঞতার একমাত্র শংসাপত্র৷ ইচ্ছে করলে আপনি একইসঙ্গে এমন একাধিক নেটওয়ার্কিং সাইটে ঢুকে পড়তে পারেন৷ এতে আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক দ্রুত হবে এবং নতুন চাকরি পাওয়ার ব্যাপারে সময় কম লাগবে৷ 'প্ল্যাক্সো', 'জনস্টার', 'জব এফএক্স' হল এমন সব সাইট৷
আগেই বলেছি 'লিংকডইন' এখনও পর্যন্ত এক নম্বর সাইট৷ যাঁরা প্রথম চাকরি খুঁজছেন, যাঁরা বর্তমান চাকরি বদল করে নতুন চাকরি খুঁজছেন, নিজের তৈরি প্রোডাক্টকে আরও ভালোভাবে পরিচিতি দেওয়ার জন্যে এবং নতুন ক্লায়েন্ট পাওয়ার চেষ্টা করছেন, তাঁদের জন্য এই সাইট ব্যবহার করার পক্ষে আদর্শ৷ কেবল প্রয়োজন 'সংযোগ' ক্রমশ বাড়িয়ে যাওয়া, ক্রমশ বেশি সংখ্যক 'গ্রুপ'-এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়া, এবং নিজের 'প্রোফাইল' ক্রমাগত 'আপডেট' করা৷ এখন প্রশ্ন হল, কেন 'লিংকডইন'-এর মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট আপনার আজ খুব প্রয়োজন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন গোটা পৃথিবীতেই চাকরির বাজার কখনও দ্রুত গতিতে বাড়ছে, আবার কখনও উল্কাগতিতে কমছে৷ এমন কোনও সরকারি তথ্যভান্ডার পৃথিবীর কোথাও গড়ে ওঠেনি যা চাকরি এবং ব্যবসার বাজার সম্পর্কে তাত্‍ক্ষণিক তথ্য আপনাকে দিতে পারবে৷ কোন পেশায় কী কী চাকরি এই মুহূর্তে রয়েছে, সেই সব পেশায় যুক্ত হওয়ার জন্যে আপনার ঠিক কী ধরনের অভিজ্ঞতা থাকা উচিত, যে-সব মানুষ এই সব পেশায় সফল ভাবে যুক্ত আছে তাঁরা ঠিক কী ধরনের বিষয় নিয়ে লেখা-পড়া করেছেন অতীতে, এমনকী সেই সব খরচও আপনাকে মুহূর্তে জানিয়ে দিতে পারবে লিংকডইন-এর মতো নেটওয়ার্কিং সাইট৷ শুধু চাকরি প্রার্থীই নয়, এই সাইটে ঈগলের চোখ নিয়ে সর্বক্ষণ নজর রাখছেন রিক্রুটাররাও৷ তাঁরা খুঁজছেন প্রতিনিয়ত একটি বিশেষ কাজের জন্য একজন বিশেষ কর্মীকে৷ ফলে, আপনার প্রোফাইল কিন্ত্ত তাঁদের নজরে থাকছে সর্বক্ষণ৷ এই সাইটের প্রায় ৩৫ কোটি সদস্য, যাঁরা চাকরিপ্রার্থী, রিক্রুটাররা তাঁদের প্রোফাইলে খুঁজে বেড়াচ্ছেন এঁরা কোথায় লেখাপড়া করেছেন, কী নিয়ে এঁরা পড়াশোনা করেছেন, এর আগে কোথায়-কোথায় তাঁরা চাকরি করেছেন এবং এঁদের দক্ষতাটা ঠিক কোথায়? আর ঠিক এই কারণেই 'ক্যাচ দেম ইয়ং' তত্ত্ব অনুযায়ী বিগত দু-বছর যাবত্‍ লিংকডইন উচ্চশিক্ষা ভবিষ্যত-জীবন গড়ে তোলার জন্য স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ঢুকে পড়েছে৷ কোন কলেজে কী নিয়ে পড়া উচিত এবং এর ফলে ভবিষ্যতে তাদের কেরিয়ার ঠিক কী রকম হবে সে ব্যাপারে একটা পথ নির্দেশ দেওয়ার চেষ্টা করছে৷ খুব স্পষ্ট ভাষায় হায়াহ এডুকেশন প্রোডাক্ট টিম-এর প্রথান ইটামার ওরগাড জানিয়েছেন, 'জীবনের অধিকাংশ সিদ্ধান্তই সঠিক তথ্য-ভিত্তিক হয় না৷ আমরা চেষ্টা করছি সেই তথ্যকেই সঠিকভাবে যুব-সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরতে, যাতে তাদের শিক্ষা এবং জীবিকার ব্যাপারে ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷' linkedin.com/edu-ই হল সেই সাইট যা কম বয়সীদের লেখাপড়া এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে জানান দিচ্ছে৷ প্রথমে ১৮ বছরের নীচে এই সাইটে যোগ দেওয়া যেত না, এখন ১৪ বছরেই পারা যাচ্ছে৷ জানা যাচ্ছে, ছাত্র-ছাত্রীরাই এই নেটওয়ার্কের এই মুহূর্তে সংখ্যায় ভারি৷ অতএব, স্কুল ছাড়ার আগে থেকেই কম বয়সীরা সেই সব তথ্য পেয়ে যাচ্ছে, যা তাদের ভবিষ্যত শিক্ষার দিশা এবং কোন পেশায় তাদের কী দক্ষতা নিয়ে যাওয়া উচিত এমন একটা ধারণা তৈরি করে দিচ্ছে৷ সফল হওয়ার জন্য এই পাঁচটি পথের বিকল্প নেই ধরা যাক আপনার লেখা-পড়ার জীবন শেষ৷ এমনকী আপনি একটা ভালো চাকরিও করছেন? তাহলেও কি 'লিংকডইন'-এর মতে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের সঙ্গে যুক্ত থাকা উচিত? এই নেটওয়ার্কিং সাইটের সঙ্গে জড়িত থাকা অনেকেরই মত, যুক্ত না থাকলে একটা বড় ভুল হয়ে যাবে৷ চাকরি করছেন এমন অনেকেই মনে করেন, কোনও সংস্থায় কর্মরত অবস্থায় 'লিংকডইন'-এর মতো জব-সার্চিং নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকলে সংস্থার কর্তা-ব্যক্তিরা সন্দেহ করতে পারেন তিনি বুঝি অন্য চাকরির খোঁজে রয়েছেন৷ এটা খুব ভুল ধারনা৷ 'লিংকডইন'-কে চাকরি পাওয়ার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ধরে নিলেই মুশকিল৷ যে-কোনও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-এর আসল ক্ষমতাই হল আপনাকে বিপুল নেটওয়ার্কিং-এ জড়িত রাখা৷ এমন কোনও মানুষের সঙ্গে এই নেটওয়ার্কেই যোগাযোগ হয়ে যেতে পারে যাঁর সহায়তায় আপনি যে সংস্থায় আছেন, সেই সংস্থাতেই চমকে দেওয়া মতো উন্নতির প্রস্তাব আপনি দিতেই পারেন৷ এক বিশেষজ্ঞের মতে অন্তত পাঁচটি কারণ রয়েছে আপনার কোনও সোশ্যাল নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকার ব্যাপারে৷ ১) একটা বিস্তৃত নেটওয়ার্কের সদস্য হলে ভবিষ্যতে কাজে লাগবে: ধরা যাক, হঠাত্‍ই আপনার সংস্থায় এমন বিপত্তি হল যে আপনার চাকরিটি গেল৷ আর তখনই আবিষ্কার করলেন নেটওয়ার্কে আপনার বন্ধু মাত্র এমন কয়েকজন, যাঁরা আপনার নতুন কাজের কোনও সন্ধানই দিকে পারবেন না৷ অথচ, আপনার যদি অনেক বন্ধু থাকত, তাহলে এই অসুবিধায় আপনাকে সহায্যের হাত অনেকেই বাড়িয়ে দিতে পারতেন৷ তাই আজ প্রয়োজন পড়ছে না বলে নেটওয়ার্কিং বাড়ালেন না, এই ভুলটা করবেন না৷ ২) রিক্রুটাররা 'প্যাসিভ' বা অক্রিয় প্রার্থী পছন্দ করেন: জানবেন কোনও সংস্থা যখন কর্মী নিয়োগ করেন, তখন তাঁরা কর্মহীন মানুষ খুব কম খোঁজেন৷ অথচ, তাঁরা এমন কর্মীই খোঁজেন যিনি কাজ খোঁজার ব্যাপারে তেমন 'সক্রিয়' নন৷ রিক্রুটাররা চান, অন্য সংস্থা থেকে ভালো কর্মী, যিনি কাজ খুঁজতে তেমন ব্যস্ত নন, তাঁকেই তুলে আনতে৷ এখন আপনি যদি লিংকডইন-এর মতো নেটওয়ার্কে আপডেটেড প্রোফাইল নিয়ে উপস্থিত না থাকেন, তাহলে এই চমত্‍কার সুযোগটা আপনাকে দেবেন কীভাবে? ৩) যত বেশি গ্রুপ, তত বেশি সংযোগ: ভেবে-চিন্তে এমন গ্রুপের সঙ্গে থাকাটা জরুরি যেখান থেকে আপনি কাজের জগত্‍ সম্পর্কে অনেক এমন খোঁজ-খবর পাবেন, যাতে পেশাগতভাবে আপার উন্নতি হয়৷ এই সব দলে থাকলে আপনি যেনতুন খবর, নতুন ভাবনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হবেন তাই নয়, আপনি নিজের ভাবনা-চিন্তা এবং গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যও করতে পারবেন৷ এই সব ভাবনা-চিন্তা এবং মন্তব্য কিন্ত্ত আপনাকে আরও ভালোজায়গায় নিয়ে যেতে পারে৷ ৪) আপনার রেজিউমে প্রতিনিয়ত আপডেট করুন অনেকেই মনে করেন বায়ো-ডেটা ব্যাপারটা স্থবির৷ একবার লিখে প্রোফাইলে জুড়ে দিলেই সেটা আজীবন স্থির থাকবে৷ লিংকডইন-এর মতো সাইট সব সময় জোর দেয় আপনার রেজিউমে আপডেটকরার জন্য৷ রিক্রুটাররা এটা জানেন, এবং যে-কারণে তাঁরা যে-কারও প্রোফাইল দেখলেই বুঝতে পারেন ঠিক কোন অবস্থায় আপনি আছেন৷ রেজিউমে তাঁদের নজরে আসবে, তাই ঘন-ঘন আপডেটকরুন নিজের প্রোফাইল-রেজিউমে৷ ৫) নজর রাখুন দৈনিক 'নিউজ-ফিড'-এর দিকে এলেন, চোখ বোলালেন আর সাইট ছেড়ে চলে গেলেন- এই অভ্যেসটা ছাড়তে হবে৷ আপনার নিজস্ব কাজের জগতের উপর বিবিধ খবরের প্রতি নজর রাখুন৷ সংযোগ বাড়ান তাঁদের সঙ্গে যাঁরা এইধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত৷ তাঁরা কী ভাবছেন, তাঁরা কী করছেন নজর রাখুন সেই দিকেও৷ প্রয়োজনে এঁরাই আপনাকে হয়তো এমন একটা যোগাযোগের রাস্তা দেখিয়ে দেবে যা আপনি স্বপ্নেও কোনওদিন ভাবেননি৷
/script>

ডিগ্রি পাওয়ার জন্য যেতে হবে লিংকডইনে

ফটো শেয়ার করুন
 
শুধু পড়াশোনা করে কেরিয়ারের উন্নতি হবে না৷ লেগে থাকতে হবে সোশ্যাল নেটওয়ার্কেও৷ তবে তা বেছে বেছেই৷ কোথায়? লিখছেন অনিরুদ্ধ ধর সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা খুব কম মানুষেরই আছে৷ অনেকেই বিশ্বাস করেন সোশ্যাল মিডিয়া মানেই নিজের ছবি তুলে পোস্ট করে 'লাইক' আর 'কমেন্ট' পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা৷ কিন্ত্ত, এই সোশ্যাল মিডিয়াই যে কেরিয়ার বা জীবন গড়ে দেওয়ার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে, সেটা অনেকেরই অজানা৷ সামাজিক যোগাযোগের বা সোশ্যাল ইন্টারঅ্যাকশনের জন্যে ব্যবহূত হওয়া ছাড়াও পেশাগত এবং শিক্ষাগত ক্ষেত্রেও যে যে-কোনও সোশ্যাল মিডিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা যে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে কোনও সন্দেহই নেই৷ কেরিয়ার তৈরির ক্ষেত্রে অন্তত খান দশেক নেটওয়ার্কিং সাইট রয়েছে৷ এর মধ্যে 'লিংকডইন.কম' যে শীর্ষে রয়েছে সে-ব্যাপারে কারও মধ্যেই দ্বিমত নেই৷ তবে শুধু লিংকডইন-ই নয়, যে কোনও সাইটেই কেরিয়ার তৈরির ক্ষেত্রে যেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল আপনার 'প্রোফাইল'৷ এই প্রোফাইল তৈরির ক্ষেত্রে আপনার মাথায় রাখতে হবে একটাই বিষয়৷ সেটা হল, কারা আপনার প্রোফাইল দেখছেন৷ যাঁরা দেখছেন, প্রাথমিকভাবে তাঁদের কাছে আপনার এই প্রোফাইলই হল আপনার পরিচয়৷ আপনার দক্ষতা এবং আপনার অভিজ্ঞতার একমাত্র শংসাপত্র৷ ইচ্ছে করলে আপনি একইসঙ্গে এমন একাধিক নেটওয়ার্কিং সাইটে ঢুকে পড়তে পারেন৷ এতে আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক দ্রুত হবে এবং নতুন চাকরি পাওয়ার ব্যাপারে সময় কম লাগবে৷ 'প্ল্যাক্সো', 'জনস্টার', 'জব এফএক্স' হল এমন সব সাইট৷
আগেই বলেছি 'লিংকডইন' এখনও পর্যন্ত এক নম্বর সাইট৷ যাঁরা প্রথম চাকরি খুঁজছেন, যাঁরা বর্তমান চাকরি বদল করে নতুন চাকরি খুঁজছেন, নিজের তৈরি প্রোডাক্টকে আরও ভালোভাবে পরিচিতি দেওয়ার জন্যে এবং নতুন ক্লায়েন্ট পাওয়ার চেষ্টা করছেন, তাঁদের জন্য এই সাইট ব্যবহার করার পক্ষে আদর্শ৷ কেবল প্রয়োজন 'সংযোগ' ক্রমশ বাড়িয়ে যাওয়া, ক্রমশ বেশি সংখ্যক 'গ্রুপ'-এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়া, এবং নিজের 'প্রোফাইল' ক্রমাগত 'আপডেট' করা৷ এখন প্রশ্ন হল, কেন 'লিংকডইন'-এর মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট আপনার আজ খুব প্রয়োজন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন গোটা পৃথিবীতেই চাকরির বাজার কখনও দ্রুত গতিতে বাড়ছে, আবার কখনও উল্কাগতিতে কমছে৷ এমন কোনও সরকারি তথ্যভান্ডার পৃথিবীর কোথাও গড়ে ওঠেনি যা চাকরি এবং ব্যবসার বাজার সম্পর্কে তাত্‍ক্ষণিক তথ্য আপনাকে দিতে পারবে৷ কোন পেশায় কী কী চাকরি এই মুহূর্তে রয়েছে, সেই সব পেশায় যুক্ত হওয়ার জন্যে আপনার ঠিক কী ধরনের অভিজ্ঞতা থাকা উচিত, যে-সব মানুষ এই সব পেশায় সফল ভাবে যুক্ত আছে তাঁরা ঠিক কী ধরনের বিষয় নিয়ে লেখা-পড়া করেছেন অতীতে, এমনকী সেই সব খরচও আপনাকে মুহূর্তে জানিয়ে দিতে পারবে লিংকডইন-এর মতো নেটওয়ার্কিং সাইট৷ শুধু চাকরি প্রার্থীই নয়, এই সাইটে ঈগলের চোখ নিয়ে সর্বক্ষণ নজর রাখছেন রিক্রুটাররাও৷ তাঁরা খুঁজছেন প্রতিনিয়ত একটি বিশেষ কাজের জন্য একজন বিশেষ কর্মীকে৷ ফলে, আপনার প্রোফাইল কিন্ত্ত তাঁদের নজরে থাকছে সর্বক্ষণ৷ এই সাইটের প্রায় ৩৫ কোটি সদস্য, যাঁরা চাকরিপ্রার্থী, রিক্রুটাররা তাঁদের প্রোফাইলে খুঁজে বেড়াচ্ছেন এঁরা কোথায় লেখাপড়া করেছেন, কী নিয়ে এঁরা পড়াশোনা করেছেন, এর আগে কোথায়-কোথায় তাঁরা চাকরি করেছেন এবং এঁদের দক্ষতাটা ঠিক কোথায়? আর ঠিক এই কারণেই 'ক্যাচ দেম ইয়ং' তত্ত্ব অনুযায়ী বিগত দু-বছর যাবত্‍ লিংকডইন উচ্চশিক্ষা ভবিষ্যত-জীবন গড়ে তোলার জন্য স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ঢুকে পড়েছে৷ কোন কলেজে কী নিয়ে পড়া উচিত এবং এর ফলে ভবিষ্যতে তাদের কেরিয়ার ঠিক কী রকম হবে সে ব্যাপারে একটা পথ নির্দেশ দেওয়ার চেষ্টা করছে৷ খুব স্পষ্ট ভাষায় হায়াহ এডুকেশন প্রোডাক্ট টিম-এর প্রথান ইটামার ওরগাড জানিয়েছেন, 'জীবনের অধিকাংশ সিদ্ধান্তই সঠিক তথ্য-ভিত্তিক হয় না৷ আমরা চেষ্টা করছি সেই তথ্যকেই সঠিকভাবে যুব-সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরতে, যাতে তাদের শিক্ষা এবং জীবিকার ব্যাপারে ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷' linkedin.com/edu-ই হল সেই সাইট যা কম বয়সীদের লেখাপড়া এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে জানান দিচ্ছে৷ প্রথমে ১৮ বছরের নীচে এই সাইটে যোগ দেওয়া যেত না, এখন ১৪ বছরেই পারা যাচ্ছে৷ জানা যাচ্ছে, ছাত্র-ছাত্রীরাই এই নেটওয়ার্কের এই মুহূর্তে সংখ্যায় ভারি৷ অতএব, স্কুল ছাড়ার আগে থেকেই কম বয়সীরা সেই সব তথ্য পেয়ে যাচ্ছে, যা তাদের ভবিষ্যত শিক্ষার দিশা এবং কোন পেশায় তাদের কী দক্ষতা নিয়ে যাওয়া উচিত এমন একটা ধারণা তৈরি করে দিচ্ছে৷ সফল হওয়ার জন্য এই পাঁচটি পথের বিকল্প নেই ধরা যাক আপনার লেখা-পড়ার জীবন শেষ৷ এমনকী আপনি একটা ভালো চাকরিও করছেন? তাহলেও কি 'লিংকডইন'-এর মতে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের সঙ্গে যুক্ত থাকা উচিত? এই নেটওয়ার্কিং সাইটের সঙ্গে জড়িত থাকা অনেকেরই মত, যুক্ত না থাকলে একটা বড় ভুল হয়ে যাবে৷ চাকরি করছেন এমন অনেকেই মনে করেন, কোনও সংস্থায় কর্মরত অবস্থায় 'লিংকডইন'-এর মতো জব-সার্চিং নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকলে সংস্থার কর্তা-ব্যক্তিরা সন্দেহ করতে পারেন তিনি বুঝি অন্য চাকরির খোঁজে রয়েছেন৷ এটা খুব ভুল ধারনা৷ 'লিংকডইন'-কে চাকরি পাওয়ার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ধরে নিলেই মুশকিল৷ যে-কোনও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-এর আসল ক্ষমতাই হল আপনাকে বিপুল নেটওয়ার্কিং-এ জড়িত রাখা৷ এমন কোনও মানুষের সঙ্গে এই নেটওয়ার্কেই যোগাযোগ হয়ে যেতে পারে যাঁর সহায়তায় আপনি যে সংস্থায় আছেন, সেই সংস্থাতেই চমকে দেওয়া মতো উন্নতির প্রস্তাব আপনি দিতেই পারেন৷ এক বিশেষজ্ঞের মতে অন্তত পাঁচটি কারণ রয়েছে আপনার কোনও সোশ্যাল নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকার ব্যাপারে৷ ১) একটা বিস্তৃত নেটওয়ার্কের সদস্য হলে ভবিষ্যতে কাজে লাগবে: ধরা যাক, হঠাত্‍ই আপনার সংস্থায় এমন বিপত্তি হল যে আপনার চাকরিটি গেল৷ আর তখনই আবিষ্কার করলেন নেটওয়ার্কে আপনার বন্ধু মাত্র এমন কয়েকজন, যাঁরা আপনার নতুন কাজের কোনও সন্ধানই দিকে পারবেন না৷ অথচ, আপনার যদি অনেক বন্ধু থাকত, তাহলে এই অসুবিধায় আপনাকে সহায্যের হাত অনেকেই বাড়িয়ে দিতে পারতেন৷ তাই আজ প্রয়োজন পড়ছে না বলে নেটওয়ার্কিং বাড়ালেন না, এই ভুলটা করবেন না৷ ২) রিক্রুটাররা 'প্যাসিভ' বা অক্রিয় প্রার্থী পছন্দ করেন: জানবেন কোনও সংস্থা যখন কর্মী নিয়োগ করেন, তখন তাঁরা কর্মহীন মানুষ খুব কম খোঁজেন৷ অথচ, তাঁরা এমন কর্মীই খোঁজেন যিনি কাজ খোঁজার ব্যাপারে তেমন 'সক্রিয়' নন৷ রিক্রুটাররা চান, অন্য সংস্থা থেকে ভালো কর্মী, যিনি কাজ খুঁজতে তেমন ব্যস্ত নন, তাঁকেই তুলে আনতে৷ এখন আপনি যদি লিংকডইন-এর মতো নেটওয়ার্কে আপডেটেড প্রোফাইল নিয়ে উপস্থিত না থাকেন, তাহলে এই চমত্‍কার সুযোগটা আপনাকে দেবেন কীভাবে? ৩) যত বেশি গ্রুপ, তত বেশি সংযোগ: ভেবে-চিন্তে এমন গ্রুপের সঙ্গে থাকাটা জরুরি যেখান থেকে আপনি কাজের জগত্‍ সম্পর্কে অনেক এমন খোঁজ-খবর পাবেন, যাতে পেশাগতভাবে আপার উন্নতি হয়৷ এই সব দলে থাকলে আপনি যেনতুন খবর, নতুন ভাবনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হবেন তাই নয়, আপনি নিজের ভাবনা-চিন্তা এবং গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যও করতে পারবেন৷ এই সব ভাবনা-চিন্তা এবং মন্তব্য কিন্ত্ত আপনাকে আরও ভালোজায়গায় নিয়ে যেতে পারে৷ ৪) আপনার রেজিউমে প্রতিনিয়ত আপডেট করুন অনেকেই মনে করেন বায়ো-ডেটা ব্যাপারটা স্থবির৷ একবার লিখে প্রোফাইলে জুড়ে দিলেই সেটা আজীবন স্থির থাকবে৷ লিংকডইন-এর মতো সাইট সব সময় জোর দেয় আপনার রেজিউমে আপডেটকরার জন্য৷ রিক্রুটাররা এটা জানেন, এবং যে-কারণে তাঁরা যে-কারও প্রোফাইল দেখলেই বুঝতে পারেন ঠিক কোন অবস্থায় আপনি আছেন৷ রেজিউমে তাঁদের নজরে আসবে, তাই ঘন-ঘন আপডেটকরুন নিজের প্রোফাইল-রেজিউমে৷ ৫) নজর রাখুন দৈনিক 'নিউজ-ফিড'-এর দিকে এলেন, চোখ বোলালেন আর সাইট ছেড়ে চলে গেলেন- এই অভ্যেসটা ছাড়তে হবে৷ আপনার নিজস্ব কাজের জগতের উপর বিবিধ খবরের প্রতি নজর রাখুন৷ সংযোগ বাড়ান তাঁদের সঙ্গে যাঁরা এইধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত৷ তাঁরা কী ভাবছেন, তাঁরা কী করছেন নজর রাখুন সেই দিকেও৷ প্রয়োজনে এঁরাই আপনাকে হয়তো এমন একটা যোগাযোগের রাস্তা দেখিয়ে দেবে যা আপনি স্বপ্নেও কোনওদিন ভাবেননি৷

সম্পর্কিত সংবাদ

শাহজাদপুরে আবাসিক হোটেল ব্যবসার করুন অবস্থা, প্রনোদনা চায় ব্যবসায়ীরা

অর্থ-বাণিজ্য

শাহজাদপুরে আবাসিক হোটেল ব্যবসার করুন অবস্থা, প্রনোদনা চায় ব্যবসায়ীরা

এ বছরের ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া টানা একমাসের লকডাউনে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের আবাসিক হোটেলগুলো ফাকা পড়ে আছে। স্টাফ বেতন,...

১১ আগস্ট থেকে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু

বাংলাদেশ

১১ আগস্ট থেকে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) ভার্চুয়ালি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সচিবালয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদে...

মন্ডল গ্রুপের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি আবদুল মজিদ মন্ডল আর নেই

রাজনীতি

মন্ডল গ্রুপের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি আবদুল মজিদ মন্ডল আর নেই

সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আবদুল মজিদ মন্ডল (৭২) আর ন...

শাহজাদপুরে দুই মেয়েকে বিষ পান করিয়ে মায়ের আত্মহত্যা

শাহজাদপুর

শাহজাদপুরে দুই মেয়েকে বিষ পান করিয়ে মায়ের আত্মহত্যা

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের ইসলামপুর ডায়া নতুনপাড়া গ্রামে স্বামীর সাথে ঝগড়া করে বিষপান করে ম...