রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
আবুল কাশেম ও শামছুর রহমান শিশির : র‌্যাব, ডিবি ও পুলিশের কথিত সোর্স পরিচয়ে ও মানব কল্যাণ সংস্থায় চাকুরি করার কথা বলে শাহজাদপুরে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা, নিরীহ লোকদের দোকানে মাদক রেখে টাকা আদায়, ডাকাতি করা, ইভটিজিং, জুয়া খেলা, সুদের কারবার, আশ্রিত নারীদের দিয়ে অবৈধ দেহ ব্যবসা করানো, মামলা তদবিরের নামে প্রতারণা করে টাকা আদায়, ইসলামী শরিয়াহ না মেনে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বহুবিবাহ করা, নিরীহ ব্যক্তিদের নানা কৌশলে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়, আশ্রিত যুবতী মেয়েদের দিয়ে কৌশলে এলাকার নিরীহ ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে তাদের আটক করে মোটা অর্থ আদায়সহ বছরের পর বছর সীমাহীন অপকর্ম করে চলেছে শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের মাদলা গ্রামের নুরুল ইসলাম (নূরাল ফরাজী) এর ছেলে বাবুল। শুধু তাই নয়, এলাকার এক নিরীহ ঔষধ ব্যবসায়ীর দোকানে কৌশলে ঢুকে নিজে মাদক রেখে এসে পরে ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা টাকাও আদায় করেছে প্রতারক বাবুল। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, গত কয়েক মাস আগে শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের পোরজনা বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম ওরফে শহিদুল ডাক্তারের ঔষধের দোকানে গিয়ে ‘কথা আছে’ বলে প্রতারক বাবুল দোকানের ভিতরে বসে। এ সময় বাবুলকে বসতে দিয়ে শহিদুল ঔষধ বেচাকেনার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। শহিদুলের ব্যস্ততার সুযোগে বাবুল তার কাছে থাকা ১০ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট শহিদুলের ঔষধের আলমারীর উপরের একটি ঔষধ বক্সের নীচে রেখে দেয়। কিছুক্ষণ পরে শহিদুলের বেচাকেনার ব্যস্ততা কাটলে বাবুল তাকে ডেকে দোকানের পিছনে নিয়ে যায়। এ সময় বাবুল শহিদুলকে বলে, ‘একজন আপনার ১ লাখ টাকা ক্ষতি করার চিন্তাভাবনা করেছে। আমরা মানব কল্যাণে চাকুরি করি। দেখলাম আপনার মতো একজন ভাল মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ করা হচ্ছে জেনে ছুঁটে এসেছি।’ এ সময় শহিদুল কারণ জিজ্ঞাসা করলে বাবুল বলে,‘আপনার দোকানে ইয়াবা ট্যাবলেট আছে।’ শহিদুল বলে,‘না, আমিতো ইয়াবা ব্যবসা করি না। আমি তো জীবনে ইয়াবা ট্যাবলেট চোখেই দেখিনি। কোথায় আছে ইয়াবা ট্যাবলেট ?’ এ সময় বাবুল বাবুলের নিজ হাতে রেখে দেয়া সেই ঔষধের বক্সটি আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলে, ‘ওই বাক্সের নীচে আছে বলেই বাবুল নিজে উঠে গিয়ে বক্সের নীচ থেকে ১০ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট বের করে নিয়ে আসে।’ এ সময় শহিদুল বলে, ‘ওই বাক্সের নীচে ইয়াবা ট্যাবলেট আছে, আপনি জানলেন কিভাবে? আপনিই ওই ট্যাবলেট রেখেছেন।’ এসময় বাবুল বলে, ‘সে যাই হোক, টাকা দিলে বাঁচিয়ে দেবো; না দিলে ফাঁসিয়ে দেবো। থানা পুলিশকে এখনই জানিয়ে দেবো।’ এ ঘটনায় শহিদুল কিংকর্তব্যমিমূঢ় হয়ে পড়েন। এ বিষয়ে শহিদুল জানান,‘ঘটনাটি সত্য। বাবুল আমাকে এভাবে প্রতারণা করে টাকা আদায় করেছে। আমি এখনও এর বিচার চাই।’ আপনি ইয়াবা ব্যবসা করেন না, তার পরও বাবুলকে টাকা দিলেন কেন টাকা দিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘জীবনে কোন দিন এমন পরিস্থিতিতে পরিনি। তার পরও ইয়াবা ব্যবসার ভয়াবহ শাস্তি ও নিজের মান সম্মানের কথা চিন্তা করে বাবুলের সাথে মোটা টাকার বিনিময়ে আপোষ রফা করতে বাধ্য হই।’ ছবি দেখালে এখনও বাবুলকে চিনতে পারবেন কি না এ প্রশ্ন করলে এবং সংবাদদাতার কাছে মোবাইল ফোনে গচ্ছিত কয়েকটি ছবি দেখালে তিনি বাবুলকে সনাক্ত করে বলেন, এই লোকই আমার এ সর্বনাশ করেছে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে,‘সোর্সের নাম পরিচয় দেয়া এই বাবুল নিজে ইয়াবা কোথায় পেলো এ প্রশ্নটি সবার। মাদক, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ইত্যাদি দমনের লক্ষ্যে অবশ্যই থানা পুলিশের সোর্স থাকা প্রয়োজন আছে। তবে সেই সোর্সের কাজ হবে থানা পুলিশকে প্রকৃত তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করা। সোর্সের নিজে মাদক ব্যবসা করা এবং নিজের কাছে গচ্ছিত থাকা মাদকদ্রব্য দিয়ে কোন নিরীহ মানুষকে ফাঁসিয়ে দেয়া বা ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে নিরাপরাধ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করা রীতিমতো জঘন্যতম ফৌজদারী অপরাধ। এ ধরনের অপরাধে বাবুলের শাস্তি হওয়া উচিৎ।’ এ ব্যাপারে বাবুলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সম্পর্কিত সংবাদ

তাঁতশিল্পের কেন্দ্রবিন্দু শাহজাদপুরে বৈশাখী তাঁতবস্ত্র বিক্রির হিড়িক ! চাহিদা ও কদর বাড়ছে : ব্যাতিব্যস্ত দেশের তাঁতশিল্পীরা

অর্থ-বাণিজ্য

তাঁতশিল্পের কেন্দ্রবিন্দু শাহজাদপুরে বৈশাখী তাঁতবস্ত্র বিক্রির হিড়িক ! চাহিদা ও কদর বাড়ছে : ব্যাতিব্যস্ত দেশের তাঁতশিল্পীরা

শামছুর রহমান শিশির : পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে দেশের তাঁতশিল্পের কেন্দ্রবিন্দু শাহজাদপুরসহ দেশের তাঁতসমৃদ্ধ এলাকার তাঁত...

বিগ ডাটা কি এবং কেন! ( What is Big Data and Why? )

ফটোগ্যালারী

বিগ ডাটা কি এবং কেন! ( What is Big Data and Why? )

একটা সময় ছিলো যখন আমরা আমাদের সবকিছুই কাগজে লিখে রাখতাম। কখন খেতে যাবো, কবে মিটিং, কখন শপিং এ যাবো এসব টু ডু লিস্টগ...