লকডাউন অমান্য করে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার মোনাকষা-বানতিয়ার.জামিরতা-ছোট চানতারা নৌরুটে চলাচলকারী অর্ধশতাধিক ইঞ্জিন চালিত শ্যালো নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করা হচ্ছে। ফলে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ও সোনাতনী ইউনিয়নের যমুনা নদীর চর এলাকার অন্তত ১৫ গ্রামের ৬৫ হাজার নারী পুরুষ ও শিশু মহামারি করোনা ঝুঁকিতে পড়েছে। গ্রাম গুলি হল, শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের ঠুটিয়া, ভাট দীঘুলিয়া, চৌরা পাচিল, সোনাতনী ইউনিয়নের মাকড়া, ধীতপুর, শ্রীপুর, সোনাতনী, কুরসী, ছোট চানতারা, বড় চানতারা, বানতিয়ার, লহিন্দাকান্দি, দইকান্দি, বানিয়া সিংগুলি ও দাসুরিয়া।
এ ছাড়া এ নৌরুটে চৌহালি উপজেলার ঘোরজান ইউনিয়নের ঘোরজান,বরংগাইল, স্থল ইউনিয়নের উত্তর নওহাটা,দক্ষিণ নওহাটা,ঠেঙ্গামারা ও বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আরো ১০ হাজার মানুষসহ মোট পৌনে ১ লাখ মানুষ যাতায়াত করে। এ সব যাত্রীর অধিকাংশের মুখে মাক্স নেই। এরা গাদাগাদি করে গাঁ ঘেষে বসে যাতায়াত করে। ঘাট কর্তৃপক্ষ অধিক উপার্জনের আশায় এ ভাবে নৌ পরিচালনা করায় এ গ্রামে করোনা ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এ বিষয়ে কৈজুরি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি লুৎফর রহমান মল্লিক,১নং ওয়ার্ড সদস্য শহিদুল ইসলাম, ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, কৈজুরি বাজারের আব্দুল মতিন,আলহাজ আলী,আব্দুল খালেক, বানতিয়ার গ্রামের মজিদ মাঝি, চৌরা পাচিল গ্রামের হযরত আলী, নওহাটার আব্দুল লতিফ, ছোট চানতারা গ্রামেরএনামুল হক, সোনাতনী গ্রামের মশিউর রহমান, ঠুটিয়া গ্রামের রমজান আলী ও সম্রাট হোসেন জানান, কৈজুরি বাজারের ইলেকট্রিশিয়ান বাবুল হোসেন বাবু মোনাকষা (সরকারী নাম চৌরা পাচিল) ঘাটের মূল ইজারাদার। তার সাথে ১৮ জন ভাগিদার রয়েছে। এদের কেউই প্রকৃতপক্ষে মাঝি না। এদের অনেকেই মাদক সেবন ও ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত। এদের অনেকের নামে থানায় একাধিক মাদক মামলা হয়েছে। অনেকে জামিনে আছেন। এদের নিজস্ব কোন নৌকা নাই। নৌকা প্রতি সপ্তাহে ২৫০০ টাকা ভাড়ায় এ রুটে ৪/৫ টা নৌকা চালানো হয়। নিয়ম অনুযায়ী এ ঘাট থেকে আধা ঘন্টা পরপর নৌকা ছাড়ার কথা থাকলেও ২ থেকে ৩ ঘন্টা পরপর নৌকা ছাড়া হয়। ফলে প্রতিটি নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করতে হয়।
নৌকা স্বল্পতার কারণে যাত্রীরাও নিরুপায় হয়ে করোনা ঝুঁকি নিয়েই গাদাগাদি করে চলাচল করতে বাধ্য হয়। এর প্রতিবাদ করলে ঘাট ইজারাদারের ভাড়াটিয়া বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়। ফলে প্রাণ ভয়ে কেউ টু শব্দ করে না। এ ছাড়া প্রায়ই নৌকার ফ্যান ভেঙ্গে যায়। নৌকায় এক্সট্রা ফ্যান না থাকলে যাত্রীদের গভির রাত পর্যন্ত মাঝ যমুনার চরে আটকা পড়ে থাকতে হয়। বার বার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাদের উদ্ধারে কেউ এগিয়ে আসেনা। এ সময় যাত্রীরা ডাকাতের হামলা ও জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় পরে দিশেহারা হয়ে পড়েন। আর এ দূর্ঘটনা রাতে হলে নারী যাত্রীদের নিরাপত্তা আরো বেশি হুমকির মধ্যে পড়ে। তার পরেও যাতায়াতের বিকল্প কোন উপায় না থাকায় যাত্রীরা করোনা ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দ্বিগুণ ভাড়ায় এ নৌরুটে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে।
তারা জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোনাকষাঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী ইঞ্জিন চালিত শ্যালো নৌকা ঠুটিয়ার চওে পৌছানোর আগে মাঝ যমুনায় ফ্যান ভেঙ্গে নৌকাটি দূর্ঘটনায় পড়ে। বিকল্প ফ্যান না থাকায় ওই নৌকার মাঝি একটি নতুন ফ্যান নিয়ে আসার জন্য মোনাকষা ঘাটে দায়ীত্বরত ইজারাদারের লোকজনকে ফোনে খবর দেয়। তাদের আসতে দেরি দেখে মাঝি ঠুটিয়ার চরে নৌকা নোংগর কওে রাখে। এ সময় যাত্রীরা ডাকাতের হামলার আশংকাং আতংকিত হয়ে পড়ে। কিন্তু ১ ঘন্টা অতিবাহিত হলে উদ্ধাওে কেউ এগিয়ে আসেনি। এ সময় যাত্রীদেও অনুরোধে মাঝি ধীরগতিতে নৌকা চালিয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাকড়া ঘাটের যাত্রীদের পৌছে দিয়ে আবারও রওনা হয়। নৌকাটি সোনাতনীর চর এলাকায় যাওয়ার পর আর যাওয়া সম্ভব না হওয়ায় ছোট চানতারা ঘাটের অদূওে মাঝ যমুনার বৈদ্যুতিক খুটির সাথে নৌঙ্গও কওে রেখে উদ্ধারের জন্য বানতিয়ার ঘাটে খবর দেয়। এর ১৫/২০ মিনিট পর বানতিয়ার ঘাট থেকে একটি নৌকা এসে তাদের উদ্ধার করে।
এই দীর্ঘ সময় যাত্রীরা নিরাপত্তার অভাবে অতংকিত হয়ে পড়েন ও ঘাট পরিচালনাকারীদেও দায়ীত্বহীনতার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া তারা আরো জানান, এ নৌরুটে সরকার নির্ধারিত সর্বচ্চ ভাড়া ১৫ টাকা। অথচ যাত্রীদের গুনতে হয় ২ থেকে ৩ গুণ বেশি টাকা। এ সমস্যা সমাধানে তারা দ্রæত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে ঘাট ইজারাদার বাবুল হোসেন বাবু বলেন, যারা যাত্রীদের সাথে দূর্ব্যবহার করে তাদেরকে ঘাটের দায়ীত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যাত্রী ভাড়াও বেশি নেওয়া হচ্ছে না। লকডাউন অমান্য করে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণের বিষয়ে তিনি বলেন,আমরা না চাইলেও যাত্রীরা জোর করে উঠে পড়ে। তখন বাধ্য হয়ে যাত্রীদের নিয়ে যেতে হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে দূর্ঘটনা কবলিত নৌকাটিকে আমাদের লোকজন উদ্ধার করে যাত্রীদের নিরাপদে পৌছে দিয়েছে। ফলে বড় ধরণের কোন দূর্ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো: শামসুজ্জোহা বলেন,আমি ঘাটের কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে দেখে সে অনুযায়ী দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
সম্পর্কিত সংবাদ
খেলাধুলা
শাহজাদপুর পৌর গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট-২০১৬ উদ্বোধনী খেলায় নাটোর পৌরসভাকে ২-১ গোলে হারিয়ে বেড়া পৌরসভা জয়ী
আজ শুক্রবার বিকেলে শাহজাদপুর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শাহজাদপুর পৌরসভা আয়োজিত পৌর...
মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা বাংলাদেশের ইতিহাসের পবিত্র স্থান//১৭ এপ্রিল বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথগ্রহণ করে// স্থানটির নামকরণ হয় মুজিবনগর
আব্দুল মতিন ১৯২৬ সালের ৩ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার ধুবুলিয়া গ্রামে এক মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।... ডেস্ক নিউজ: আওয়ামী লীগ-বিএনপি দলীয়ভাবে মনোনয়ন চূড়ান্তের পরই প্রার্থীর সমর্থক ও দলীয় কর্ম... পাবনা প্রতিনিধি :-নানা অব্যবস্থাপণার মধ্যদিয়ে চালু রয়েছে পবনা সেচ প্রকল্প। অবহেলা ও অনিয়মের কারণে সেচ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ...জাতীয়
সিরাজগঞ্জের ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন স্মরণে
রাজনীতি
সিরাজগঞ্জে নৌকা-ধানের শীষের লড়াই শুরু
নানা অব্যবস্থাপণায় চলছে পাবনা সেচ প্রকল্প
সম্পাদকীয়
এইডস আতঙ্কের ব্যাপ্তি, প্রতিরোধেই মিলবে মুক্তি
লাইট হাউস শাহজাদপুর ডিআইসি আয়েজিত প্রজেক্ট ফ্যসিলিটেশন টিমের ২০১৫ সালের ১ম সভায় উপস্থাপি...