বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫
শামছুর রহমান শিশির, ২ জুন- ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ : চলতি বছর শাহজাদপুর উপজেলার শতকরা ৯৯.৪২ ভাগ কৃষকই সরকারের কাছে বিক্রি করতে পারছেন না তাদের উৎপাদিত বোরো ধান। খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে না পারা এসব কৃষকেরা বাইরে ধানের ন্যায্য বাজার মূল্য পাচ্ছে না। তাদের উৎপাদিত ধানের উৎপাদন ব্যায়ের চেয়ে বর্তমান বাজারমূল্য তুলনামূলক বহুলাংশে কম হওয়ায় লোকসানের আশংকায় ধান বিক্রি নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছে এসব কৃষক। ঈদের খরচের যোগান দিতে ও ঋণ শোধ করতে শাহজাদপুর উপজেলার কৃষকেরা এখন বোরো ধান বিক্রি করতে গিয়ে চোখেমুখে সর্ষের ফুল দেখছে। বাজারে ন্যায্য মূল্যের ক্রেতা না থাকায় তাদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিয়ে তাদের চরম উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। উপজেলার সিংহভাগ প্রান্তিক কৃষকেরা বাধ্য হয়ে পানির দামে বোরো ধান বিক্রি করে মিটাচ্ছে শ্রমিকের মজুরির খরচ। বর্ষা মৌসুমের এই ধান বিক্রি করতে না পেরে ধান রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও বিপাকে পড়েছে ধান চাষিরা। এদিকে মিল মালিকেরা বলছেন, আমন মৌসুমের চাল এখন পর্যন্ত বিক্রি করতে না পারায় ব্যাংকের ঋণও পরিশোধ হয়নি। তাই তারা নতুন করে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ধান কিনতে পারছেন না। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনজু আলম সরকার বলেন, এবারের বোরো মৌসুমে শাহজাদপুরে ২২ হাজার হেক্টর জমিতে কৃষকেরা বোরো ধানের আবাদ করেছে। উপজেলায় মোট বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রার চেয়েও তুলনামূলক অনেক বেশি ধান কৃষকেরা উৎপাদন করেছে। চলতি বোরো মৌসুমে শাহজাদপুর উপজেলায় মোট ১ লাখ ৩২ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদিত হয়েছে। আর শাহজাদপুর উপজেলা থেকে চলতি বছরে ৭’শ ৬৪ মেট্রিকটন ধান সরকারিভাবে কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করার কথা রয়েছে। ফলে ১ লাখ ৩১ হাজার ২’শ ৩৬ মেট্রিকটন ধান ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে না পেরে স্থানীয় কৃষকের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, ‘এবার প্রতি মন ধান উৎপাদন করতে ধানের চারা ক্রয়, জমি প্রস্তুত, আগাছা দমন, চারা রোপণ, পরিচর্যা, সার ও কীটনাষক প্রয়োগ, সেঁচকার্য, ধান কাটা, ধান মাড়াই, শ্রমিকের মজুরিসহ সর্বসাকূল্যে প্রতি মন ধানের উৎপাদন ব্যায় হয়েছে প্রায় ৮’শ টাকা। কিন্তু উৎপাদিত ধানের বাজারমূল্য পাওয়া যাচ্ছে ৫’শ থেকে সাড়ে ৫’শ টাকা। সেক্ষেত্রে প্রতি মন ধান বিক্রি করে মনপ্রতি ২’শ ৫০ টাকা থেকে ৩’শ টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে। বাজারে বোরো ধানের দাম না থাকায় প্রতি একর জমিতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ৭ থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। এতে প্রান্তিক চাষিরা ঋণের দায়ে জর্জরিত হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় চাল ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, মিল মালিকেরা তাদের উৎপাদিত চাল বাজারে বিক্রি করতে পারছে না। ভারত থেকে আমদানি করা নি¤œমানের চাল নি¤œদরে বাজারে সয়লাব হওয়ায় দেশীয় চালের বাজারে ধস নেমেছে। অনেক মিল মালিকরাই এখন পর্যন্ত তাদের ব্যাংক ঋণের বিপরীতে মজুদ করা চাল বাজারে বিক্রি করতে পারেনি। যার ফলে ব্যবসায়ীরা বোরো ধান কিনতে পারছে না বলেই বোরো ধানের বাজারে ধস নেমেছে। ফলে একদিকে ধানের ক্রেতা সংকট পরিলক্ষিত হচ্ছে, অপরদিকে, স্বল্প সংখ্যক ক্রেতা ধান ক্রয় করলেও তাদের কাছে ধান বিক্রি করে স্থানীয় কৃষকদের প্রতি মনে ২’শ ৫০ টাকা থেকে ৩’শ টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে। ফলে সার্বিকভাবে শাহজাদপুরের কৃষকের ঘরে নেই ঈদ আনন্দ; আছে কেবল হতাশা আর দুঃশ্চিন্তা।

সম্পর্কিত সংবাদ

সিরাজগঞ্জে পৌর নির্বাচনে বিএনপি’র ৬ প্রার্থী চূড়ান্ত

রাজনীতি

সিরাজগঞ্জে পৌর নির্বাচনে বিএনপি’র ৬ প্রার্থী চূড়ান্ত

অনলাইন ডেস্কঃ সিরাজগঞ্জের ছয়টি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন...

কাল তৃতীয় বৈঠকে বসছে মস্কো-কিয়েভ

আন্তর্জাতিক

কাল তৃতীয় বৈঠকে বসছে মস্কো-কিয়েভ

রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদল সোমবার (৭ মার্চ) তৃতীয় দফায় বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। ইউক্রেনে রক্তাক্ত সংঘর্ষ অবসানের লক্ষ্যে...

৪২ দিন পর সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার চার্জশীট আমলে নিলেন আদালত

আইন-আদালত

৪২ দিন পর সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার চার্জশীট আমলে নিলেন আদালত

শামছুর রহমান শিশির, শাহজাদপুর থেকে : আজ মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সংঘটিত দেশ-বিদেশে বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর দৈনিক...

শাহজাদপুরে আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষ্যে মতবিনিময় করলেন চয়ন ইসলাম

রাজনীতি

শাহজাদপুরে আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষ্যে মতবিনিময় করলেন চয়ন ইসলাম

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ডায়া ও বেড়াকুচাটিয়া গ্রামবাসীর উদ্যেগে ডায়া বাজারে আওয়ামী...

৩’শ ৬০ জন দুগ্ধদাই মাতাকে ভাতা কার্ড প্রদান

৩’শ ৬০ জন দুগ্ধদাই মাতাকে ভাতা কার্ড প্রদান

শাহজাদপুর  প্রতিনিধি: গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিলের আওতায় শাহজাদপুর পৌরসভা কর্তৃক বাছাইকৃত উপক...

বগুড়ায় ৬ টাকায় এক কেজি কাঁচা মরিচ

বাংলাদেশ

বগুড়ায় ৬ টাকায় এক কেজি কাঁচা মরিচ

চাষিরা বলছেন, খেত থেকে হাটে নেওয়া পর্যন্ত প্রতি কেজি কাঁচামরিচে গড়ে তিন টাকা খরচ হয়। এ ছাড়া রয়েছে খাজনা ও অন্যান্য খরচ,...