লক্ষীপুর সংবাদাতাঃ প্রেম প্রীতির সাগরে হাবুডুবু খেয়ে অবশেষে কারাগারেই বিয়ে সম্পন্ন হলো এক দ্ম্পতির। লক্ষ্মীপুরের পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের বড় ছেলে খুনের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি এইচএম বিপ্লব শুক্রবার কারাগারের মধ্যেই বিয়ের কাজ সম্মন্ন করলেন। তার আগে শুক্রবার বিকালে জেলা কারাগার ফটকে বিপ্লবের সঙ্গে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের লামচরী গ্রামের পণ্ডিতবাড়ির মৃত আবুল খায়েরের মেয়ে সানজিদা আক্তার পিউর ফোনে বিয়ে হয়। বর-কনে মোবাইল ফোনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। এরপর নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) কারা ফটকে গিয়ে কাবিনে বিপ্লবের সই গ্রহণ করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কারাগারের দর্শনার্থী কক্ষে বিপ্লবের সঙ্গে লক্ষ্মীপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সানজিদা আক্তার পিউর প্রথম দেখা হয়। সেই দেখা থেকে প্রেম এবং সবশেষে পরিণয়।
প্রথম দেখায় প্রেম : পৌরসভার লামচরী এলাকার পারিবারিক বিরোধপূর্ণ একটি জমি উদ্ধার করতে কয়েক মাস আগে কারাগারে বিপ্লবের কাছে যান প্রয়াত অ্যাডভোকেট আবুল খায়েরের স্ত্রী ফেরদৌস খায়ের। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন পিউ। বিপ্লব কারাগারে বসেই জমিটি উদ্ধার করে দেয়ার উদ্যোগ নেন। আর এ সময়ই পিউকে প্রথমবার দেখেই বিপ্লবের পছন্দ হয়ে যায়। এ ভালো লাগার কথা বিপ্লব তার বোন রেহানাকে জানান। এরপরই ঘটে উভয়ের যোগাযোগ। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা হতে থাকে বিপ্লব ও পিউর মধ্যে। একপর্যায়ে পিউকে বিয়ে করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন বিপ্লব। বাবা তাহেরও ছেলের ইচ্ছা পূরণে এগিয়ে আসেন। পাকা করে ফেলেন বিয়ের সব বন্দোবস্ত।
তারপর বিয়ে : শুক্রবার বিকালে বাবা আবু তাহের, ভাই সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অর্ধশতাধিক মেহমানের উপস্থিতিতে কনের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় কারাগারের ফটকে কাজী ও সাক্ষীরা গিয়ে কাবিননামায় বিপ্লবের স্বাক্ষর নেন। এ সময় তাহেরসহ কনেপক্ষের বেশ কয়েকজন অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর কারাগারের জেল সুপার মাহবুবুল আলম জানান, জেলা প্রশাসকের অনুমতি থাকায় কারা ফটকে বিপ্লবকে হাজির করা হয়। পরে সেখানে বিয়ের কাবিননামায় স্বাক্ষর নেয়ার পর তাকে আবার কারাগারের অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রসঙ্গত ১৯৯৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে জেলা বিএনপির নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর লাশ টুকরো টুকরো করে বস্তায় ভরে মজু চৌধুরীহাট এলাকায় মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়া হয়। চাঞ্চল্যকর ওই হত্যা মামলায় আদালত তাহেরপুত্র বিপ্লবকে ফাঁসির দণ্ড দেন। এ সাজা মওকুফের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন বিপ্লব। ২০১১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিল্লুর রহমান বিপ্লবের মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করে দেন। পরে শিবির নেতা মহসিন ও যুবদল নেতা ফিরোজ হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপতি যাবজ্জীবন সাজা কমিয়ে দেয়ায় বর্তমানে ওই দুই মামলায় তিনি ১০ বছরের কারাভোগ করছেন। এছাড়াও বিপ্লবের বিরুদ্ধে বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে পৌরসভার লামচরী এতিমখানায় অগ্নিসংযোগ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনায় লক্ষ্মীপুর সদর থানায় আরও ৮টি মামলা দায়ের করা হয়। রাজনৈতিক বিবেচনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই সব মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়।
সম্পর্কিত সংবাদ
শিক্ষাঙ্গন
শাহজাদপুরে ৯৫ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য
নিজস্ব প্রতিবেদক, শাহজাদপুর : শাহজাদপুর উপজেলায় ৯৫ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদ...
বিনোদন
সিরাজগঞ্জের ছেলে ও কিশোরগঞ্জের মেয়ে
শাহজাদপুর প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিশ্ব পানি দিবস পালিত হয়েছে। শাহজাদপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার... নিজস্ব প্রতিনিধি : আজ বুধবার দুপুরে শাহজাদপুর পৌর এলাকার পুকুরপাড় নিবাসী, শাহজাদপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমির...
স্বাস্থ্য
শাহজাদপুরে বিশ্ব পানি দিবস পালিত
ফটোগ্যালারী
শাহজাদপুরে বীরমুক্তিযোদ্ধা আয়নুল হকের ইন্তেকাল
