মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
শাহজাদপুর সংবাদ ডটকম, শামছুর রহমান শিশির, মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ  : কালের বিবর্তনে আধুনিকতার স্পর্শে আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুই পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে । আবার গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ধারক বাহক অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে স্মৃতিপট থেকে। তেমনি এক সময়ের গ্রাম বাংলায় পাদুকা হিসাবে বহুল ব্যবহৃত ‘খড়ম’ পুরোপুরি প্রায় হারিয়ে গেছে । আধুনিক যুগে পায়ের জন্য বিভিন্ন বাহারি, দৃষ্টিনন্দন, সহজলভ্য, ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দজনিত কারণে আনেক আগেই ‘খড়ম’ এর ব্যবহার উঠে যেতে থাকে। ক্রমেই প্রচলিত হতে থাকে চামড়া, নাইলন ও রাবার দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের পাদুকার। ফলে অতীতে গ্রাম বাংলায় পাদুকা হিসাবে বহুল ব্যবহৃত ‘খড়ম’-এর ব্যবহার পুরোপুরি প্রায় উঠেই গেছে । কালে ভাদ্রে বিভিন্ন মাজারে আগত বয়োবৃদ্ধ মুসাফির, ফকির, সাধু-সন্নাস্যীদের দু’একজনকে পাদুকা হিসাবে ব্যবহৃত ও এক সময়ের অতি জনপ্রিয় ‘খড়ম’ পায়ে পড়ে এখনও চলাফেরা করতে দেখা গেলেও কালের আবর্তে বর্তমানে তা বিলুপ্তি’র পথে। জানা গেছে, প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে রাজা বাদশা, সাধু-সন্নাস্যীদের পায়ের পাদুকা হিসাবে ব্যবহৃত ‘খড়ম’ তৈরি হতো কাঠ ও লোহা দিয়ে। ফিতাবিহীন ওই ‘খড়ম’এর সামনের অংশে গোলাকার করে তামা বা লোহার গুল্টি বসানো হতো। পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল ও তদসংলগ্ন আঙ্গুলের ফাঁকা অংশ ওই গোলাকার গুল্টির ভিতর ঢুকিয়ে চলাচল করা হতো। ‘খড়ম’এর ওই গোলাকার গুল্টিদুটি চলাচলের সময় পায়ের সাথে লেগে থাকতে সহায়তা করতো। অতীতে পাদুকা হিসাবে বহুল ব্যবহৃত ‘খড়ম’ এর গঠন বৈশিষ্ঠ ছিল খুবই সাধারণ। পাদুকা ‘খড়ম’এর অগ্রভাগের গোলাকার ধাতব গুল্টিটির ওপর বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করা থাকতো পাদুকা ‘খড়ম’ ব্যবহারকারীর সামাজিক অবস্থার ওপর। বিখ্যাত লোকের জন্য ‘খড়ম’ তৈরি করা হতো বিভিন্ন ধরনের দৃষ্টিনন্দন কারুশৈল্পীর মাধ্যমে। তবে অতীতে বহুল ব্যবহৃত পাদুকা ‘খড়ম’ এর অতি সাধারন গঠনকেই সিংহভাগ লোকেরা পছন্দ করতেন ও ব্যবহার করতেন বলে জানা গেছে।১৮৯০ সাল থেকে ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত কবিগুরু রবীন্দ্রনাঠ ঠাকুর জমিদারী দেখাশোনার কাজে শাহজাদপুরে সাময়িকভাবে বসবাস করতেন।শাহজাদপুরের জমিদারী পরিচালনায় কাছারিবাড়ি অবস্থানকালে হাটা ও চলাফেরায় তিনি পাদুকা ‘খড়ম’ ব্যবহার করতেন। এ সময় শুধু কবিগুরুই নন, অনেক পন্ডিত, সাধু-সন্নাসীরা পাদুকা হিসাবে ‘খড়ম’ ব্যবহার করতেন । কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শাহজাদপুরের কাছারিবাড়িতে রবীন্দ্র স্মৃতি যাদুঘরে সংরক্ষিত দুই জোড়া ‘খড়ম’ আজও সেই ঐতিহ্যেরই স্মৃতি বহন করছে। শাহজাদপুর পৌরসদরের শেরখালী গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের পুত্র মোঃ হাবিবুর রহমান হবি (৫৮) সহ এলাকার প্রবীণ বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, 'পাকিস্থান শাষনামলে স্থানীয় সোনালী ব্যাংকে কর্মরত কয়েকজন কর্মকর্তাকে ও কতিপয় ফকির সন্নাস্যীদের পাদুকা ‘খড়ম’ ব্যবহার করতে গেলেও বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতিতে প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন ধরনের আরামদায়ক জুতার বহৃল ব্যবহারের ফলে ‘খড়ম’এর ব্যবহার দেশ থেকে একেবারেই উঠে যাওয়ায় প্রাচীনকালের এক সময়ের জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত পাদুকা ‘খড়ম’-এর দেখা পাওয়াই বর্তমানে দূরহ হয়ে পড়েছে।'

সম্পর্কিত সংবাদ

৩’শ ৬০ জন দুগ্ধদাই মাতাকে ভাতা কার্ড প্রদান

৩’শ ৬০ জন দুগ্ধদাই মাতাকে ভাতা কার্ড প্রদান

শাহজাদপুর  প্রতিনিধি: গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিলের আওতায় শাহজাদপুর পৌরসভা কর্তৃক বাছাইকৃত উপক...

ডাচবাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং শাহজাদপুর শাখার ৬ বছরে পদার্পনে বর্ণাঢ্য আয়োজন

অর্থ-বাণিজ্য

ডাচবাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং শাহজাদপুর শাখার ৬ বছরে পদার্পনে বর্ণাঢ্য আয়োজন

৬ বছরে পদার্পন উপলক্ষে শনিবার (২৯ মে) দুপুরে ডাচবাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং শাহজাদপুর শাখা কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও কেক কাটা হয়...

নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হলেন কবির বিন আনোয়ার

সিরাজগঞ্জ জেলার সংবাদ

নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হলেন কবির বিন আনোয়ার

মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার। আজ রোববার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন...

পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরু মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ে বাদ পড়লেন

জাতীয়

পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরু মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ে বাদ পড়লেন

শামছুর রহমান শিশির : আজ পহেলা মার্চ বুধবার শাহজাদপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা নন এমন ১...

খালেদা জিয়া পেট্রোল বোমা মেরে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন - সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস